কলকাতা, 2 ডিসেম্বর : বিধানসভা নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলে নিজেদের ঘর মজবুত করতে নেমেছে বাম-কংগ্রেস জোট ৷ মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই সেখানে নির্বাচনী প্রচার শুরু করছে তারা ৷ ইতিমধ্যেই বামফ্রন্ট তথা সিপিআইএমের সংগঠনকে মজবুত করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন প্রাক্তন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ । এরপর 6 ডিসেম্বর সেখানে প্রচারে যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরি ৷
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে জঙ্গলমহলই কেন ? মনে করা হচ্ছে, এখনও রাজ্যের বাকি জেলার থেকে পিছিয়ে জঙ্গলমহল ৷ ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল সরকার একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৷ বলা হয়েছিল, ক্ষমতায় এলে উন্নতি হবে সাধারণের আর্থিক অবস্থা ৷ অভিযোগ, তা তো হয়নি , উলটে বেড়েছে ফড়েদের দৌরাত্ম্য ৷ 2015 সাল থেকে নানা অজুহাতে সরকার সেখানকার মানুষদের কাছ থেকে শালপাতার তৈরি থালা ও অন্যান্য সামগ্রী কেনা বন্ধ করে দিয়েছে ৷ যার কারণে কম দামে বেশি জিনিস তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ফড়েদের কাছে ৷ এক কথায় বদলায়নি হাল ৷ অভিযোগ উঠছে, 2 টাকা কেজির চালও পৌঁছায়নি অনেক গরিব মানুষের ঘরে ৷ হাসপাতাল রয়েছে তবে ডাক্তারের সংখ্যা কম ৷ সরকারি নানাবিধ সুবিধা থেকে এখনও তাঁরা বঞ্চিত ৷ চুড়ান্ত খাদ্য সংকটে ভুগছেন বেলপাহাড়ি, গড়বেতা, বেলিয়াতোড় এলাকার মানুষ ৷ আর এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে আবারও সেখানে নিজেদের ভিত শক্ত করতে শুরু করেছে বাম-কংগ্রেস ৷
আরও পড়ুন :গড়বেতায় ফিরে সুশান্ত ঘোষের পরবর্তী পদক্ষেপ কী তা জানতে উদগ্রীব রাজনৈতিক মহল
একদিকে যেমন দীর্ঘ আট বছর পর ফিরেছেন ওই অঞ্চলের দাপুটে নেতা প্রাক্তন বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ ৷ অন্যদিকে, প্রচারে যাওয়ার আগে অধীর চৌধুরির সাফ বক্তব্য, তাঁরা শুধু লড়াই করার জন্য লড়ছেন না ৷ বাংলায় ক্ষমতা দখলের জন্যই লড়ছেন ৷ দৃঢ় বিশ্বাস ক্ষমতায় তাঁরা আসবেন ৷
সম্প্রতি কংগ্রেসের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধির সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সহ এই রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয় । সেখানেই নির্বাচনের প্রচার সূচি চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । চলতি মাসেই ভোটের প্রচারে জঙ্গলমহল এবং উত্তরবঙ্গে যাবেন অধীর ৷ সেখানে বামফ্রন্টের সঙ্গে যৌথভাবেই সভা করবেন ৷ পাশাপাশি তাঁর রয়েছে একাধিক পরিকল্পনা ৷ শনিবার অধীরের প্রথম জনসভা পুরুলিয়ায় । এরপর সোমবার রায়গঞ্জ, মঙ্গলবার মালদা, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদেও নির্বাচনী জনসভা করবেন তিনি ৷
দিল্লি থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েছেন , নির্বাচনের লড়াই প্রধান লক্ষ্য । পশ্চিমবঙ্গের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের জোট সফল হতেই হবে । বাংলায় ক্ষমতা দখল করার জন্য লড়াই হবে । রাজ্যে শান্তি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে । বিজেপি এবং তৃণমূলকে পরাস্ত করে নতুন জোট সরকার আসবে পশ্চিমবঙ্গে ।