মালদা, 6 এপ্রিল : কালবৈশাখিতে কোথাও মঞ্চ ভেঙে পড়ার উপক্রম, কোথাও বা মঞ্চের সামনে হাঁটুজল। এই অবস্থাতেই আজ জেলার তিনটি জায়গায় নির্বাচনী সভা করলেন BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনটি সভাই উত্তর মালদা লোকসভাকেন্দ্র এলাকায়। মঞ্চ থেকে তিনি দাবি করেন, এবার ২৩ নয়, রাজ্যের ৩৩টি আসনে জিততে চলেছেন তাঁরা।
আজ BJP রাজ্য সভাপতি প্রথম সভাটি করেন হরিশ্চন্দ্রপুর-2 ব্লকের দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিবাসর মাঠে। তিনি সভাস্থানে যাওয়ার পর ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়। অনেকে সভাস্থান ছাড়েন। কেউ কেউ আবার মাথার উপর প্লাস্টিক ধরেই দিলীপ ঘোষের বক্তব্য শোনেন। দিলীপ বলেন, "যে রাস্তা দিয়ে সভায় আসলাম, সেই রাস্তায় যমও আসবে না। এতটাই খারাপ রাস্তা। এই যে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। এটা BJP-র ঝড়। আপনারা চিন্তা করবেন না। শুধু মালদায় নয়, সারা পশ্চিমবঙ্গ, সারা দেশজুড়ে BJP আর মোদির ঝড় চলছে। এই সরকার পশ্চিমবঙ্গে 8 বছর ধরে আছে। আর যিনি এখানকার সাংসদ, তিনি 10 বছর ধরে আছেন। এখন তিনি পালিয়ে গেছেন। কিন্তু এখানকার মতো খারাপ রাস্তা পশ্চিমবঙ্গে কোথাও নেই। এসবের জবাব তাঁকে দিতে হবে। BJP যেমন নরেন্দ্র মোদিকে আরেকবার প্রধানমন্ত্রী করার জন্য লড়াই করছে, তেমনি এই রাজ্যে পরিবর্তনের জন্য আমরা লড়াই করছি। আমাদের সভাপতি বলেছিলেন, এখানে 23 টি আসনে জিততে হবে। রাজ্য ঘুরে আমার মনে হচ্ছে, 23 নয়, এবার আমরা 33 টি আসনে জিতব। এখানে গত 8 মাসে 42 জন কর্মী খুন হয়েছেন। আমাদের 4 জন প্রার্থীর উপর হামলা হয়েছে। রাজনৈতিক লড়াইয়ে এঁটে উঠতে না পেরে এরা BJP কর্মীদের উপর আক্রমণ করছে।"
দিলীপবাবু বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেক চাষির জন্য বছরে 8 হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছে। রিকশা চালক, অন্যান্য শ্রমিকদের জন্য পেনশন স্কিম চালু করেছে। 60 বছর বয়স হলে তাঁরা প্রতি মাসে 3 হাজার টাকা করে পেনশন পাবেন। অথচ রাজ্য সরকারের জন্য এই মানুষরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে না। এই রাজ্যের সরকার গরিব মানুষকে সুবিধা দিতে চায় না। এখানে শুধু নেই-রাজত্ব। থানা আছে, পুলিশ নেই। হাসপাতাল আছে, চিকিৎসক নেই। চিকিৎসার জন্য নরেন্দ্র মোদি প্রত্যেক গরিব মানুষের পরিবারকে বছরে ৫ লক্ষ টাকা দেবেন বলে ঠিক করেছেন। রাজ্যের বাইরে চিকিৎসা করালেও তার কোনও খরচ হবে না। খরচ দেবে কেন্দ্র। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলছেন, এই টাকা আমাদের লাগবে না। এখানে শুধু আছে সন্ত্রাস। গুন্ডা-বদমাশ কিংবা পুলিশকে ভয় করবেন না। যারা অত্যাচার করছে, সবাইকে বদলি করা হবে। যে গুন্ডারা চোখ দেখাচ্ছে, ভোটের পর সব বিচার হবে। পার্টি আপনাদের সঙ্গে রয়েছে।"
দৌলতনগর থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর-1 ব্লকের তুলসীহাটায় নির্বাচনী সভা করতে যান দিলীপ ঘোষ। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে সেখানে মঞ্চের সামনে হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায়। সেখানে সভা করা অসম্ভব দেখে দিলীপবাবু দলীয় প্রার্থী খগেন মুর্মুকে নিয়ে প্রথমে পদযাত্রা করেন। পরে কোনও রকমে মঞ্চে উঠে এক মিনিটেরও কম বক্তব্যে BJP-কে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁর শেষ সভাটি হয় হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডীতে।