কলকাতা, 4 জুন : সুপার সাইক্লোন আমফানে বিধ্বস্ত এশিয়ার বৃহত্তম বই বাজার কলেজ স্ট্রিট । প্রায় ত্রিশ কোটি টাকার বই ক্ষতি হয়েছে বইপাড়ায় । ক্ষতিগ্রস্ত কলেজ স্ট্রিটের প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা শুধু নন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, এবং দুই 24 পরগনা, হুগলির প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতারাও । 8 সংগঠন বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা সভা, কলকাতা পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন, পশ্চিমবঙ্গ প্রকাশক সভা, অল বেঙ্গল পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন, পশ্চিমবঙ্গ পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স, সারা বাংলা প্রকাশক কল্যাণ সমিতি, কলেজ স্ট্রিট বুক পাবলিশার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, কলেজ স্ট্রিট ক্রিয়েটিভ পাবলিশার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন আজ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছেন ।
সব মিলিয়ে অলিখিত সংগঠন, বইপাড়া রক্ষা অভিযান রাজ্য সরকারের কাছে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে চায় না । সরকারের কাছে তাদের অনুরোধ যে, অতীতে বই পাড়ার জন্য একাধিক প্রকল্প যেগুলি ছিল, সেগুলো ফের চালু করা হোক । বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা সভার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, "রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান, রাষ্ট্রীয় সমগ্র শিক্ষা অভিযান যা 2018 সালের পর থেকে প্রকল্পটিতে কাজ করা হয়নি । লাইব্রেরি বুক পারচেজ ফর মাদ্রাসা এডুকেশন, যা দুই বছর ধরে বন্ধ । রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন 3 বছর ধরে বন্ধ । স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে কিছু অর্ডারের কথা ছিল, 2019 সালের জুন মাসে হিন্দু স্কুলে বই জমা নেওয়া হয়েছিল । অথচ থমকে গিয়েছে সেই প্রকল্পের কাজ। রাজ্য সরকার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্য পুস্তকগুলো অধিগ্রহণ করেছেন । সেগুলো ধাপে-ধাপে ফিরিয়ে দেওয়া যদি সম্ভব হয়, এবং ইংলিশ গ্রামার, সংস্কৃত, হিন্দি, উর্দু, কম্পিউটার বইগুলো অধিগ্রহণ না করেন তবেই সরকার আগামী দিনে স্থগিত প্রকল্প গুলো পুনরায় চালু করলে পাঠ্যপুস্তক ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে ।
সুপার সাইক্লোনে ইতিমধ্যে প্রচুর বই নষ্ট হয়ে গিয়েছে । এমনকী, দোকানের মধ্যে জল ঢুকে নষ্ট হয়েছে অনেক প্রিন্টার ও বাইন্ডার । আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলাতেও এই আমফানের প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকেরা । সৃজনশীল প্রকাশকরা নতুন বই প্রকাশ করতেন কলকাতা বইমেলায় । আমফানের বিপর্যয়ে তাদের পুঁজিতে নতুন বই ছাপাতে সমস্যার সৃষ্টি করবে । ছাপা এবং বাঁধাই মেশিন নষ্ট । তাই সাহায্য না পেলে সমস্যা হবে । মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের কাছে তাদের আবেদন, স্থগিত থাকা প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করে দেওয়া হোক । বই পড়ার এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া মোকাবিলা করা সম্ভব নয় ।