মুম্বই, 27 নভেম্বর : হঠাৎই সুখের পরিবারে একটা কালো ছায়া পড়েছিল ৷ কাকা-ভাইপোর মধ্যে বিভাজন রেখাটা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল ৷ এই মতবিরোধের প্রভাব পড়েছিল দলে ৷ অবশেষে হস্তক্ষেপ করতে হল সেই রমণীকেই ৷ কাকিমা প্রতিভা পাওয়ারের হস্তক্ষেপেই ফের হাসি ফুটতে চলেছে পাওয়ার পরিবারে ৷
ঘটনার সূত্রপাত দিন চারেক আগে ৷ কাউকে কিছু না বলে হঠাৎই বেপাত্তা হয়ে গেছিলেন অজিত পাওয়ার ৷ ক্ষমতায় যিনি NCP দলের দ্বিতীয়, শরদ পাওয়ারের পরেই তিনি ৷ বেশ কয়েক ঘণ্টা খোঁজ খবর না থাকার পর দিনের আলো ফোঁটার আগেই রাজ্যের নয়া উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি ৷ মুখ্যমন্ত্রী হন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ৷ শুরু হয় গুঞ্জন ৷ অজিত দাবি করে বসেন তাঁর সঙ্গে দলের অধিকাংশ বিধায়ক আছেন ৷ ভাইপোর কাজে মুখ পোড়ার উপক্রম হয় কাকা শরদ পাওয়ারের ৷ তড়িঘড়ি অজিতের মাথা থেকে হাত তুলে নেন ৷ দলের পরিষদীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় অজিতকে ৷ কাকা-ভাইপোর সুখের সংসারে ফাটল ক্রমেই চওড়া হতে শুরু করে ৷
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ময়দানে নামেন প্রতিভা দেবী৷ পাওয়ার পরিবারের হাঁড়ির খবর যাঁরা রাখেন, তাঁরা জানেন শুধু পরিবার নয় দলেও একটা প্রভাব রয়েছে শরদ পাওয়ারের স্ত্রীর ৷ তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করে কোনও কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেন না শরদ ৷ প্রতিভার কথা বাধ্য ছেলের মতো শোনেন অজিতও ৷ পরিবার এবং দলের মধ্যে সমস্যা তৈরি হচ্ছে দেখে তিনি কথা বলেন অজিতের সঙ্গে ৷ বোঝান অজিতকে ৷ দল ও পরিবার সূত্রে খবর, প্রতিভা পাওয়ারের পরামর্শেই উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়েন অজিত ৷
শুধু অজিতকে বোঝানো হয়, শরদ পাওয়ারের গোঁসা কমানোর কাজটাও করেন প্রতিভাই ৷ তিনিই শরদ পাওয়ারকে অজিতের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাজি করান ৷ শরদ পাওয়ার রাজি হওয়ার পরই গতকাল রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ মুম্বইয়ে শরদ পাওয়ারের বাড়িতে আসেন অজিত ৷ বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের মধ্যে কথাও হয় ৷ যদিও কী কথা হয়েছে তা কেউ স্পষ্ট করেননি ৷ এমনকী, দিন কয়েক আগে বোন সুপ্রিয়া সুলেকেও অজিতের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গেছিল ৷ সেই সুপ্রিয়াকেও দাদা অজিতের সঙ্গে হাসিহাসি মুখে কথা বলতে দেখা যায় ৷
মঙ্গলবার রাতেই সম্পর্ক যে সহজ হয়ে গেছে, তা বুধবার দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে আরও স্পষ্ট হয়ে যায় ৷ বিধানসভায় শপথ নেওয়ার আগে যে ভাবে সুপ্রিয়া সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছিলেন ( সেই তালিকায় অজিত পাওয়ারও ছিলেন) তাতে বুঝতে অসুবিধা হল না, সত্যিই সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে !