ETV Bharat / city

নির্বাক প্রেমেই পরিণয়, বিয়ে হল সোমনাথ-চন্দ্রাণীর - বিবাহ

হোয়াটস অ্যাপে ভিডিয়ো কলে সোমনাথ আর চন্দ্রাণীর আলাপ । সেই থেকেই প্রেম । বসন্ত পঞ্চমীতে এক হয় চার হাত ।

marriage of Somnath and Chandrani
সোমনাথ-চন্দ্রাণী
author img

By

Published : Feb 1, 2020, 3:07 AM IST

কুলটি, 31 জানুয়ারি : হিন্দু শাস্ত্র মতে বিবাহে পাত্রপাত্রী উভয়কে উচ্চারণ করতে হয় "যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম"৷ বিবাহে পাত্রপাত্রীকে অগ্নিকে সাক্ষী রেখে উভয়কেই নিতে হয় শপথ ৷ মুখে উচ্চারণ করতে না পারলেও, একে অপরের দিকে তাকিয়ে সেই শপথ নিলেন সোমনাথ ও চন্দ্রাণী ৷

ছোটো থেকে কথা বলতে পারেন না কুলটির সিতারামপুর বিষ্ণুবিহার পলাশবাগানের বাসিন্দা সোমনাথ মাজি । পরিবারের লোকেরা যখন প্রথম জানতে পারে সোমনাথ মূক ও বধির, তখনই আকাশ ভেঙে পড়েছিল মাথায় । বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাও করানো হয় তাঁর । কিন্তু কোনও লাভ হয়নি । সোমনাথ কথা বলতে বা শুনতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা । আর তখন থেকেই লড়াই শুরু সোমনাথের ।

একইভাবে লড়াই শুরু পূর্ব বর্ধমানের ধাত্রীগ্রাম পিয়ারিনগরের বাসিন্দা চন্দ্রাণী সাহার ।

ঘটনাচক্রে দু-জনেই পড়াশোনা করেছেন পূর্ব বর্ধমানের বৈদ্যপুর মূক ও বধিরদের বিশেষ স্কুলে । অথচ স্কুলে পড়াকালীন সেভাবে দু'জনের আলাপ হয়নি । উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কম্পিউটার নিয়ে পড়াশুনো করেন সোমনাথ । তারপর কর্মসূত্রে কলকাতায় ৷

ছেলে চাকরি করছে ৷ কলকাতায় থাকে ৷ বিয়েরও বয়স হয়েছে ৷ এই সব কথা মনে করে বিগত কয়েকমাস ধরেই সোমনাথের বিয়ের জন্য সুযোগ্য পাত্রীর খোঁজ শুরু করেছিল পরিবার ৷ তবে সোমনাথের বিয়ের প্রধান শর্তই ছিল বিয়ে করলে নিজের পছন্দ মতো কাউকে বিয়ে করবেন ৷ সোমনাথের সেই শর্তের সঙ্গে এক মত হয় পরিবারের লোকেরা ৷ খোঁজ শুরু হয় পাত্রীর ৷ কিন্তু এমন পাত্রী পাওয়াও তো অনেকটাই কষ্টের ৷ এই সবের মাঝেই সোমনাথের হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে এমন এক মেয়ের খোঁজ জানতে চায় তাঁর পরিবার ৷ বৈদ্যপুর মূক ও বধির বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য চন্দ্রাণীর খোঁজ দেন সোমনাথের পরিবারকে । এরপর চন্দ্রাণীর পরিবারে যায় বিয়ের প্রস্তাব । সোমনাথ ও চন্দ্রাণীর বিয়েতে রাজি হয় দুটি পরিবার ।

