বর্ধমান, 4 জুলাই : তোলাবাজির টাকা না পেয়ে এক ব্যক্তিকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । হুমকির জেরেই পরে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির । মৃতের নাম কিশোরপ্রসাদ পাসোয়ান । অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বর্ধমানের 6 নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর । তাঁর নাম সৈয়দ মহম্মদ সেলিম । এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ।
কিশোরপ্রসাদ অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী ছিলেন । দেড় বছর আগে বর্ধমান থানার অন্তর্গত লোকো এলাকায় বাড়ি তৈরি করার জন্য জমি কিনেছিলেন তিনি । অভিযোগ, বাড়ির প্ল্যান পাশ করানো থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজের জন্য তৎকালীন কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা সৈয়দ মহম্মদ সেলিম মোট 1 লাখ 40 হাজার টাকা নেন কিশোরপ্রসাদবাবুর কাছ থেকে । এতেও মেটেনি দাবি । পরে আরও টাকা চান তিনি । কিন্তু কিশোরবাবু সেই টাকা দিতে না পারায় বাড়ির নির্মাণকাজ আটকে দেন সেলিম । কিশোরবাবুর স্ত্রী পুতুল পাসোয়ানের অভিযোগ, দিন তিনেক আগে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে তাঁর স্বামীকে ডেকে পাঠানো হয় । বলা হয় টাকা দিতে হবে, নাহলে রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে হবে । সেখান থেকে ফিরে আসার পরই কিশোরবাবুর হার্ট অ্যাটাক হয় । মঙ্গলবার তিনি মারা যান । এই ঘটনায় কিশোরবাবুর ছেলে শ্যাম পাসোয়ান বলেন, "বাড়ি তৈরির নামে তোলাবাজি করছেন ওই তৃণমূল নেতা । বাবাকে হুমকি দেওয়ার জন্যই তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান । "
অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেলিম । তিনি বলেন, "মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে । কিশোরবাবু পৌরসভা থেকে কোনও প্ল্যান না নিয়েই বাড়ি তৈরি করেছিলেন । পৌর আধিকারিকরা প্ল্যান না থাকায় বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ করে দেয় । ওই পরিবারটি অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত । সেই দলের সঙ্গে মিলে তৃণমূলের বদনাম করার জন্য এইসব বলছে । উলটে বেআইনিভাবে আমাদের টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরি করিয়ে কাজ হাসিল করতে চেয়েছিল । কিন্তু আমরা সেটা করতে দিইনি । তিনি মারা যাওয়াতে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি । কিন্তু ওই মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে BJP নোংরা খেলা শুরু করেছে । "
এই ঘটনায় আজ পরিবারের সঙ্গে স্থানীয় BJP নেতৃত্ব থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখায় । বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার BJP-র পর্যবেক্ষক দেবাশিস সরকার বলেন, " পরিবারের তরফে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । আমরা ওদের সঙ্গে আছি । যেখানে মানুষ প্রতারিত হবে সেখানেই BJP মানুষের পাশে দাঁড়াবে । তাই আমরা থানায় গেছিলাম । "