ETV Bharat / bharat

টানা 42 দিন বন্ধ টিভি-ফোন-চাষবাস, পাহাড়ি গ্রামটি মকর সংক্রান্তি থেকেই নিশ্চুপ ! - দেবভূমি হিমাচল প্রদেশ

Makar Sankranti Tradition : প্রচলিত বিশ্বাসের উপর ভর করে আজও মকর সংক্রান্তি থেকে 42 দিন টিভি বন্ধ ও ফোন সাইলেন্ট করে রাখেন গ্রামবাসীরা ৷ কিন্তু কেন এমন নিয়ম পালন করেন তাঁরা ? জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন ৷

Etv Bharat
হিমাচলের গ্রামে মকর সংক্রান্তির আজব নিয়ম
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 15, 2024, 4:24 PM IST

কুল্লু , 15 জানুয়ারি: জানলে অবাক হবেন যে হিমাচল প্রদেশের একটি গ্রামের বাসিন্দারা আজ থেকে আগামী 42 দিন টিভি দেখবেন না ৷ সবরকম চিৎকার চেঁচামেচি বা হৈ-হুল্লোড় থেকে বিরত থাকবেন তাঁরা ৷ এমনকি নিজেদের মোবাইল ফোনও সাইলেন্ট করে রাখবেন ৷ এই সব কিছু তাঁরা করবেন যাতে কোনও শব্দের কারণে দেবতাদের তপস্যা ব্যাহত না হয় ৷

মানালির গোশাল গ্রামে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে গ্রামের দেবতা কাঞ্চন নাগ, বিয়াস ঋষি ও গৌতম ঋষির মন্দিরের দরজা বন্ধ করা হয় ৷ বিশ্বাস যে এইদিন থেকে দেবতারা তপস্যায় বসেন ৷ মনে করা হয়, আজ থেকে 42 দিন পর মন্দিরের দরজা খুলবে এবং দেবতারা গ্রামবাসীদের আশীর্বাদ দেবেন । এমতাবস্থায় গোশাল সংলগ্ন 9টি গ্রামে কৃষি কাজও বন্ধ রাখতে বলা হয় ৷ গ্রামবাসীরা 42 দিনের জন্য ঈশ্বরের নির্দেশ মেনে চলেন । গোশাল গ্রাম সংলগ্ন কোঠি, সলং পলচান, কুলং, মাঝাচ গ্রামে বেশি শব্দ করা নিষিদ্ধ থাকে ৷ পুরনো প্রথা অনুযায়ী আজও গ্রামবাসীরা পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে এই দেব নিষেধাজ্ঞা পালন করেন ।

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে, দেবতাদের মূর্তির উপর মাটির প্রলেপ লাগানো হয় এবং পুজোর পর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় । বিশ্বাস করা হয়, এমতাবস্থায় কাদার প্রলেপে যদি ফুল পাওয়া যায়, তাহলে তা ভালো সময়ের লক্ষণ । যদি আপেলের পাতা পাওয়া যায় তাহলে এর মানে আপেলের ফলন ভালো হবে । কয়লা পাওয়া গেলে এই পুরো এলাকায় আরও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটবে । একই সঙ্গে কুমকুম পাওয়া গেলে পুরো এলাকায় আরও বিয়ে হবে । মাটিতে পাথর ও নুড়ির টুকরো পাওয়া গেলে তা বন্যার লক্ষণ বলা হয় । মাটিতে মানুষের লোম পাওয়া গেলে তা মানুষের ক্ষতির লক্ষণ বলে মনে করা হয় । মাটিতে ভেড়া ও ছাগলের লোম পাওয়া গেলে তা প্রাণীদের ক্ষতির লক্ষণ বলে মনে করা হয় ।

সেই সঙ্গে গোটা এলাকায় এমন বিশ্বাস রয়েছে যে এই 42 দিন ধরে দেবতারা স্বর্গে যান এবং সেখানে তপস্যায় মগ্ন থাকেন । এমতাবস্থায় কোনওপ্রকার গোলমাল হলে তা দেবতাদের তপস্যায় ব্যাঘাত ঘটায় এবং দেবতারা এতে ক্রুদ্ধ হন । যার কারণে গ্রামবাসীরা 42 দিন ধরে কোনও শব্দ করে না ৷ যাতে দেবতা স্বাচ্ছন্দ্যে তাঁর তপস্যা শেষ করতে পারেন এবং উপত্যকার নয়টি গ্রামের মানুষকে সুখ ও সমৃদ্ধি দিয়ে আশীর্বাদ করতে পারেন ।

42 দিন পর ফাগলি উৎসবে মন্দিরের দরজা খুলবে ৷ তারপর এই গ্রামের লোকেরা রেডিয়ো, টিভি চালানোর পাশাপাশি কৃষিকাজ শুরু করবে । আবার আপন নিয়মে চলবে তারা ৷

এই বিষয়ে পুরোহিত হরি সিং জানান যে, এখন গ্রামের লোকেরা দেবতার আদেশে আবদ্ধ ৷ সবাই স্বর্গ থেকে দেবতাদের ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করবে । এ বছরও মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং দেবতার নির্দেশে মানুষ কোনও ধর্মীয় কাজকর্ম করবে না বা কোনও ধরনের শব্দ করবে না । 42 দিন পর দেবতারা স্বর্গ থেকে ফিরে এলে মন্দিরে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে এবং দেবতার মাধ্যমে স্বর্গে যা ঘটেছিল সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো হবে ।

আরও পড়ুন :