তারপরই হোয়াটস অ্যাপে ভিডিয়ো কলে সোমনাথ-চন্দ্রাণীর আলাপ । সেই থেকেই প্রেম । সেই প্রেম সবাক না হলেও অনুভূতিতে ছিল ভরা । বসন্ত পঞ্চমীতে সোমনাথ ও চন্দ্রাণীর চার হাত এক হয় । বাকি পাঁচটা বিয়ের মতোই তাঁদের বিয়েতেও সানাই বেজেছে ৷ হিন্দু শাস্ত্র মতে পুরোহিত মন্ত্রপাঠ করেছেন ৷ সোমনাথ ও চন্দ্রাণী সেই মন্ত্র মুখে উচ্চারণ করেতে পারেননি ঠিক ৷ কিন্তু একে অপরের চোখে চোখ রেখে তাঁরা সারা জীবন এক সঙ্গে একে অপরের সুখে, দুঃখে পাশে থাকার শপথ নিয়েছেন ৷ বিয়ের পর দু'জনের আনন্দের হাসি বুঝিয়ে দিয়েছে ওরা বিয়েতে খুশি৷ সোমনাথ ও চন্দ্রাণীর বিয়েতে খুশি উভয়ের পরিবার ।

কুলটি, 31 জানুয়ারি : হিন্দু শাস্ত্র মতে বিবাহে পাত্রপাত্রী উভয়কে উচ্চারণ করতে হয় "যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম"৷ বিবাহে পাত্রপাত্রীকে অগ্নিকে সাক্ষী রেখে উভয়কেই নিতে হয় শপথ ৷ মুখে উচ্চারণ করতে না পারলেও, একে অপরের দিকে তাকিয়ে সেই শপথ নিলেন সোমনাথ ও চন্দ্রাণী ৷

ছোটো থেকে কথা বলতে পারেন না কুলটির সিতারামপুর বিষ্ণুবিহার পলাশবাগানের বাসিন্দা সোমনাথ মাজি । পরিবারের লোকেরা যখন প্রথম জানতে পারে সোমনাথ মূক ও বধির, তখনই আকাশ ভেঙে পড়েছিল মাথায় । বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাও করানো হয় তাঁর । কিন্তু কোনও লাভ হয়নি । সোমনাথ কথা বলতে বা শুনতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা । আর তখন থেকেই লড়াই শুরু সোমনাথের ।

একইভাবে লড়াই শুরু পূর্ব বর্ধমানের ধাত্রীগ্রাম পিয়ারিনগরের বাসিন্দা চন্দ্রাণী সাহার ।

ঘটনাচক্রে দু-জনেই পড়াশোনা করেছেন পূর্ব বর্ধমানের বৈদ্যপুর মূক ও বধিরদের বিশেষ স্কুলে । অথচ স্কুলে পড়াকালীন সেভাবে দু'জনের আলাপ হয়নি । উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কম্পিউটার নিয়ে পড়াশুনো করেন সোমনাথ । তারপর কর্মসূত্রে কলকাতায় ৷

ছেলে চাকরি করছে ৷ কলকাতায় থাকে ৷ বিয়েরও বয়স হয়েছে ৷ এই সব কথা মনে করে বিগত কয়েকমাস ধরেই সোমনাথের বিয়ের জন্য সুযোগ্য পাত্রীর খোঁজ শুরু করেছিল পরিবার ৷ তবে সোমনাথের বিয়ের প্রধান শর্তই ছিল বিয়ে করলে নিজের পছন্দ মতো কাউকে বিয়ে করবেন ৷ সোমনাথের সেই শর্তের সঙ্গে এক মত হয় পরিবারের লোকেরা ৷ খোঁজ শুরু হয় পাত্রীর ৷ কিন্তু এমন পাত্রী পাওয়াও তো অনেকটাই কষ্টের ৷ এই সবের মাঝেই সোমনাথের হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে এমন এক মেয়ের খোঁজ জানতে চায় তাঁর পরিবার ৷ বৈদ্যপুর মূক ও বধির বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য চন্দ্রাণীর খোঁজ দেন সোমনাথের পরিবারকে । এরপর চন্দ্রাণীর পরিবারে যায় বিয়ের প্রস্তাব । সোমনাথ ও চন্দ্রাণীর বিয়েতে রাজি হয় দুটি পরিবার ।

তারপরই হোয়াটস অ্যাপে ভিডিয়ো কলে সোমনাথ-চন্দ্রাণীর আলাপ । সেই থেকেই প্রেম । সেই প্রেম সবাক না হলেও অনুভূতিতে ছিল ভরা । বসন্ত পঞ্চমীতে সোমনাথ ও চন্দ্রাণীর চার হাত এক হয় । বাকি পাঁচটা বিয়ের মতোই তাঁদের বিয়েতেও সানাই বেজেছে ৷ হিন্দু শাস্ত্র মতে পুরোহিত মন্ত্রপাঠ করেছেন ৷ সোমনাথ ও চন্দ্রাণী সেই মন্ত্র মুখে উচ্চারণ করেতে পারেননি ঠিক ৷ কিন্তু একে অপরের চোখে চোখ রেখে তাঁরা সারা জীবন এক সঙ্গে একে অপরের সুখে, দুঃখে পাশে থাকার শপথ নিয়েছেন ৷ বিয়ের পর দু'জনের আনন্দের হাসি বুঝিয়ে দিয়েছে ওরা বিয়েতে খুশি৷ সোমনাথ ও চন্দ্রাণীর বিয়েতে খুশি উভয়ের পরিবার ।

Intro:প্রেম এসেছিল নীরবে। আর কথাহীন হয়েই সেই প্রেম অনুভূতির পথেই পরিণয়ে রূপান্তরিত হল বসন্ত পঞ্চমীতে।
বিয়ে হল সোমনাথ ও চন্দ্রানীর। ওরা আর পাঁচ জন সাধারণ পাত্রপাত্রীর মত স্বাভাবিক নয়। ওরা ওদের অনুভূতির কথা মুখে বলে প্রকাশ করতে পারেন। কানেও শুনতে পায়না। তবু নির্বাক অনুভূতিই তাদের এনে দিল কাছে। সুখী হোক মূক ও বধির দম্পতি সোমনাথ-চন্দ্রানী, এমনটাই চাইছে পরিবার।


Body:ছোট থেকেই কথা বলতে পারেনা কুলটির সিতারামপুর বিষ্ণুবিহার পলাশবাগানের সোমনাথ মাজি। পরিবারের লোকেরা যখন প্রথম জেনেছিল সোমনাথ মূক ও বধির, তখনই আকাশ জেনে ভেঙে পড়েছিল মাথায়। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু লাভ হয়নি। সোমনাথ কথা বলতে বা শুনতে পাবেন বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আর এখান থেকেই লড়াই শুরু সোমনাথের। একইভাবে লড়াই শুরু করেছিল পুর্ব বর্ধমানের ধাত্রীগ্রাম পিয়ারিনগরের বাসিন্দা চন্দ্রানী সাহা। দুজনেই পড়াশুনো করেছেন পুর্ব বর্ধমানের বৈদ্যপুর মুক ও বধির বিশেষ স্কুলে। তখন সেভাবে দুজনের আলাপ হয়নি অবশ্য। হাইসেকেন্ডারী পাস করে কম্পিউটার নিয়ে পড়াশুনো করে সোমনাথ। বর্তমানে কলকাতায় একটি ইকমার্স কম্পানিতে কর্মরত সে। বাড়ির থেকে বিয়ের দেখাশুনা শুরু হয়। কথা বলতে পারে এমন মেয়েও সোমনাথকে বিয়ে করতে এগিয়ে আসে। কিন্তু সোমনাথ ও তার পরিবার ঠিক করেই নেয়, সোমনাথের মত কোন
মূক ও বধির পাত্রীর সাথেই সোমনাথের বিয়ে হবে। সেইমত সোমনাথের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছেই খোঁজ নেওয়া হয়, তেমন কোনও পাত্রী আছে কি না। বৈদ্যপুর মূক ও বধির বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য চন্দ্রানীর খোঁজ দেন সোমনাথের পরিবারকে। এরপর চন্দ্রানীর পরিবারে প্রস্তাব যায়। দুটি পরিবারই সাগ্রহে রাজি হয়।
হোয়াটস এপের ভিডিও চ্যাটেই সোমনাথ চন্দ্রানীর আলাপ হয়। প্রেম আসে। সেই প্রেম সবাক না হলেও অনুভূতিতে ছিল ভরা। বসন্ত পঞ্চমীতে সোমনাথ ও চন্দ্রানীর দুই হাত এক হয়। বিয়ের পর দুজনের আনন্দ, হাসি বারেবারেই বুঝিয়ে দিয়েছে ওরা ভালো আছে, ওরা ভালো থাকবে। পরিবারের লোকেরাও খুশি। সোমনাথ চন্দ্রানীর আগামীর পথ চলায় সবাই শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিয়েছেন।


Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.