হামিরপুর, 16 মার্চ : জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন 6টি ম্যাচ ৷ তারপর আর সুযোগ পাননি ৷ সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যান খেলাধুলোর জগত থেকে ৷ পরবর্তীকালে পাননি কোনও সুযোগ সুবিধা ৷ তাই 55 বছরের সুভাষ চাঁদের গলায় খেলাধুলো নিয়ে অভিমানটা স্পষ্ট ধরা পড়ে ৷
হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর ৷ দিনের বেশিরভাগ সময়টাই কাটে হামিরপুরের টাউন হলের সামনে ৷ একসময় হাতে ছিল হকির স্টিক ৷ আর আজ হাতে জুতো সেলাইয়ের সরঞ্জাম ৷ স্বপ্ন ছিল জাতীয় খেলোয়াড় হওয়ার ৷ খেলেছেন 6 টি জাতীয় ম্যাচ ৷ তবে দারিদ্রতাই থমকে দেয় স্বপ্ন ৷ ফিরিয়ে এনেছিল বাস্তবের মাটিতে ৷ নাম সুভাষ চাঁদ ৷ আজকাল আর মাঠে না, হামিরপুরের টাউন হলের সামনে রাস্তার ধারে একমনে বসে লোকের পায়ের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হয় ৷ ভাবতে হয় আজ যদি জুতো সারাই বেশি হয়, কয়েকটা বেশি পয়সা আসবে ৷ এভাবেই কাটছে বছর 55-র সুভাষ চাঁদের ৷
চাঁদ ছিলেন গোলকিপার ৷ কিন্তু গোলকিপার হওয়ার জন্য হকি-প্যাড বা হকি স্টিক কোনওটাই ছিল না ৷ ম্যাচের আগে ধার করতে হত স্কুলের বন্ধুদের থেকে ৷ 1984 সালে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিউট থেকে ডিপ্লোমা করেছিলেন ৷ তবে পাননি চাকরি ৷ তাই বাধ্য হয়েই বেছে নিতে হয় এই পেশা ৷
সুভাষের এক মেয়ে আর এক ছেলে ৷ পড়েছেন M.Tech এবং B.Sc ৷ দু'জনেই কর্মরত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ৷ তবে সুভাষ ছেলেমেয়েকে খেলার মাঠে কোনওদিন পাঠাননি ৷ খেলা অন্তপ্রাণ হলেও কোথাও যেন অবিচার , খেলার জীবনে ব্যর্থতা সব মিলিয়ে ক্ষোভ জমেছে মনে ৷ ধুয়ে দিয়েছে আগের সেই খেলার প্রতি ভালোবাসা ৷ একসময় তাঁকে ধ্যানচাঁদের সঙ্গে তুলনা করা হত ৷ যোগ্যও ছিলেন ৷ কিন্তু তাঁকে ভুলেছে সরকার ৷ দারিদ্রতা তাঁকে এনে দিয়েছে নতুন নাম মুচি চাঁদ ৷ চূড়ান্ত দারিদ্রতায় যখন কাতর তখনও কোনও সাহায্য আসেনি সরকারের তরফে ৷ দারিদ্রতা চরমে পৌঁছালে ছাড়তে হয় খেলা ৷ তখনও সাহায্যের হাত বাড়ায়নি কেউই ৷ এরপর জীবনের লড়াইয়ে হাতে তুলে নিতে হয় সুচ-সুতো ৷ বাঁচতে হয় লোকের জুতো সেলাই করে ৷ চম্বা জেলার একটি সামাজিক সংস্থা সুভাষ চাঁদকে সাহায্য করার জন্য উদ্যোগী হয়েছে ৷ তাঁর জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো হয়েছে চিঠি ৷