রায়গঞ্জ, 27 জুন : কোরোনা ভাইরাসের জেরে বদলেছে রায়গঞ্জের পাখিরালয়ের ছবি । পরিযায়ী পাখিরা থাকলেও, নেই পর্যটক । অথচ, অন্যান্য বছর এই সময়ে প্রচুর পর্যটক ভিড় করেন । এই বছরে সাধারণ মানুষের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ কুলিকের ফটক । গতবছর শুধুমাত্র এপ্রিল, মে এবং জুন মাসে প্রায় সাত হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন কুলিকে । তবে এই বছর এই তিন মাসে কোনও পর্যটককেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি । খুব স্বাভাবিক ভাবেই আর্থিক ক্ষতি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কুলিক পাখিরালয় । ক্ষতি মানতে বাধ্য হচ্ছে বনদপ্তর ।
কুলিক পাখিরালয় এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাসের মধ্যে অন্যতম । প্রতিবছর বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিযায়ী পাখিরা এখানে এসে ভিড় জমায় । প্রজনন এবং প্রজনন পরবর্তী সময়ে পাখিদের উড়ান ভরা থেকে শুরু করে সমস্ত প্রক্রিয়াই এই কুলিক পাখিরালয়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে । তবে প্রতিবছরই লক্ষ্য করা গিয়েছে পাখিদের কখনও কখনও সংখ্যা বৃদ্ধি পায় । কখনও বা সংখ্যায় কমে যায় তারা । তবে যাই হোক না কেন মোটামুটিভাবে জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পাখিরালয়ে আসতে থাকে পাখিরা ।
চলতি বছরে পাখিরা অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছে তাদের প্রিয় জায়গায় । যা জেনে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রকৃতিপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত । সময়ের অনেক আগেই রায়গঞ্জ কুলিক পাখিরালয় পাখি আসা সত্ত্বেও আসতে পারছেন না পর্যটকরা । প্রতিবছর কুলিক পাখিরালয়ে আসেন প্রায় 25 থেকে 30 হাজার মানুষ । প্রায় 10 লাখ টাকা বার্ষিক আয় হয় বনদপ্তরের । গত বছর এপ্রিল, মে এবং জুন মাসে প্রায় সাত হাজার মানুষ এই কুলিক পাখিরালয় এসেছিলেন । শুধু টিকিট বিক্রিতে বনদপ্তর উপার্জন করেছিল দুই লাখ আশি হাজার টাকা ।
কোরোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে আগামী সময়ে কবে কুলিক পাখিরালয় ফের সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে সেই সম্পর্কে নিশ্চিত কোনও তথ্য এখনও নেই । খুব স্বাভাবিকভাবেই আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি বনদপ্তর । পর্যটকদের মনেও আষাঢ়ের কালো ঘন মেঘ ।
এই বিষয়ে রায়গঞ্জ ডিভিশন DFO সোমনাথ সরকার বলেন, “বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস আতঙ্ক মানুষের মনের মধ্যে বাসা করেছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই সেই কারণে মানুষকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী আমরা কুলিক পাখিরালয় বন্ধ করে দিয়েছি । অন্যান্য বছর এই সময়ে প্রচুর মানুষ কুলিক পাখিরালয় আসেন। এখন তা আসতে পারছেন না ঠিকই। তবে গত বছর এপ্রিল মে জুন মাসে 7000 মানুষ পাখি দেখতে এলাকায় এসেছিলেন । সেই সময়ে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করেছিল বনদপ্তর । তবে এখন বলতে পারছি না কবে কুলিক পাখিরালয় কোন রায়ের সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে । সরকারি নির্দেশিকা আসার পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারব ।"