কলকাতা, 6 এপ্রিল: 2021 সালের মার্চ থেকে 2024 সালের মার্চ ৷ মাত্র তিন বছরেই সম্পর্কে ইতি সিপিএম-আইএসএফের। বর্তমান রাজ্য রাজনীতিতে 'হট কেক' ৷ কারণ রাজনীতির পাটিগণিতে নওশাদ সিদ্দিকীর আইএসএফ কত ভোট কাটবে ? সেটা একটা মোক্ষম প্রশ্ন৷ ৷ অন্যদিকে বামেদের সঙ্গে 'সমঝোতা'র বাইরে গিয়ে আদতে কার (তৃণমূল না বিজেপির) সুবিধা করে দিতে চাইছে তারা ? এখানে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির 'মিম'র প্রসঙ্গও উঠছে ৷ ফলে, বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে না গিয়ে নওশাদের 'স্বতন্ত্র দল' হিসেবে লড়ার যুক্তিতে আইএসএফের নিচু তলার কর্মীরা কি একমত ? সেই প্রশ্নও থাকছে ৷ এই সবকিছুরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করল ইটিভি ভারত ৷
ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার কথা সদর্পে ঘোষণা করেছিলেন আইএসএফের নওশাদ ৷ পরে জানা যায়, আইএসএফ তাঁকে সেখানে প্রার্থী করতে চায় না ৷ এই বিষয়ে আইএসএফের বক্তব্য, "দলের মুখ তথা চেয়ারম্যানকে একটি আসনে আমরা সীমাবদ্ধ রাখা যায় না" ৷ যদিও ঘরোয়া বৈঠকে আইএসএফ নেতাদের দাবি, "ডায়মন্ড হারবারে তাঁদের সংগঠন নেই ৷ সেটা জেনেও কেন বামেদের কথায় নওশাদকে দাঁড় করানো হবে ? এ কারণেই তো বামেদের কাছে তাঁরা ডায়মন্ড হারবার দাবি করেননি ৷ তবে, মুখ রক্ষার্থে মজনু লস্করকে সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে ৷" এদিকে শনিবারই মথুরাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিএম। পেশায় চিকিৎসক শরৎ চন্দ্র হালদারকে এখান থেকে প্রার্থী করা হয়েছে।
বাম-কংগ্রেস সমঝোতায় গেল না কেন আইএসএফ ?
নওশাদদের যুক্তি, "যাদবপুর-শ্রীরামপুর-মুর্শিদাবাদ, বারাসাত, বসিরহাটের মতো আসনে আইএসএফ সংগঠন শক্তিশালী থাকলেও, বামেরা আসন ছাড়েনি ৷" এদিকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি, "আইএসএফের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে ৷ আবার একাধিক বার আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলার জন্য ডাকা হয়েছে। কিন্তু তারা আসেনি ৷ প্রথমেই তারা অনেক আসনে প্রার্থী দেবে বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেছিল ৷ ওরা চাইছিল 8টি আসন অর্থাৎ 56 টি বিধানসভা কেন্দ্র ৷ দেড় হাজার বুথ ম্যানেজ করতে হবে ৷ আলোচনা হয় ৷ তবে তারা যখন বুঝতে পারে ব্যাপক আসন হবে না, তখন তারা আসেনি ৷"
বামেদের সঙ্গে জোট ভাঙার দায় তাদের উপরেই চাপিয়েছে আইএসএফ ৷ এ প্রসঙ্গে প্রবীণ নেতা বিমান বসু বলেন, "কী করে বামেদের দায়িত্ব হয় ? এমনও হয়েছে আলোচনার সময় চারটে । ওরা এসেছে পাঁচটায় ৷ এই জোটের ব্যাপারে আন্তরিকতা ছিল কি না বুঝতে পারছি না ৷ বাস্তব ভিত্তি করে চলতে চাই ৷ তাই আমাদের সমস্যা ৷"
তবে বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা না-হওয়ায় আইএসএফের বহু নিচুতলার কর্মী ক্ষুব্ধ ৷ এমনকী, বসিরহাট লোকসভায় আইএসএফ প্রার্থী মহম্মদ শহিদুল ইসলাম মোল্লা সরে দাঁড়ান ৷ তারপর ওই আসনে আক্তার আলী বিশ্বাসকে প্রার্থী করেছে আইএসএফ ৷ একইভাবে রাজ্যের সব সংখ্যালঘু এলাকায় যে আইএসএফ সমর্থক আছে, এমনটা নয় ৷