কলকাতা, 10 মে : তৃতীয় দফায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের সরকার গঠিত হতে না হতেই আবারও রণংদেহি রূপে ফিরলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তুমুল সমালোচনা করলেন রাজ্য সরকারের ৷ রাজ্য়পালের সাফ বার্তা, হিংসা দমন করতে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় খুশি নন তিনি ৷ এবার তাই নিজেই মাঠে নামতে চান জগদীপ ধনকড় ৷ হিংসা কবলিত এলাকায় সশরীরে যেতে চান তিনি ৷ কথা বলতে চান অত্য়াচারিতদের সঙ্গে ৷ সোমবার রাজভবন থেকে একথা জানালেন রাজ্যপাল নিজেই ৷
গত 2 মে ঘোষিত হয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ৷ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ সোমবার শপথ নিয়েছেন নতুন মন্ত্রিসভার 43 জন সদস্য ৷ আর ঠিক এদিনই ফের একবার চাঁচাছোলা ভাষায় রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷
এদিন রাজভবন থেকে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হন রাজ্যপাল ৷ তাঁর অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের সামগ্রিক প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে চলছে হিংসা ৷ রাজনৈতিক হানাহানির বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ ৷ রাজ্যপালের দাবি, ভোট দিয়ে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করাতেই মানুষকে নিশানা করা হচ্ছে ৷ এমন অস্থির আবহে গণতন্ত্র ও সংবিধান সঙ্কটে পড়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন রাজ্য়ের সাংবিধানিক প্রধান ৷
এদিন রাজ্যপাল জানান, গত 3 মে তিনি কলকাতা তথা রাজ্যের পরিস্থিতি জানতে চেয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্য়ের ডিজিপিকে তলব করেছিলেন ৷ এই দুই আধিকারিক তাঁদের রিপোর্ট অতিরিক্ত স্বরাষ্ট্রসচিবকে পাঠালেও তা তাঁকে ফরওয়ার্ড করা হয়নি বলে দাবি ধনকড়ের ৷ পরবর্তীতে ডিজিপির সঙ্গে মুখ্যসচিব রাজভবনে এলেও তাঁর কাছে কোনও তথ্য ছিল না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ রাজ্য়পালের মতে, স্রেফ নাম কা ওয়াস্তে হাজিরা দিতেই রাজভবনে পৌঁছন রাজ্য়ের এই দুই শীর্ষ আমলা তথা প্রশাসনিক কর্তা ৷
আরও পড়ুন : কোভিড আবহে একসঙ্গে শপথ 43 মন্ত্রীর, ভার্চুয়াল শপথ অমিত-ব্রাত্য-রথীনের
রাজ্যপালের সাফ বার্তা, ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে এখনও পর্যন্ত রাজ্য যে ভূমিকা পালন করেছে, তাতে তিনি খুশি নন ৷ তাই এবার সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব পালন করতে নিজেই মাঠে নামতে চান তিনি ৷ ঘুরে দেখতে চান উপদ্রুত এলাকা ৷ কথা বলতে চান হিংসার শিকার মানুষদের সঙ্গে ৷
রাজ্য়পালের এই পদক্ষেপ আবারও একবার মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সরকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সামনে তুলে আনল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷ এই ঘটনায় নবান্ন বনাম রাজভবনের লড়াই আরও জোরদার হবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ৷