মুম্বই, 18 মে: ধীরে ধীরে গুজরাতের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় তখতে । তবে তার আগে মহারাষ্ট্রের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে দিয়ে গেল ৷ মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলে কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় তখতে ৷ নিহত হয়েছেন 6 জন ৷ গুরুতর জখম হয়েছেন আরও 9 জন ৷ কমপক্ষে 447টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । গাছপালা ভেঙে পড়েছে ৷
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রত্নগিরি ও সিন্ধুদুর্গ জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৷ বিভিন্ন জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে ৷ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয় । রায়গড়ে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন । ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিশ্লেষণ করতে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বব ঠাকরে জরুরি বৈঠক করেন ৷ ত্রাণ বিলি এবং উদ্ধারকাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ।
সোমবার বিকেলের পর মুম্বইয়ে ঘূর্ণিঝড়টি ঢোকে ৷ মুম্বই-সহ গ্রামীণ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হয় ৷ রাস্তাঘাট ডুবে যায় ৷ গাছ উপড়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায় ৷ রেললাইনের উপরও গাছপালা ভেঙে পড়ে ৷ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে সোমবার সকাল দশটার পরে ওরলি-বান্দ্রা সি লিঙ্কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল । মুম্বই বিমানবন্দরে সমস্ত ফ্লাইট রাত 8টা অবধি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল । মুম্বইয়ের তিনটি কোভিড সেন্টার থেকে রোগীদের নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছিল ।
সোমবার বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্র ৷ বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় 114 কিলোমিটার ৷ গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া, নরিম্যান পয়েন্ট, দাদার চৌপট্টি এবং জুহুতে বিশাল আকারের ঢেউ দেখা গিয়েছে ৷ রত্নগিরি জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ৷ ঝড় এবং ভারী বৃষ্টির কারণে প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে । অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । যদিও কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি ৷ তবে একটি বিশাল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি অনুমান করা হয়েছিল । সেখানে ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনার কাজ শুরু হয়েছে ৷ রত্নগিরিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে ৷
এদিকে সিন্ধুদুর্গে দু'টি নৌকা সমুদ্রে ভেসে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ দেবগড়ের আনন্দওয়াড়ি পোর্টে নৌকো দু'টি বাঁধা ছিল ৷ সেখানে দুর্যোগে একজন মাঝি প্রাণ হারিয়েছেন ৷ আরও তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে । জেলার উপকূলী অঞ্চল থেকে মোট 144টি পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ।
রায়গড় জেলায় ঘূর্ণিঝড়ে তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন ৷ মারা গিয়েছে দু'টি প্রাণীও ৷ এছাড়াও 1 হাজার 886টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ পাঁচটি ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: কোনও প্রাণহানি যেন না হয়... তখতে আছড়ে পড়ার আগে সজাগ গুজরাত