কলকাতা, 27 নভেম্বর: রাজ্য পুলিশে গড়ে উঠছে নয়া মনিটরিং সেল ৷ মাথায় থাকছেন বর্তমানে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার ৷ দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য পুলিশের মনিটরিং সেলের কাজ জানা, অভিজ্ঞ এবং আইটি জানা পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে এটি তৈরি হচ্ছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মনিটরিং সেলের নাম এখনও ঠিক হয়নি । এসটিএফ কিংবা সিআইডি নয় । বরং এই বিশেষ দল তৈরি হবে একেবারে পৃথক ধাঁচে । তৎকালীন কলকাতা পুলিশের নগরপাল গৌতমমোহন চক্রবর্তীর আমলে কলকাতা পুলিশের প্রথম এসটিএফের ডিসি হয়েছিলেন রাজীব কুমার ৷ পরবর্তীতে একাধিক দায়িত্ব সামলেছেন তিনি ৷ বর্তমানে রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে রয়েছেন তিনি ৷ সেই রাজীব কুমারের উপরই থাকবে মনিটারিং সেলের দায়িত্ব ।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্য ও কলকাতা পুলিশে এতগুলি শাখা বা গোয়েন্দা বিভাগ থাকা সত্ত্বেও কেন আচমকাই নতুন একটি সেল বানানোর প্রয়োজন হল ? এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের আইনশৃ্ঙ্খলার দায়িত্বে থাকা এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ইটিভি ভারতকে বলেন, "মূলত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার উপর বিশেষভাবে নজর দেওয়া এবং সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করাই একমাত্র লক্ষ্য আমাদের । এছাড়াও রাজ্য পুলিশের মধ্যে অপরাধ দমনে সমন্বয় সাধনই হল আমাদের লক্ষ্য । তার জন্য এই মনিটরিং সেল তৈরি করা হচ্ছে ৷"
নবান্নের সামনেই তৈরি হচ্ছে এই নতুন মনিটরিং সেলের বিল্ডিংটি । 2026 এর আগেই এই বিল্ডিং থেকে শুরু হবে বিশেষ নজরদারির কাজ । কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কাদের উপর এই নজরদারি ? ভবানী ভবন সূত্রে খবর, কোনও ব্যক্তি বা ব্যক্তি বিশেষের উপর নজরদারি নয় । বরং পুলিশের কাজের উপর এবং গোটা রাজ্যের একাধিক এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও তার উপর নজর রাখার কাজ চালানো হবে এখান থেকে ।
রাজ্য পুলিশের আওতাধীন যে কোনও জায়গায় কোনও প্রকারের আইনশৃঙ্খলার অবনতি, কিংবা কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটলে, সেখান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করতে এবং তা খতিয়ে দেখতে প্রচুর সময় লাগে । ফলে এবার গোটা রাজ্যের একাধিক থানার সিসিটিভি ফুটেজ এবং রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ সরাসরি চলে আসবে এই বিশেষ মনিটারিং সেলের কাছে । এতে কাজ করতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই কম সময়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করতে সক্ষম হবে রাজ্য পুলিশের এই নতুন সেল ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই বিল্ডিংয়ে থাকবে একটি বড় হল ঘর । সেখানে দেওয়ালে সারিবদ্ধভাবে ইনস্টল করা থাকবে বড় বড় মনিটর । তার মধ্যে এক একটি জেলার সিসিটিভি ফুটেজ আলাদা আলাদাভাবে চলবে । ফলে কোন এলাকায় কোন প্রকারের অপরাধ ঘটছে, কারা কারা অপরাধের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আছে, কিংবা আইনশৃঙ্খলার অবনতির ঘটনায় কোন কোন ব্যক্তি যুক্ত, তা একেবারে সরাসরি দেখা যাবে নবান্নের অদূরে তৈরি হওয়া ওই বিল্ডিংয়ে । ইনচার্জ থাকবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, "মূলত আগে হাওড়ার গ্রামীণ কিংবা মালদা বা সীমান্তবর্তী এলাকায় কোনও প্রকারের ঘটনা ঘটলে, তার সিসিটিভি ফুটেজ আসত সেই জেলার এসপি অফিসে বা কমিশনারের কাছে । তারপরে তা পাঠানো হত ভবানীভবনের পদস্থ আধিকারিকদের কাছে । অনেক সময় সিসিটিভি ফুটেজ বিকৃত করার মতো অভিযোগ ওঠে । এই সবই মূলত সময়সাপেক্ষ বিষয় । তবে এই ভাবে গোটা রাজ্যের থানা এবং রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজের উপর যদি একসঙ্গে নজরদারি করা যায়, সেক্ষেত্রে পুলিশের কাজ অনেকটা সুবিধা হবে । পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার উপরও বিশেষভাবে নজর রাখা হবে ।"