কলকাতা, 18 নভেম্বর: ফুটপাথের স্টল বা ছোট-বড় রেস্তোরাঁ নয়, এককালের রাজ্যের প্রধান সচিবালয়ের ভিতর থাকা একাধিক ক্যান্টিনে দেদার বিকোচ্ছে খারাপ মানের খাবার । সেই খাবার খেয়ে অনেকেই অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন । একটি দফতরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি এই ব্যাপারে অভিযোগ করেন রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের কমিশনারের কাছে ।
সেই অভিযোগ আসে কলকাতা কর্পোরেশনের খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের কাছে। অভিযোগ ওঠে মহাকরণে চলা ক্যান্টিনে খারাপ মানের খাবার বিক্রি হচ্ছে । যা খেয়ে বিভিন্ন সময় কর্মী এবং আধিকারিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার অভিযান চালিয়ে চোখ কপালে উঠল খাদ্য সুরক্ষা কর্তাদের ।
রাজ্যের এক সময়ের প্রধান সচিবালয় মহাকরণে হানা দিলেন খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের কর্মী আধিকারিকরা । সংগ্রহ করলেন খাবারের একাধিক নমুনা । সেখানকার ক্যান্টিনের নিম্নমানের খাবার নিয়ে এক আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতেই সোমবার মহাকরণে একাধিক ক্যান্টিনে হানা দেয় কলকাতা কর্পোরেশনের খাদ্য সুরক্ষা বিভাগ ।
7টি ক্যান্টিনে হানা দিয়ে চোখ কপালে উঠল খাদ্য সুরক্ষা কর্মীদের । কোনও ক্যান্টিনেরই লাইসেন্স নেই ৷ নেই FSSAI (Food Safety and Standards Authority of India) সার্টিফিকেট ও ফুড লাইসেন্স । মঙ্গলবার প্রতিটি ক্যান্টিনের মালিককে ডাকা হয়েছে কলকাতা কর্পোরেশনে খাদ্য সুরক্ষা বিভাগে ।
কর্পোরেশন সূত্রে খবর, বৈধ কাগজ দেখতে চাইলে কেউ দেখাতে পারেননি। একজন 1993 সালের একটা কাগজ দেখান যা গ্রহণযোগ্য নয় । কোনও ক্যান্টিনের বৈধ কাগজ থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স নেই । রান্না ঘরের হালও খুবই খারাপ। কাঁচামাল বা মশলার গুণমানও খুব ভালো নয় । 7টি ক্যান্টিন থেকেই 12 ধরনের খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বেশ কিছু মশলা ফেলে নষ্ট করা হয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা যেখানে এখনও বহু দফতরের কাজ হয়, রাজ্য প্রশাসনের উচ্চ পদমর্যাদার কর্তারা বসেন, কর্মীরা সকলেই খান সেখানকার এই অবস্থা দেখে কার্যত তাজ্জব খাদ্য সুরক্ষা কর্মীরা ।
প্রত্যেক ক্যান্টিনের মালিকদের মঙ্গলবার অবিলম্বে কলকাতা কর্পোরেশনের খাদ্য সুরক্ষা বিভাগে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এই বিষয় এক আধিকারিক বলেন, "এই ছবি ফুটপাথে বা কোনও ছোট বড় হোটেলে দেখা গেলে অস্বাভাবিক কিছু ছিল না ৷ কিন্তু এটা মহাকরণ । কোনও ক্যান্টিনের কাগজ নেই । নমুনাগুলো পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে । একটি দফতরের উচ্চ আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালাই আমরা । রিপোর্ট এলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে । তবে কাগজ না-থাকায় এদের বিরুদ্ধে খাদ্য সুরক্ষা আইনমাফিক কীভাবে পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেই বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।