ETV Bharat / city

স্নাতকোত্তরে প্র্যাকটিক্যাল শুরুর পথে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ফাঁপড়ে কলেজগুলি

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত যে সব কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স করানো হয় তাদের কোনওরকম নির্দেশ দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে ফাঁপড়ে কলেজগুলি ।

post graduate practical class is starting soon in calcutta university
post graduate practical class is starting soon in calcutta university
author img

By

Published : Jan 17, 2021, 9:27 PM IST

কলকাতা, 17 জানুয়ারি: মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । সেই অনুযায়ী এবার স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস শুরু করার পথে হাঁটছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ । আগামীকাল থেকেই কেমিস্ট্রি বিভাগের তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু হয়ে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে । এরপর একে একে বিভিন্ন বিভাগের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে । কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলির জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত যে সব কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স করানো হয় তাদের কোনওরকম নির্দেশ দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে রীতিমতো ফাঁপড়ে কলেজগুলি ।

গত বছর মার্চ মাস থেকে কোরোনা আবহে বন্ধ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । জুন মাস থেকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রশাসনিক কাজকর্ম চালুর অনুমতি দিলেও পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে আসার, সশরীরে ক্লাস চালুর উপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা এখনও জারি রয়েছে । অথচ, এরই মধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশীষ কুমার চট্টোপাধ্যায়ের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গাইডলাইন মেনে 8 থেকে 26 মার্চের মধ্যে নিতে হবে প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের পরীক্ষা । এই পরিস্থিতিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন সিইউটিএ-র তরফে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয়েছিল । জানা গিয়েছে, তারপরেই উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানদের মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের নিয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নেওয়া হোক। তারপরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি ল্যাবভিত্তিক বিষয়ের বিভাগে সিদ্ধান্ত হয়, স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের ছোটো ছোটো ব্যাচ করে ক্যাম্পাসে এনে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করা হবে । জানা গিয়েছে, আগামীকাল থেকেই কেমিস্ট্রি বিভাগে স্নাতকোত্তরে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করে দেওয়া হবে । ভিড় এড়াতে প্রথম পর্যায়ে শুধুমাত্র তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের ক্লাস চালু হবে । বিশেষ বিষয়ভিত্তিক গ্রুপকেও দুটি ছোটো ছোটো সাব-গ্রুপে ভাগ করে ডাকা হবে বলে জানা গিয়েছে । প্রতিটি সাব-গ্রুপের জন্য সপ্তাহে তিনদিন করে ক্লাস করানো হবে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজ়িক্স বিভাগ বুধবার থেকে প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের চারটি ভাগে ভাগ করে সপ্তাহে দুইদিন করে ক্লাস করানো হবে ফিজ়িক্সের ক্ষেত্রে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজ়ি বিভাগ জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে ও জ়ুলজি বিভাগ ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।

বায়োটেকনোলজ়ি বিভাগের প্রধান কৌস্তুভ পাণ্ডা বলেন, "আমরা ঠিক করেছি সপ্তাহে তিনদিন প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করাব । আমাদের বায়োটেকনোলজ়িতে প্রথম সিমেস্টারে 14 জন পড়ুয়া রয়েছে । আমরা তাঁদের একসঙ্গে ডেকে চারটে ল্যাবে ভাগ করে দেব । মাস্ক পড়ে, স্যানিটাইজ় করেই ওরা কাজ করবে । আমরা চেষ্টা করব, 14 দিন পরপর ওঁদের টেস্ট করানোর । এভাবেই সতর্কতা অবলম্বন করে আমরা ক্লাস শুরু করব । এই সপ্তাহে শুরু করছি না । বাইরে থেকে পড়ুয়াদের আসার জন্য সময় দিচ্ছি । পরের সপ্তাহ থেকে শুরু করার ইচ্ছে আছে । পড়ুয়ারা প্র্যাকটিক্যাল না করলে পিছিয়ে যাবে । তাই এটা শুরু করা খুব দরকার ।"

আরও পড়ুন: ভরতির আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর পরও অব্যাহত CU-র সার্ভার সমস্যা

জুলজ়ি বিভাগের অধ্যাপক পার্থিব বসু বলেন, "আমরা 1 থেকে 10 ফেব্রুয়ারি টানা প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি । ওই সময়ের মধ্যে সব শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে । শুধুমাত্র প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের জন্য প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করব । ছোটো ছোটো ব্যাচে ক্লাস করানো হবে ।"

তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করায় সম্মতি দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ যে সকল কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স করানো হয় তাঁদের জন্য কোনও নির্দেশিকা দেয়নি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশ । ইতিমধ্যে স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার অনুমতি চেয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরতে চিঠি দিয়েছেন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার ।

শিউলি সরকার বলেন, "আমার কানে এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকোত্তরের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করছে । আমাদেরও সাতটা প্র্যাকটিক্যাল ভিত্তিক বিষয় রয়েছে । সঙ্গত কারণেই আমার কলেজের সাতটি বিষয়ের মেয়েরা প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস না হলে পিছিয়ে পড়বে । কারণ, এদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গেই প্রতিযোগিতা করতে হয় । পরীক্ষা ব্যবস্থা কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় । বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে পড়তে হবে, প্রশ্নপত্র পাঠাবে বিশ্ববিদ্যালয়, খাতা দেখবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা । তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস শুরু হলে, কলেজে শুরু না হলে কলজের পড়ুয়ারা পিছিয়ে পড়বে । বিশ্ববিদ্যালয় যদি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস খুলে দেয় তাহলে আমাদেরও খুলতে হবে । না হলে ওরা তো পরীক্ষাই দিতে পারবে না । একটা ডিসঅ্যাডভান্টেজ পজ়িশনে পড়ে যাবে । তাই আমি অনুমতি চেয়েছি । উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে পাঠানো চিঠিতে জোর দিয়ে বলেছি, যদি আপনারা ডিজ়-অ্যাপ্রুভ করেন তাহলে আমাদের জানান । আমার কাছে এখনও ডিজ়-অ্যাপ্রুভাল আসেনি ।"

আরও পড়ুন: স্নাতকোত্তরে ভরতি নিয়ে একগুচ্ছ দাবিতে CU-র সামনে বিক্ষোভ SFI-র

মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস দত্ত বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে । আমরা পিজি বোর্ড অফ স্ট্যাডিজ়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি । আশা করছি, আমাদেরও কিছু নির্দেশিকা দেবে, মৌখিকভাবে হোক বা লিখিতভাবে । না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব । কলেজগুলোর ব্যাপারে কিছু চিন্তাভাবনা করা উচিত । দেখা যাক এখন । আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে । না হলে তফাৎ হয়ে যাবে । সেটা ঠিক হবে না ।"

বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডু বলেন, "আমরা ল্যাব প্রস্তুত রাখছি । যদি হঠাৎ করে নির্দেশিকা আসে আমাদের জন্য তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করে দিতে পারব স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের জন্য ।"

সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, "ভার্চুয়ালে প্র্যাকটিক্যাল খুব একটা ভালো হবে না । হাতেকলমে শিখতে গেলে ল্যাবে আসতে হবে । কোরোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে আপত্তি নেই । সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিক । গাইডলাইন দিক । আমরা সেটা মেনেই ক্লাস করব । আমাদের ছাত্ররা তো পিছিয়ে যাবে ! আমাদের জন্য একটা অ্যাডভাইজ়ারি থাকা উচিত সরকারের তরফে । রিস্ক থাকছেই । কিন্তু, সিনেমা হল, পার্ক, পরিবহন সব খুলে গিয়েছে । সেক্ষেত্রে সিনিয়র পড়ুয়াদের নিয়েও যদি ধাপে ধাপে কলেজ, বিশ্ববিদ্যলয় খোলা যায়... । আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলে রেখেছি, ল্যাবগুলো ঠিক করে রাখছি । আশা করছি, এই সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের থেকে একটা অ্যাডভাইজ়ারি পাওয়া যাবে ।"

