কলকাতা, 19 ফেব্রুয়ারি: কলকাতা হাইকোর্টে ট্রাম সংক্রান্ত মামলার শুনানির পর আজ ট্রাম সংক্রান্ত অ্যাডভাইসারি কমিটির বৈঠক বসেছিল । আগামী শুনানি 26 ফেব্রুয়ারি । আজকের বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ওইদিন আদালতে জমা দিতে হবে ।
মঙ্গলবার ছিল ট্রাম সংক্রান্ত মামলার শুনানি । বাদী পক্ষ অভিযোগ তোলে যে কালীঘাট, ভবানীপুর, জাজেস কোর্ট বা আলিপুর এবং খিদিরপুরের ট্রামলাইন বিটুমিনাইজেশন বা পিচ ঢেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । এই নিয়ে আদালত কড়া মনোভাব পোষণ করে জানতে চায়, কে বা কারা ট্রাম ট্র্যাক বিটুমিনাইজেশনের নির্দেশ দিয়েছে ? প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে যে আদালতের গঠিত অ্যাডভাইসারি কমিটির রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত পিচ ঢেলে শহরের কোনও ট্রামের ট্র্যাক বোঝানো যাবে না।
এছাড়াও ময়দান-খিদিরপুর রুটকে পুনরায় সচল করে তুলতে কী করে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা পিপিপি মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে সেই বিষয়টিও বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে কোর্টের পক্ষ থেকে । ফলে মঙ্গলবারের শুনানির পর কিছুটা হলেও শহরের ট্রামপ্রেমীরা আশায় বুক বেঁধেছেন । তবে আজকের কমিটির বৈঠকের যে নিট ফল শূন্য সেই কথাই জানালেন কমিটিতে থাকা ট্রামপ্রেমীদের প্রতিনিধিরা ।
ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডঃ দেবাশিস বলেন, ‘‘আজকের কমিটি বৈঠকে ট্রাফিক বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে ট্রামলাইন বিটুমিনাইজেশনের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন যে কে বা কারা ট্র্যাকে পিচ ফেলে বুঝিয়ে দিয়েছে সেই রিপোর্ট তাঁরা সরাসরি আদালতে দেবেন । অন্যদিকে কলকাতার পথে এই ধরনের কাজ পুরনিগমের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে । কিন্তু এক্ষেত্রে কলকাতা কর্পোরেশন কিছুই জানতে পারল না ৷ এই খরচই বা কে বহন করল ? যেখানে কেএমসি বলছে যে তাদের কাছে কোনও ওয়ার্ক অর্ডার নেই ।
ট্রামপ্রেমী সৌভিক মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘কলকাতার ট্রামকে যদি হেরিটেজ বা ঐতিহ্য বলে ঘোষণা করার কথা ভাবা হয়, তাহলে সেটা যথাযথ হবে না । কোনও একটি নির্দিষ্ট রুটকে হেরিটেজ রুট তকমা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে না ৷ বরং গোটা ট্রাম পরিবহণ এবং কলকাতার ট্রাম নেটওয়ার্ককে হেরিটেজ তকমা দিতে হবে । প্রতিবারের মতোই ট্রামকে বাঁচানো নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছে । তবে প্রতিবারের মতোই সেগুলিকে এড়িয়ে যাচ্ছে পরিবহণ দফতর । এখনও পর্যন্ত একটি প্রস্তাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করা বা তার বাস্তব রূপায়ণ দেখা গেল না ।’’
এই বিষয়ে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে । অন্যদিকে আজকের বৈঠকে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে এদিনের বৈঠক একেবারেই রুটিন বৈঠক ছিল ।