কলকাতা, 10 ফেব্রুয়ারি: 'সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল...'। আর এই বাংলার ফুটবলকে যাঁরা যুগ যুগ ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে একটি নাম দীপেন্দু বিশ্বাস । তাঁরই জীবনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে 'দীপু' বানাচ্ছেন পরিচালক শ্রী প্রীতম । দীপেন্দুর গ্রামের কোচের ভূমিকায় সোহম চক্রবর্তী । ছোট দীপুর ভূমিকায় 'ময়দান' খ্যাত অভিনেতা আমন মুন্সি । আর যুবাকালে দীপুর ভূমিকায় দীপেন্দু বিশ্বাস স্বয়ং ।
বাংলার ফুটবলের প্রথম সারিতেই যে তিনটি ক্লাবের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হয় সেগুলি হল মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল আর মহামেডান স্পোটিং । আর এই তিন দলের জার্সিতেই দাপটের সঙ্গে মাঠ কাঁপিয়েছেন দীপেন্দু বিশ্বাস । পাশাপাশি ভারতের জার্সি গায়ে তিনি বাংলা তথা দেশকেও বারেবারে সম্মানিত করেছেন । আর এই মুহূর্তে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবল সেক্রেটারি তিনি ।
দীপেন্দু বিশ্বাসের ফুটবল মাঠের ডায়েরির হিসেব রাখেন ফুটবলপ্রেমীরা । কিন্তু তাঁর সম্বন্ধে অজানা যা কিছু তা এবার সামনে আসতে চলেছে বড় পর্দার মাধ্যমে । পরিচালকের কথায়, " এই ছবিকে দীপেন্দু বিশ্বাসের বায়োপিক মনে করবেন না। ওঁর জীবনের দ্বারা অনুপ্রাণিত এই ছবি । দীপেন্দুর মতো বহু ক্রীড়াপিপাসু ছেলে আছে যাঁরা খেলার জন্য লড়াই করে । লড়াই করে জেতে । হয়ে ওঠে একজন দীপেন্দু । তাদেরও জীবনে দীপেন্দুর মতো ওঠাপড়া থাকে । থাকে প্রেমও । তেমনই কাহিনি এই ছবিতে দর্শক পাবেন । যার সঙ্গে অনেকে নিজেকেও খুঁজে পাবেন ।"
এই ছবিতে দীপেন্দুর কোচের ভূমিকায় রয়েছেন সোহম চক্রবর্তী । এহেন চরিত্রে এই প্রথম অভিনয় করতে দেখা যাবে সোহমকে । ছবির কাহিনিতে রয়েছে একটি পরিবার, সংগ্রাম, ভালোবাসা । ছোট দীপুর তার গ্রামের ফুটবল কোচের হাত ধরে অনেকটা লড়াইয়ের পর কলকাতার মাঠে খেলার স্বপ্ন নিয়ে চলা এক যাত্রাপথের কাহিনি হল 'দীপু'। সুতরাং ছবিতে কোচের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে তা বলাই বাহুল্য ।
সোহম জানিয়েছেন, "আমার এতদিনের অভিনয় জীবনে প্রথমবার এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছি, যেটা আমাকে ভাবাচ্ছে । নতুন কিছু স্বপ্ন দেখাচ্ছে । প্রতি মুহূর্তে মনের মধ্যে একটা রোমাঞ্চ অনুভব করছি । ছবিটির নাম 'দীপু'। গ্রামবাংলার খুব সাধারণ একটি ছেলের কলকাতার ক্লাবে ফুটবল খেলার অসাধারণ স্বপ্ন নিয়ে তৈরি এই গল্প । আমার চরিত্রটি সেই ফুটবল টিমে'র কোচের । যাঁর তত্বাবধানে এই সমস্ত কিছু ঘটতে চলেছে, তিনি আমাদের সবার পরিচিত, প্ৰিয় এবং অবশ্যই বাংলার গর্ব - দীপেন্দু বিশ্বাস । স্বনামধন্য ফুটবলার । তাঁর সহযোগিতা ছাড়া এই ছবিটির সম্পর্কে ভাবাটাও আমাদের কাছে অসুবিধার ছিল । এর জন্য তাঁকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।"
সোহম আরও বলেন, "ধন্যবাদ 'বর্ষা এন্টারটেইনমেন্ট'কে । বনসল জি যেভাবে উৎসাহ নিয়ে এই প্রজেক্টের কাজে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । তার জন্য আমাদের টিমের প্রত্যেকের তরফ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ।"
তাঁর কথায়, "গ্রামবাংলার ছেলেদের ইচ্ছে, তাঁদের স্বপ্নপূরণের খিদে, ভালোবাসা, আবেগ, উন্মাদনার ঝলক রয়েছে গল্পের পরতে পরতে । গ্রামবাংলার মাঠ-ঘাট-মাটির পথ, পুরুলিয়ার প্রাকৃতিক সুন্দর্য, চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো ল্যান্ডস্কেপ সবই রয়েছে । তবে এসবের বাইরেও যে ব্যাপারটা আমাকে বলতেই হবে, সেটা হচ্ছে এই ছবির মধ্যে চূড়ান্ত একটা মোটিভেশোনাল সাইড রয়েছে । শুধু আনন্দ নয়, দর্শক এবং মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া প্রজন্ম হল থেকে একটা উৎসাহ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে । মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আমরা এই ফেব্রুয়ারি'র মাঝেই ফ্লোরে যাব ।"
এই ছবিতে মুখ্য নারী চরিত্রে বর্ষা সেনগুপ্ত । তিনি একজন সঙ্গীত শিল্পীও বটে । কুমার শানুর সঙ্গে তাঁর গাওয়া 'কুলপি' ছবির 'উলুলু' গানটি সারা বাংলায় খুব জনপ্রিয় হয়েছে ইতিমধ্যেই। আর এই ছবির মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে বর্ষার । ছবিটি পরিচালনা করছেন টলিউডের
'বিক্রম সিংহ', 'খোকা 420', 'ইডিয়েট', 'খিলাড়ি' ছবির মিউজিক ডিরেক্টর শ্রী প্রীতম । পরিচালনার পাশাপাশি ছবিটির কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ এবং সংগীত পরিচালনার দায়িত্বেও তিনিই রয়েছেন ।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, তুলিকা বসু, মৌসুমী সাহা, বিশ্বনাথ বসু, সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়, তমাল রায় চৌধুরী, দেবরঞ্জন নাগ, অনুশ্রী ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, সৌরভ চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে । একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করছেন ব্রম্ভ বনসাল ।
উল্লেখ্য, দীপেন্দু বিশ্বাস নিজেও এই ছবিতে অভিনয় করছেন বলে জানা গিয়েছে। বর্ষা সেনগুপ্ত এবং শ্রী প্রীতম ছাড়াও মুম্বইয়ের বেশ কয়েকজন শিল্পীও এই ছবিতে গান গাইবেন বলে জানানো হয়েছে । ছবিটির শুটিং খুব শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানালেন পরিচালক ।