ক্যালিফোর্নিয়া, 31 মে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রাহুল গান্ধির ভালোবাসার বাণী ৷ হ্যাঁ, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাহুলের ভাষণে সেটাই শোনা গেল ৷ জানালেন, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কর্মসূচির সময় ভারতবাসীর থেকে যে ভালোবাসা তিনি এবং কংগ্রেস পেয়েছেন, সেখান থেকেই আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের ক্যাচলাইন পেয়ে গিয়েছে কংগ্রেস, ‘‘নফরত কি বাজার মে মহব্বত কি দুকান খোলি ৷’’ বাংলায় যার তরজমা করলে, ‘‘ঘৃণার বাজারে ভালোবাসার দোকান খুলেছি ৷’’ এই ইস্যুতেই বিজেপি ও আরএসএস-কে একহাত নিয়েছেন রাহুল ৷ অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় রাজনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রকে অনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি ও আরএসএস ৷
ভারতীয় রাজনীতির বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলতে শোনা যায় রাহুলকে ৷ মূলত কেন ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ করতে হল কংগ্রেসকে ? সেই কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সাধারণত রাজনীতিতে মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য যে উপায়গুলিকে অবলম্বন করি ৷ যেমন- আলোচনা, জনসভার মতো কর্মসূচিগুলি আর কাজ করছিল না ৷ তাই এই যাত্রা করতে হল ৷ ভারতীয় রাজনীতিতে আমরা যে বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করি, সেই সব মাধ্যমগুলিকে বিজেপি ও আরএসএস নিয়ন্ত্রণ করছে ৷’’
এই প্রসঙ্গে ফের একবার কেন্দ্রীয় সংস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন রাহুল গান্ধি ৷ তাঁর কথায়, ‘‘মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে ৷ কেন্দ্রীয় সংস্থকে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ আর এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ৷ আর সেই কারণে আমরা ঠিক করেছিলাম, দেশের একেবারে দক্ষিণ প্রান্ত থেকে উত্তরের শ্রীনগর পর্যন্ত পদযাত্রা করব ৷’’
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ায় রাহুলের ভাষণে বাধা, হাসি মুখে স্বাগত জানালেন সাংসদ
কিন্তু, ‘‘নফরত কি বাজার মে মহব্বত কি দুকান খোলি’’, এই ভাবনার বিকাশ কীভাবে হল ? সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন রাহুল ৷ তিনি জানান, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করার সময় কী হতে পারে ? তা নিয়ে কোনও ধারণা ছিল ৷ এই যাত্রা শুরুর 5-6 দিন পর তাঁরা বুঝতে পারেন যে, এই দীর্ঘ কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দেওয়া সহজ হবে না ৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁর হাঁটুর পুরনো চোট ভোগাতে শুরু করেছিল ৷ রাহুল জানান, কিছুদিন পর থেকে তাঁরা অনুবভ করেন যে, রোজ 25 কিলোমিটার পথ হাঁটলেও কেউ ক্লান্ত হচ্ছেন না ৷
আরও পড়ুন: বিলেতের পর আমেরিকা ! বিজেপি-আরএএসসকে ফের কড়া আক্রমণ রাহুলের
এর পিছনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে রাহুল এবং অন্যান্য কংগ্রেস নেতাদের মনে হয়েছে ৷ প্রতিদিন কয়েক হাজার কংগ্রেস নেতা-কর্মীর পাশাপাশি, লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ তাঁদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছিল ৷ তাঁরা সকলে একসঙ্গে এগিয়ে চলেছিলেন ৷ একে অপরের সমস্যায় সাহায্য করছিলেন ৷ তাই সারাদিন হাঁটার পরেও কেউ ক্লান্ত হননি ৷ আর এর মূলে ছিল, দীর্ঘ এই যাত্রায় মানুষের ভালোবাসা ৷ সেখান থেকেই আগামী নির্বাচনের ক্যাচ লাইন পেয়ে গিয়েছে কংগ্রেস ৷