কলকাতা, 21 মার্চ : সোনার বাংলা গড়তে চায় ভারতীয় জনতা পার্টি ৷ নির্বাচনী এসে এই কথাই বলছেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ ৷ কিন্তু কীভাবে সোনার বাংলা গড়বে বিজেপি ৷ সেই প্রশ্নের উত্তরই কার্যত দিল বিজেপির ‘সংকল্প পত্র’ ৷ রবিবার বিধাননগরের একটি সংস্কৃতি কেন্দ্রে অমিত শাহ নিজে প্রকাশ করেন এবারের নির্বাচনী বিজেপির ইস্তাহার ৷ তার পর ইস্তাহারে থাকা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরেন তিনি ৷
তার মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছে মহিলাদের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণ-সহ একাধিক সুবিধা ৷ শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য একাধিক প্রতিশ্রুতি ৷ অনুপ্রবেশ, শরণার্থী, নাগরিকত্ব - এই সমস্ত ইস্যুও বিজেপির ইস্তাহারে ঠাঁই পেয়েছে ৷
কিন্তু শিল্পায়ন কোনও দিশা নেই অমিত শাহদের সংকল্প পত্রে ৷ অন্তত অমিত শাহ তো এই নিয়ে একটিও শব্দ খরচ করেননি ৷ পরিকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফিরিস্তি শোনা গিয়েছে বিজেপির এই হেভিওয়েট নেতার মুখে ৷ কিন্তু তিনি একবারও শিল্পায়ন নিয়ে কোনও কথা বলেননি ৷ শুধু কর্মসংস্থান বৃদ্ধির একটি বিষয় ছুঁয়ে গিয়েছেন ৷ যেখানে বলা হয়েছে যে প্রতি বছর রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজনকে নিশ্চিত ভাবে কর্মসংস্থান দেওয়া হবে ৷
কিন্তু কীভাবে সেই কর্মসংস্থান হবে, তার কোনও ব্যাখ্যা অবশ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিতে পারেননি ৷ রাজ্যে যদি নতুন বিনিয়োগ না আসে, শিল্প না আসে, তাহলে কীভাবে কর্মসংস্থান বাড়বে, উঠছে সেই প্রশ্নও ৷
বাংলার রাজনীতি নিয়ে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁরা বলেন যে বাম জমানায় শ্রমিক আন্দোলন ও তার জেরে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া এক সময় রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ৷ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অবশ্য টাটাকে এনে বাংলায় শিল্প সম্ভাবনা তৈরি করতে চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যা ও তৃণমূলের আন্দোলন, সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেয় ৷
এর পর গত দেড় দশকে বাংলায় কোনও বড় বিনিয়োগ হয়নি ৷ বড় কোনও কারখানাও হয়নি ৷ তথ্যভিজ্ঞ মহল মনে করে যে বড় শিল্প না এলে রাজ্য়ে কর্মসংস্থান বাড়বে না ৷ বাংলার মেধা ভিন রাজ্য বা ভিন দেশে চলে যাবে ৷ তাঁদের এখানে আটকানো যাবে না ৷
আরও পড়ুন : সরকারি চাকরিতে মহিলাদের সংরক্ষণের সংকল্প বিজেপির
তাই অনেকে মনে করেছিলেন যে শিল্প নিয়ে বিজেপি ইস্তাহারেই কিছু দিশা দেখাবে ৷ এখন দেখার যদি তারা সরকারে আসে, তাহলে এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করে কি না !