কলকাতা, 17 জানুয়ারি: মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । সেই অনুযায়ী এবার স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস শুরু করার পথে হাঁটছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ । আগামীকাল থেকেই কেমিস্ট্রি বিভাগের তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু হয়ে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে । এরপর একে একে বিভিন্ন বিভাগের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে । কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলির জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত যে সব কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স করানো হয় তাদের কোনওরকম নির্দেশ দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে রীতিমতো ফাঁপড়ে কলেজগুলি ।

গত বছর মার্চ মাস থেকে কোরোনা আবহে বন্ধ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । জুন মাস থেকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রশাসনিক কাজকর্ম চালুর অনুমতি দিলেও পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে আসার, সশরীরে ক্লাস চালুর উপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা এখনও জারি রয়েছে । অথচ, এরই মধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশীষ কুমার চট্টোপাধ্যায়ের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গাইডলাইন মেনে 8 থেকে 26 মার্চের মধ্যে নিতে হবে প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের পরীক্ষা । এই পরিস্থিতিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন সিইউটিএ-র তরফে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয়েছিল । জানা গিয়েছে, তারপরেই উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানদের মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের নিয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নেওয়া হোক। তারপরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি ল্যাবভিত্তিক বিষয়ের বিভাগে সিদ্ধান্ত হয়, স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের ছোটো ছোটো ব্যাচ করে ক্যাম্পাসে এনে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করা হবে । জানা গিয়েছে, আগামীকাল থেকেই কেমিস্ট্রি বিভাগে স্নাতকোত্তরে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করে দেওয়া হবে । ভিড় এড়াতে প্রথম পর্যায়ে শুধুমাত্র তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের ক্লাস চালু হবে । বিশেষ বিষয়ভিত্তিক গ্রুপকেও দুটি ছোটো ছোটো সাব-গ্রুপে ভাগ করে ডাকা হবে বলে জানা গিয়েছে । প্রতিটি সাব-গ্রুপের জন্য সপ্তাহে তিনদিন করে ক্লাস করানো হবে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজ়িক্স বিভাগ বুধবার থেকে প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের চারটি ভাগে ভাগ করে সপ্তাহে দুইদিন করে ক্লাস করানো হবে ফিজ়িক্সের ক্ষেত্রে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজ়ি বিভাগ জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে ও জ়ুলজি বিভাগ ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।

বায়োটেকনোলজ়ি বিভাগের প্রধান কৌস্তুভ পাণ্ডা বলেন, "আমরা ঠিক করেছি সপ্তাহে তিনদিন প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করাব । আমাদের বায়োটেকনোলজ়িতে প্রথম সিমেস্টারে 14 জন পড়ুয়া রয়েছে । আমরা তাঁদের একসঙ্গে ডেকে চারটে ল্যাবে ভাগ করে দেব । মাস্ক পড়ে, স্যানিটাইজ় করেই ওরা কাজ করবে । আমরা চেষ্টা করব, 14 দিন পরপর ওঁদের টেস্ট করানোর । এভাবেই সতর্কতা অবলম্বন করে আমরা ক্লাস শুরু করব । এই সপ্তাহে শুরু করছি না । বাইরে থেকে পড়ুয়াদের আসার জন্য সময় দিচ্ছি । পরের সপ্তাহ থেকে শুরু করার ইচ্ছে আছে । পড়ুয়ারা প্র্যাকটিক্যাল না করলে পিছিয়ে যাবে । তাই এটা শুরু করা খুব দরকার ।"

আরও পড়ুন: ভরতির আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর পরও অব্যাহত CU-র সার্ভার সমস্যা

জুলজ়ি বিভাগের অধ্যাপক পার্থিব বসু বলেন, "আমরা 1 থেকে 10 ফেব্রুয়ারি টানা প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি । ওই সময়ের মধ্যে সব শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে । শুধুমাত্র প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের জন্য প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করব । ছোটো ছোটো ব্যাচে ক্লাস করানো হবে ।"

তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করায় সম্মতি দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ যে সকল কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স করানো হয় তাঁদের জন্য কোনও নির্দেশিকা দেয়নি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশ । ইতিমধ্যে স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার অনুমতি চেয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরতে চিঠি দিয়েছেন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার ।

শিউলি সরকার বলেন, "আমার কানে এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকোত্তরের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করছে । আমাদেরও সাতটা প্র্যাকটিক্যাল ভিত্তিক বিষয় রয়েছে । সঙ্গত কারণেই আমার কলেজের সাতটি বিষয়ের মেয়েরা প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস না হলে পিছিয়ে পড়বে । কারণ, এদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গেই প্রতিযোগিতা করতে হয় । পরীক্ষা ব্যবস্থা কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় । বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে পড়তে হবে, প্রশ্নপত্র পাঠাবে বিশ্ববিদ্যালয়, খাতা দেখবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা । তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস শুরু হলে, কলেজে শুরু না হলে কলজের পড়ুয়ারা পিছিয়ে পড়বে । বিশ্ববিদ্যালয় যদি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস খুলে দেয় তাহলে আমাদেরও খুলতে হবে । না হলে ওরা তো পরীক্ষাই দিতে পারবে না । একটা ডিসঅ্যাডভান্টেজ পজ়িশনে পড়ে যাবে । তাই আমি অনুমতি চেয়েছি । উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে পাঠানো চিঠিতে জোর দিয়ে বলেছি, যদি আপনারা ডিজ়-অ্যাপ্রুভ করেন তাহলে আমাদের জানান । আমার কাছে এখনও ডিজ়-অ্যাপ্রুভাল আসেনি ।"

আরও পড়ুন: স্নাতকোত্তরে ভরতি নিয়ে একগুচ্ছ দাবিতে CU-র সামনে বিক্ষোভ SFI-র

মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস দত্ত বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে । আমরা পিজি বোর্ড অফ স্ট্যাডিজ়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি । আশা করছি, আমাদেরও কিছু নির্দেশিকা দেবে, মৌখিকভাবে হোক বা লিখিতভাবে । না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব । কলেজগুলোর ব্যাপারে কিছু চিন্তাভাবনা করা উচিত । দেখা যাক এখন । আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে । না হলে তফাৎ হয়ে যাবে । সেটা ঠিক হবে না ।"

বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডু বলেন, "আমরা ল্যাব প্রস্তুত রাখছি । যদি হঠাৎ করে নির্দেশিকা আসে আমাদের জন্য তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করে দিতে পারব স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের জন্য ।"

সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, "ভার্চুয়ালে প্র্যাকটিক্যাল খুব একটা ভালো হবে না । হাতেকলমে শিখতে গেলে ল্যাবে আসতে হবে । কোরোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে আপত্তি নেই । সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিক । গাইডলাইন দিক । আমরা সেটা মেনেই ক্লাস করব । আমাদের ছাত্ররা তো পিছিয়ে যাবে ! আমাদের জন্য একটা অ্যাডভাইজ়ারি থাকা উচিত সরকারের তরফে । রিস্ক থাকছেই । কিন্তু, সিনেমা হল, পার্ক, পরিবহন সব খুলে গিয়েছে । সেক্ষেত্রে সিনিয়র পড়ুয়াদের নিয়েও যদি ধাপে ধাপে কলেজ, বিশ্ববিদ্যলয় খোলা যায়... । আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলে রেখেছি, ল্যাবগুলো ঠিক করে রাখছি । আশা করছি, এই সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের থেকে একটা অ্যাডভাইজ়ারি পাওয়া যাবে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.