  1. গ্রামে দীপাবলি উদযাপনে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা, শিশুরা বাজি পোড়ানোর বায়না করলে পাঠানো হয় মামাবাড়ি
  2. মাতৃগর্ভেই ঠিক হয় মেয়েদের বিয়ে, মধ্যপ্রদেশে আজব গ্রামের খোঁজ
  3. কীভাবে সৃষ্টি হল পঞ্চকেদার ? জানুন পুরাণ কাহিনি

কুল্লু , 15 জানুয়ারি: জানলে অবাক হবেন যে হিমাচল প্রদেশের একটি গ্রামের বাসিন্দারা আজ থেকে আগামী 42 দিন টিভি দেখবেন না ৷ সবরকম চিৎকার চেঁচামেচি বা হৈ-হুল্লোড় থেকে বিরত থাকবেন তাঁরা ৷ এমনকি নিজেদের মোবাইল ফোনও সাইলেন্ট করে রাখবেন ৷ এই সব কিছু তাঁরা করবেন যাতে কোনও শব্দের কারণে দেবতাদের তপস্যা ব্যাহত না হয় ৷

মানালির গোশাল গ্রামে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে গ্রামের দেবতা কাঞ্চন নাগ, বিয়াস ঋষি ও গৌতম ঋষির মন্দিরের দরজা বন্ধ করা হয় ৷ বিশ্বাস যে এইদিন থেকে দেবতারা তপস্যায় বসেন ৷ মনে করা হয়, আজ থেকে 42 দিন পর মন্দিরের দরজা খুলবে এবং দেবতারা গ্রামবাসীদের আশীর্বাদ দেবেন । এমতাবস্থায় গোশাল সংলগ্ন 9টি গ্রামে কৃষি কাজও বন্ধ রাখতে বলা হয় ৷ গ্রামবাসীরা 42 দিনের জন্য ঈশ্বরের নির্দেশ মেনে চলেন । গোশাল গ্রাম সংলগ্ন কোঠি, সলং পলচান, কুলং, মাঝাচ গ্রামে বেশি শব্দ করা নিষিদ্ধ থাকে ৷ পুরনো প্রথা অনুযায়ী আজও গ্রামবাসীরা পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে এই দেব নিষেধাজ্ঞা পালন করেন ।

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে, দেবতাদের মূর্তির উপর মাটির প্রলেপ লাগানো হয় এবং পুজোর পর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় । বিশ্বাস করা হয়, এমতাবস্থায় কাদার প্রলেপে যদি ফুল পাওয়া যায়, তাহলে তা ভালো সময়ের লক্ষণ । যদি আপেলের পাতা পাওয়া যায় তাহলে এর মানে আপেলের ফলন ভালো হবে । কয়লা পাওয়া গেলে এই পুরো এলাকায় আরও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটবে । একই সঙ্গে কুমকুম পাওয়া গেলে পুরো এলাকায় আরও বিয়ে হবে । মাটিতে পাথর ও নুড়ির টুকরো পাওয়া গেলে তা বন্যার লক্ষণ বলা হয় । মাটিতে মানুষের লোম পাওয়া গেলে তা মানুষের ক্ষতির লক্ষণ বলে মনে করা হয় । মাটিতে ভেড়া ও ছাগলের লোম পাওয়া গেলে তা প্রাণীদের ক্ষতির লক্ষণ বলে মনে করা হয় ।

সেই সঙ্গে গোটা এলাকায় এমন বিশ্বাস রয়েছে যে এই 42 দিন ধরে দেবতারা স্বর্গে যান এবং সেখানে তপস্যায় মগ্ন থাকেন । এমতাবস্থায় কোনওপ্রকার গোলমাল হলে তা দেবতাদের তপস্যায় ব্যাঘাত ঘটায় এবং দেবতারা এতে ক্রুদ্ধ হন । যার কারণে গ্রামবাসীরা 42 দিন ধরে কোনও শব্দ করে না ৷ যাতে দেবতা স্বাচ্ছন্দ্যে তাঁর তপস্যা শেষ করতে পারেন এবং উপত্যকার নয়টি গ্রামের মানুষকে সুখ ও সমৃদ্ধি দিয়ে আশীর্বাদ করতে পারেন ।

42 দিন পর ফাগলি উৎসবে মন্দিরের দরজা খুলবে ৷ তারপর এই গ্রামের লোকেরা রেডিয়ো, টিভি চালানোর পাশাপাশি কৃষিকাজ শুরু করবে । আবার আপন নিয়মে চলবে তারা ৷

এই বিষয়ে পুরোহিত হরি সিং জানান যে, এখন গ্রামের লোকেরা দেবতার আদেশে আবদ্ধ ৷ সবাই স্বর্গ থেকে দেবতাদের ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করবে । এ বছরও মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং দেবতার নির্দেশে মানুষ কোনও ধর্মীয় কাজকর্ম করবে না বা কোনও ধরনের শব্দ করবে না । 42 দিন পর দেবতারা স্বর্গ থেকে ফিরে এলে মন্দিরে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে এবং দেবতার মাধ্যমে স্বর্গে যা ঘটেছিল সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো হবে ।

আরও পড়ুন :

  1. গ্রামে দীপাবলি উদযাপনে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা, শিশুরা বাজি পোড়ানোর বায়না করলে পাঠানো হয় মামাবাড়ি
  2. মাতৃগর্ভেই ঠিক হয় মেয়েদের বিয়ে, মধ্যপ্রদেশে আজব গ্রামের খোঁজ
  3. কীভাবে সৃষ্টি হল পঞ্চকেদার ? জানুন পুরাণ কাহিনি
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.