কলকাতা, 8 এপ্রিল : এমপিএস কর্ণধার প্রমথনাথ মান্নার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ সিবিআইয়ের যুক্তি ছিল, জামিন পেয়ে গেলে তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন প্রমথনাথ ৷ আদালত সেই যুক্তি মেনে নিয়েছে ৷ আদালতের বক্তব্য, যে বিরাট পরিমাণ আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে, তার তুলনায় খুব সামান্য পরিমাণ অর্থই এখনও পর্যন্ত পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ৷ এই প্রেক্ষাপটে প্রমথনাথকে মুক্তি দিতে রাজি হয়নি কলকাতা হাইকোর্ট ৷
করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের এপ্রিল মাসে প্রমথনাথ মান্নার জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁর মেয়ে। প্রমথনাথের মেয়ের আবেদন ছিল, তাঁর বাবা এমনিতেই নানা অসুখে আক্রান্ত ৷ তার উপর জেলে করোনায় আক্রান্ত হলে সেটা মারাত্মক হতে পারে ৷ প্রমথনাথের তদন্তে সমস্ত সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁর মেয়ে ৷
তারও আগে, 2019-এর জানুয়ারি মাসে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন এমপিএস কর্ণধার নিজে ৷ মামলার শুনানিতে আদালতে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তদন্ত শেষ হতে হতে 2020 সালের জুলাই মাস পর্যন্ত সময় লাগবে ৷ 67 জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে ৷ ফলে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগবে। এই পরিস্থিতিতে প্রমথনাথ মান্নার জামিন দিলে তদন্ত ব্যাহত হবে । ইতিমধ্যে করোনা পরিস্থিতি শুরু হয়ে যাওয়ায় মামলার আর শুনানি হয়নি ৷ পাশাপাশি, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচিকেও বদলি করে পাঠানো হয় অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টে ৷ তারপর থেকেই মামলার শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ৷
আরও পড়ুন : জামিন পেলেন না এমপিএস কর্ণধার, শুনানি পিছোল দেবযানীর আবেদনেরও
হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে 2015 সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রমথনাথ মান্না ৷ আদালতে দেওয়া সিবিআইয়ের হিসেব অনুযায়ী, তিনি প্রায় 26 হাজার কোটি টাকা প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ৷ তার মধ্যে মাত্র 8 হাজার কোটি টাকা এখনও পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ৷ বাকি প্রায় 18 হাজার কোটি টাকা এখনও উদ্ধার করা যায়নি ৷
প্রমথনাথের জামিনের আবেদন খারিজ সম্পর্কে সিবিআইয়ের আইনজীবী অমাজিৎ দে বলেন, ‘‘প্রমথনাথ মান্না গ্রেফতার হয়েছিলেন 2015 সালের মার্চ মাসে ৷ এতদিন হয়ে যাওয়ার পরও কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করল না ৷ যে বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্রতারণার সঙ্গে তিনি যুক্ত, তার সামাজিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করেই জামিন খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।’’
অন্যদিকে, সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে ধৃত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সারদা চিটফান্ড সংস্থায় 20 হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা করা হয় ৷ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে 2013 সালে গ্রেফতার হন দেবযানী মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি এখন দমদম সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন ৷