ETV Bharat / bharat

HCQ, একটি আশার আলো

author img

By

Published : Apr 15, 2020, 7:46 PM IST

লাভের কথা চিন্তা না করে স্যর রায় রসায়নের অগাধ জ্ঞানকে ব্যবহার করে বহু ওষুধ তৈরি করেছিলেন ৷

hydroxychloroquine is using on corona patient
হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন

হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট, যা এতদিন ম্যালেরিয়া সারাতে ব্যবহার করা হত, তা এখন COVID-19 সারাতে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বয়ং ভারতের কাছে এই ওষুধ চেয়েছেন ৷ বিদেশে কয়েক লাখ HCQ ট্যাবলেট রপ্তানি করার জন্য ভারতের বর্তমান অবস্থানের নেপথ্যে রয়েছে একজন মানুষের শিল্প ৷ যাঁকে আমরা ভারতীয় রসায়নের পথিকৃত হিসেবে চিনি, সেই আচার্য প্রফুল্ল রায় বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা করেছিলেন ।

পূর্বতন বঙ্গ প্রদেশের রারুলি-কাটিপাড়ায় 1861 সালের 2রা আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন স্যর রায় ৷ 1887 সালে তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অফ সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন ৷ এর পর তিনি 1892 সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নের অধ্যাপনা করেন ৷ মাত্র 700 টাকা মূলধন নিয়ে তিনি বেঙ্গল কেমিক্যাল ওয়ার্কস নামে একটি সংস্থা তৈরি করেন ৷ যা জন সাধারণের ব্যবহারের জন্য ওষুধ তৈরির কাজ শুরু করে ৷ 1901 সালে দু’লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেড ৷ ওই সংস্থা থেকেই প্রচুর পরিমাণে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ, মূলত HCQ তৈরি হয়েছে ৷ কয়েক বছর আগে এই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় ৷ এক টাকাও লাভের কথা চিন্তা না করে স্যর রায় রসায়নের অগাধ জ্ঞানকে ব্যবহার করে বহু ওষুধ তৈরি করেছিলেন ৷ 1902 সালে তিনি দুই খণ্ডে প্রকাশিত করেন ‘আ হিস্ট্রি অফ হিন্দু কেমিস্ট্রি ৷’ তাঁর লেখা প্রবন্ধগুলি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ৷ 1944 সালের 16 জুন তাঁর মৃত্যু হয় ৷

COVID-19 এর সৌজন্যে পৃথিবী জুড়ে মানুষ এখন সাবান এবং স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরি করেছে ৷

ডঃ ইগনাজ ফিলিপ প্রথম বলেছিলেন যে, সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হাত ধোয়া উচিত? তিনি ছিলেন হাঙ্গেরির একজন চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী, যিনি ভিয়েনা হাসপাতালে কাজ করতেন ৷ ওই হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগের দু’টি ওয়ার্ড ছিল ৷ পুরুষ চিকিৎসক এবং ডাক্তারির পড়ুয়ারা একটি ওয়ার্ডে কাজ করতেন এবং অন্য ওয়ার্ডে কাজ করতেন নার্সরা ৷ বহু গর্ভবতী মহিলা সন্তান প্রসাব করতে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন ৷ সন্তান প্রসবের সময় মৃত্যু আটকাতে ডঃ ইগনাজ মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা শুরু করেন ৷ তিনি লক্ষ্য করেন যে নার্সরা যে ওয়ার্ডে কাজ করেন, সেখানে সন্তান প্রসব করতে গিয়ে গর্ভবতীদের মৃত্যুর সংখ্যা কম ৷ অনেক গবেষণার পর তাঁর সামনে উঠে আসনে একটি আসল কারণ ৷ পুরুষ চিকিৎসকরা পাশের মর্গে ময়নাতদন্তের কাজও করতেন ৷ তাঁদের হাতে রক্তের কণা ও জীবাণু লেগে থাকত ৷ সেখান থেকে তাঁরা হাত পরিষ্কার না করেই প্রসূতি বিভাগে এসে গর্ভবতীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার কাজ শুরু করতেন ৷

অন্যদিকে নার্সরা ময়নাতদন্ত বা অন্য কোনও অস্ত্রপচারের কাজে যুক্ত থাকতেন না ৷ ওই দ্বিতীয় ওয়ার্ডে প্রসূতিদের সংক্রমিত হওয়ার খুব কম আশঙ্কা ছিল ৷ এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর ডঃ ইগনাজ হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিচার করেন ৷ তিনি একটি নিয়ম তৈরি করেন যে, চিকিৎসকরা অস্ত্রপচারের আগে বাধ্যতামূলক ভাবে ক্লোরিন সলিউশন দিয়ে নিজেদের হাত পরিষ্কার করবেন ৷ এই নিয়ম চালু হওয়ার পর থেকেই মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে কমতে শুরু করে ৷ তাঁর আবিষ্কার মানুষকে বহু সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচিয়েছে ৷ এর ফলে স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৷

হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট, যা এতদিন ম্যালেরিয়া সারাতে ব্যবহার করা হত, তা এখন COVID-19 সারাতে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বয়ং ভারতের কাছে এই ওষুধ চেয়েছেন ৷ বিদেশে কয়েক লাখ HCQ ট্যাবলেট রপ্তানি করার জন্য ভারতের বর্তমান অবস্থানের নেপথ্যে রয়েছে একজন মানুষের শিল্প ৷ যাঁকে আমরা ভারতীয় রসায়নের পথিকৃত হিসেবে চিনি, সেই আচার্য প্রফুল্ল রায় বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা করেছিলেন ।

পূর্বতন বঙ্গ প্রদেশের রারুলি-কাটিপাড়ায় 1861 সালের 2রা আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন স্যর রায় ৷ 1887 সালে তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অফ সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন ৷ এর পর তিনি 1892 সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নের অধ্যাপনা করেন ৷ মাত্র 700 টাকা মূলধন নিয়ে তিনি বেঙ্গল কেমিক্যাল ওয়ার্কস নামে একটি সংস্থা তৈরি করেন ৷ যা জন সাধারণের ব্যবহারের জন্য ওষুধ তৈরির কাজ শুরু করে ৷ 1901 সালে দু’লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেড ৷ ওই সংস্থা থেকেই প্রচুর পরিমাণে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ, মূলত HCQ তৈরি হয়েছে ৷ কয়েক বছর আগে এই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় ৷ এক টাকাও লাভের কথা চিন্তা না করে স্যর রায় রসায়নের অগাধ জ্ঞানকে ব্যবহার করে বহু ওষুধ তৈরি করেছিলেন ৷ 1902 সালে তিনি দুই খণ্ডে প্রকাশিত করেন ‘আ হিস্ট্রি অফ হিন্দু কেমিস্ট্রি ৷’ তাঁর লেখা প্রবন্ধগুলি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ৷ 1944 সালের 16 জুন তাঁর মৃত্যু হয় ৷

COVID-19 এর সৌজন্যে পৃথিবী জুড়ে মানুষ এখন সাবান এবং স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরি করেছে ৷

ডঃ ইগনাজ ফিলিপ প্রথম বলেছিলেন যে, সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হাত ধোয়া উচিত? তিনি ছিলেন হাঙ্গেরির একজন চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী, যিনি ভিয়েনা হাসপাতালে কাজ করতেন ৷ ওই হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগের দু’টি ওয়ার্ড ছিল ৷ পুরুষ চিকিৎসক এবং ডাক্তারির পড়ুয়ারা একটি ওয়ার্ডে কাজ করতেন এবং অন্য ওয়ার্ডে কাজ করতেন নার্সরা ৷ বহু গর্ভবতী মহিলা সন্তান প্রসাব করতে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন ৷ সন্তান প্রসবের সময় মৃত্যু আটকাতে ডঃ ইগনাজ মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা শুরু করেন ৷ তিনি লক্ষ্য করেন যে নার্সরা যে ওয়ার্ডে কাজ করেন, সেখানে সন্তান প্রসব করতে গিয়ে গর্ভবতীদের মৃত্যুর সংখ্যা কম ৷ অনেক গবেষণার পর তাঁর সামনে উঠে আসনে একটি আসল কারণ ৷ পুরুষ চিকিৎসকরা পাশের মর্গে ময়নাতদন্তের কাজও করতেন ৷ তাঁদের হাতে রক্তের কণা ও জীবাণু লেগে থাকত ৷ সেখান থেকে তাঁরা হাত পরিষ্কার না করেই প্রসূতি বিভাগে এসে গর্ভবতীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার কাজ শুরু করতেন ৷

অন্যদিকে নার্সরা ময়নাতদন্ত বা অন্য কোনও অস্ত্রপচারের কাজে যুক্ত থাকতেন না ৷ ওই দ্বিতীয় ওয়ার্ডে প্রসূতিদের সংক্রমিত হওয়ার খুব কম আশঙ্কা ছিল ৷ এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর ডঃ ইগনাজ হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিচার করেন ৷ তিনি একটি নিয়ম তৈরি করেন যে, চিকিৎসকরা অস্ত্রপচারের আগে বাধ্যতামূলক ভাবে ক্লোরিন সলিউশন দিয়ে নিজেদের হাত পরিষ্কার করবেন ৷ এই নিয়ম চালু হওয়ার পর থেকেই মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে কমতে শুরু করে ৷ তাঁর আবিষ্কার মানুষকে বহু সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচিয়েছে ৷ এর ফলে স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.