কলকাতা, 18 নভেম্বর: উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলমহল-সহ আদিবাসীদের বাস এমন বিভিন্ন জেলায় একটা বড় সমস্যা হাতি। মাঝে মধ্যেই বুনো হাতির দল ঢুকে পড়ে বিভিন্ন লোকালয়ে। যার জেরে ফসলের ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণহানীর ঘটনা পর্যন্ত ঘটে ৷ এবার তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার নবান্ন সভাঘরে আদিবাসীদের উন্নয়ন নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকেই হাতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এদিন বারবার বিভিন্ন এলাকায় হাতি ঢুকে পড়ার ঘটনা আলোচনায় উঠে আসে। রাজ্যের এক মন্ত্রী বিষয়টি বৈঠকে তোলেন।
তিনি বলেন, "ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা-সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে জঙ্গল কেটে দেওয়া হচ্ছে। ফলে পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে, স্বাভাবিক গতিপথ হারিয়ে হাতির দল ঢুকে পড়ছে এ রাজ্য। এরাজ্যে ঢুকে তারা বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি আক্রমণ করছে। ফসল নষ্ট করছে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।"
অভিযোগ শোনার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কীভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যায় তা নিয়ে কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হাতি আটকানোর জন্য পরিকল্পনার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা একা রাজ্যের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। কেন্দ্র এই নিয়ে অর্থ দিচ্ছে না।" তিনি এও জানিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলা হয়েছে। অতএব আদালতের নজরদারিতেও বিষয়টি রয়েছে। এক্ষেত্রে যা করণীয় তা নিয়ে কেন্দ্রকেই করতে হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
এক্ষেত্রে তাঁর নির্দেশ, মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখবেন ৷ যেভাবেই হোক এই সমস্যার সমাধান করতে হবে বলেও জানিয়েছেন মমতা। উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলিতে হাতির দল ঢুকে পড়া নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যেই বনদফতরকে এই নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। বহু ক্ষেত্রে দুর্ঘটনাও ঘটে। সাধারণ মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। এ ধরনের সমস্যাকে কোনওভাবেই ফেলে রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। কিন্তু গোটা বিষয়টি এককভাবে রাজ্যের হাতে নেই। আর সেই জায়গা থেকে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।