মুম্বই, 16 জুন : ছাদ অবধি ফ্রেঞ্চ উইনডো, পৃথক বাথরুম, 24 ঘণ্টা লাইট, পাখা ও জলের ব্যবস্থা, সাদা দেওয়ালের উপর বাহারি কারুকার্য । না, লাখ লাখ টাকা মূল্যের কোনও স্টুডিয়ো অ্যাপার্টমেন্টের কথা বলা হচ্ছে না । এটি হল মুম্বই সেন্ট্রাল প্রিজ়ন তথা আর্থার রোড জেলের বিশেষ সেল । ভারতে ফিরলে এই বিলাসবহুল সেল হবে জালিয়াতির মামলায় অভিযুক্ত নীরব মোদি ও বিজয় মালিয়ার নতুন ঠিকানা ।
মুম্বইয়ের সংশোধনাগারে নীরব মোদি ও বিজয় মালিয়াকে রাখার জন্য সম্পূর্ণ সুসজ্জিত এমনই স্টুডিয়ো অ্যাপার্টমেন্ট থুড়ি বিশেষ সেল তৈরি করা হয়েছে । গত বুধবার ব্রিটেনের আদালত চতুর্থবারের জন্য নীরব মোদির জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় । তারপরেই আর্থার রোড জেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা সেই স্পেশাল সেলটি আরও একবার পরিদর্শন করেছেন ।
নীরব মোদি পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের 14 হাজার কোটি টাকার জালিয়াতিতে অভিযুক্ত । চলতি বছরের মার্চে লন্ডনে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে । এখন সে লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ কারাগারে রয়েছে । তাকে ভারতে প্রত্যর্পণের জন্য ইতিমধ্যে একাধিকবার CBI-এর তরফে আবেদন করা হয়েছে । অন্যদিকে, ব্যাঙ্ক থেকে 9000 কোটি ঋণ নিয়ে তা শোধ না করার মামলা রয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া কিংফিশার এয়ারলাইন্সের মালিক বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে ।
সূত্রের খবর, ব্রিটেন থেকে নীরব মোদি ও বিজয় মালিয়াকে প্রত্যর্পণ করা হলে তাদের মুম্বই আর্থার রোডের এই সংশোধনাগারে 12 নম্বর ব্যারাকের 2 নম্বর সেলে রাখা হবে । সম্প্রতি সেলটি পরিদর্শন করেন দীপক পান্ডে । তিনি আর্থার রোড জেলের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক । দীপক পাণ্ডে বলেন, "সেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে পরিদর্শন করা হয় । সেল নম্বর 2 সম্পূর্ণ সুসজ্জিত ও নিরাপদ এবং এতে একটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের মতো সমস্ত সুব্যবস্থা আছে ।"
জেলের 12 নম্বর ব্যারাকটি সদ্য সংস্কার করা হয়েছে । সেখানে নতুন দু'টি ব্লক তৈরি হবে । তার কাজও শুরু হয়ে গেছে । এই ব্লকের সেলগুলি বিচারাধীন বন্দীদের জন্য । ব্যারাকের মাটির তলায় আরও দুটি ফ্লোর রয়েছে । তার মধ্যে প্রথম ফ্লোরে 2 নম্বর সেল । শীনা বোরা হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত পিটার মুখার্জিকে রাখা হয়েছে এই ব্যারাকেই গ্রাউন্ড ফ্লোরে । 26/11 হামলায় অভিযুক্ত আবু জিন্দালও এই ব্যারাকের প্রথম ফ্লোরের একটি নির্জন সেলে বন্দী । প্রতিটি সেলে মোট তিন জন করে বন্দী রাখা হয় । তবে সূত্রের খবর, 2 সেলটি তৈরি করা হয়েছে নীরব মোদি ও বিজয় মালিয়াকে রাখার জন্য । সেখানে তৃতীয় কোনও বন্দী থাকবে না । এ বিষয়ে এক জেল আধিকারিক বলেন, "প্রত্যেকটি সেলে 3 জন করে থাকলেও আমরা 2 নম্বর সেলে দু'জনকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।"
প্রত্যেকটি সেলে CCTV লাগানো রয়েছে । তবে তা শুধুমাত্র বন্দীদের উপর নজরদারির জন্য নয় । আদালতের নির্দেশ পেলে এই ক্যামেরা ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের জন্যও ব্যবহার করা যাবে ।