আসানসোল, ১৬ মে: একদিকে কোরোনা ভাইরাসে জর্জরিত রাজ্য তথা দেশ, তারই মাঝে ফের দেখা দিচ্ছে অন্য এক দানব ৷ কোরোনা সংক্রমণ রুখতে জারি করা হয়েছে লকডাউন ৷ সাধারণ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে ও লকডাউনের যাবতীয় নিয়ম-কানুন পালন করতে যখন ব্যস্ত পুলিশ-প্রশাসন, সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে ফের শুরু হয়েছে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার ৷
৪০ মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল সরকারের তরফ থেকে ৷ একদিকে যেমন বিক্রেতাদের সেই প্লাস্টিকে জিনিসপত্র দিতে নিষেধ করা হয়েছিল, তেমনই ক্রেতাদেরও এই প্লাস্টিক ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছিল ৷ প্রশাসনের কড়াকড়িতে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহারও অনেকটাই কমে গিয়েছিল আসানসোলে । কিন্তু বর্তমানে লকডাউনের মাঝে সংক্রমণমুক্ত আসানসোল শহর বানাতে যখন প্রশাসন ব্যস্ত, তখন সেই ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে অবাধে চলছে প্লাস্টিকের ব্যবহার ।
আসানসোল বাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকানে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যবহার করেই জিনিসপত্র বিক্রি করা হচ্ছে । দেখা গেল, ক্রেতারাও হাসিমুখে প্লাস্টিকেই জিনিস কিনে বাড়ি ফিরছেন ৷ সমাজ সচেতনতা আপাতত শিকেয় উঠেছে ৷ 40 মাইক্রনের নিচের প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে আগামীদিনে যেমন নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হতে পারে, তেমনই ফের বাড়তে পারে পরিবেশ দূষণ ৷ ক্রেতাদের এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অনেকেই করে জানান, ব্যাগ আনতে ভুলে গেছেন তাঁরা ।
আবার কেউ সচেতনতার প্রমাণ দিয়ে জানালেন, ‘‘প্লাস্টিকের ব্যবহার একেবারেই ঠিক নয় ৷ উৎপাদন বন্ধ করলে তবেই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব ৷’’ অন্য এক ক্রেতা সচেতনতার অভাব থেকেই জানালেন,‘‘ প্রতিদিনই প্লাস্টিক ধুয়ে ব্যবহার করি । ক্ষতি কি এতে?’’
বিক্রেতাদের প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে জানতে চাওয়া হলে এক বিক্রেতা জানালেন, ‘‘আমরা নিজেরা প্লাস্টিক কিনিনা । পাইকারি বাজার থেকে যখন জিনিসপত্র কেনা হয় সেখানে যে প্লাস্টিক দেওয়া হয়, সেই প্লাস্টিকই ক্রেতাদের দেওয়া হয় ।’’ অন্য এক বিক্রেতার অভিযোগ, ‘‘ 40 মাইক্রনের যে প্লাস্টিক বাজারে আসছে, তার গুণমান ঠিকঠাক নয় । অল্প সামগ্রীর চাপেই তা ফেটে যাচ্ছে । সেই কারণেই নিষিদ্ধ প্লাস্টিকগুলিকেই ফের ব্যবহার শুরু হচ্ছে ।’’
আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ লকডাউনের সুযোগ নিয়ে অনেকেই 40 মাইক্রনের নিচের নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন, কিন্তু এটা মেনে নেওয়া হবে না । পৌরনিগমের পক্ষ থেকে খুব দ্রুত অভিযান চালানো হবে এবং যারা প্লাস্টিক ব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’’