দিল্লি ও কাঠমাণ্ডু, 17 অগাস্ট : কাঠমাণ্ডুর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিকস্তরে বৈঠক সারল দিল্লি ৷ ওভারসাইট মেকানিজ়ম (OSM) সংক্রান্ত বিষয়ে এই নিয়ে অষ্টমবার মুখোমুখি হল দুই দেশ ৷ ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠক হয় ৷ কাঠমাণ্ডুতে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রগতিশীল প্রকল্পগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে আজকের বৈঠকে ৷
আলোচনা হয়েছে ভারত-নেপাল আন্তর্দেশীয় রেল যোগাযোগের বিষয়টি নিয়েও ৷ নেপালের বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "ভারত-নেপাল দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে সড়কপথ, আন্তর্দেশীয় রেল যোগাযোগ, অরুণ-III জলবিদ্যুত প্রকল্প, তেলের পাইপলাইন, পঞ্চেশ্বর প্রকল্প ও ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আজকের বৈঠকে ৷ " এছাড়া সেচব্যবস্থা, নেপাল পুলিশ অ্যাকাডেমির গঠন, ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট, রামায়ণ সার্কিট, মহাকাল নদীর উপর গাড়ি যাতায়াতের ব্রিজ, কৃষি ও সংস্কৃতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক স্তরে ৷
ভারতের তরফে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন নেপালে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিনয় মোহন কাটরা । অন্যদিকে নেপালের কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সেখানকার বিদেশসচিব শংকরদাস বৈরাগী ।
আরও পড়ুন : উত্তরাখণ্ডের 'বিতর্কিত' অঞ্চলগুলিতে যাতায়াত করতে পারে নাগরিকরা, জানাল নেপাল
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মে মাসে ভারতের মূল ভূখণ্ডের কিছু এলাকা নেপাল নিজেদের বলে দাবি করেছিল ৷ 8 মে ভারত-নেপাল সীমান্ত বরাবর ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রায় আশি কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়কপথের উদ্বোধন করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং । রাস্তাটি লিপুলেখকে ধারচুলার সঙ্গে যুক্ত করে । এরপর থেকেই বিরোধ শুরু করে নেপাল । নেপাল দাবি করতে থাকে যে রাস্তাটি যে এলাকার উপর দিয়ে গেছে, তা নেপালের ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত । সেই সংক্রান্ত নতুন ম্যাপও প্রকাশ করেছিল নেপাল ৷
আরও পড়ুন : ভারতসহ গুগল ও আন্তর্জাতিক স্তরে সংশোধিত মানচিত্র পাঠাতে চলেছে নেপাল
শুধু তাই নয় । এরপর অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজোর কিছুদিন আগেই নেপালের প্রধানমন্ত্রী দাবি তোলেন, রামচন্দ্র নেপালি । জন্মও নেপালেই । বলেছিলেন, রামায়ণে বর্ণিত অযোধ্যা নাকি উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা নয় । রামচন্দ্রের জন্মভূমি যে অযোধ্যায়, সেটি নাকি কাঠমাণ্ডুর পার্শ্ববর্তী একটি গ্রাম ৷
এরপর 15 অগাস্ট দেশের 74 তম স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি ৷ মানচিত্র সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথমবার বার্তালাপ হয় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ৷ আর ঠিক তার পরেই দুই দেশের উচ্চস্তরের কূটনৈতিক বৈঠক ৷ আজকের বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে যে কূটনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল, তা অনেকটাই প্রশমিত হবে ৷ এমনই বলছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ।