দুর্গাপুর, 16 নভেম্বর: বরাবরই তিনি ছক ভাঙেন ৷ তবে এবার আইন ভেঙে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ৷ শনিবার হেলমেট ছাড়াই বাইক চালিয়ে দাপিয়ে বেরোলেন দুর্গাপুরে ৷ যা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল ৷
যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে 'সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভে'র প্রচার চালিয়ে আসছে ৷ সেই উদ্যোগকে কার্যত তোয়াক্কাই করলেন না 'রবিন হুড' দিলীপ ঘোষ ৷ বরং উলটে রাজ্য সরকারের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না তিনি ৷ বিজেপি নেতা বলেন, "সরকারই সেফ নেই তো ড্রাইভ আবার কিসের ।"
দিলীপ ঘোষের কথায়, "চিরদিন বাইক চালিয়ে, স্কুটার চালিয়ে সংগঠন করেছি । একসময় সংগঠনকে মজবুত করতে সাইকেল নিয়ে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরেছি । এখন দল গাড়ি দিয়েছে ৷ সরকার নিরাপত্তারক্ষী দিয়েছে । অনেকদিন বাইক চালাইনি ৷ তাই আজ বাইক চালিয়ে কর্মীদের সঙ্গে চা খেতে এলাম ।"
শনিবার দুর্গাপুরের রাজীব গান্ধি স্মারক ময়দানে (চিত্রালয়ের মাঠ) প্রাতঃভ্রমণ সারেন দিলীপ ঘোষ ৷ এরপর দুর্গাপুর পশ্চিমের দলীয় বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইকে পিছনে বসিয়ে তাঁর বাইক নিয়ে দুর্গাপুরের একাংশে ঘোরেন তিনি । মোবাইলে মিসড কল দিয়ে বিজেপির নতুন সদস্য পদ নেওয়ার আর্জি জানালেন সাধারণ মানুষের কাছে ।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণ নিয়ে সরকারের সমালোচনায় সরব হলেন দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি বলেন, "পুলিশ তোলাবাজি করছে ৷ সেই তোলার টাকা পৌঁছে দিচ্ছে তৃণমূল নেতাদের ঘরে ৷ আর যার জন্যই ওদের নেতাদের টার্গেট করেছে এবার দুষ্কৃতীরা । ওই তৃণমূল নেতাদের পরিবার এখন পুলিশি তদন্তের ওপর আস্থা হারিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সি চাইছে তদন্তের জন্য ।"
ট্যাব কেলেঙ্কারির জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করেন এই বিজেপি নেতা ৷ তাঁর কথায়, "আয়লা থেকে আবাস, ট্যাব তৃণমূল নেতাদের পকেটেই ঢুকেছে সব টাকা । আর টিভির পর্দায় থাকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাটক শুরু করেছেন । সিট গঠন করে অথবা অতি সক্রিয় হয়ে তদন্তের কথা বলেন তিনি ।"
লটারি কেলেঙ্কারি নিয়েও এ দিন শাসকদলকে আক্রমণ শানান দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি বলেন, "এই টাকাও তৃণমূল নেতাদের পকেটে ঢুকেছে ৷ যে দলই এই টাকা নিক কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করে আইন মোতাবেক শাস্তি দিক ।"
অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "আইন কীভাবে ভাঙতে হয়, তা শেখায় বিজেপির মতো দল । তাই ওদের মানুষ ভালো চোখে দেখে না । দিলীপবাবুও গো হারা হেরে দুর্গাপুর ছেড়েছিল । তারপরেও মাঝে মাঝে এসে উলটোপালটা কথা বলেন, আর আইন ভাঙেন । এই কালচারের জন্য 2026-এ বাংলার মানুষ ওদের বিদায় করে দেবে ।"