কলকাতা, 24 সেপ্টেম্বর:আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে রাজ্যের অনেক জায়গাতেই দুর্গাপুজো সে ভাবে হচ্ছে না ৷ হলেও আড়ম্বর কমানো হয়েছে ৷ দেবী প্রতিমারও বাজেট কমিয়ে কাটছাঁট করা হচ্ছে ৷ তাতেই কপাল পুড়েছে ঠাকুরের সাজ-শিল্পীদের ৷ ভিনরাজ্যের যা বরাত ছিল সেই মাল পাঠানো হলেও দুর্গাপুজোর আগে কলকাতার বাজার ধুঁকছে ।
পুজোর কয়েকদিন আগে যদি ক্রেতারা আসেন, যতটুকু মাল আছে ততটুকু বিক্রি হয় । বেশি চাহিদা থাকলে তখন যোগান দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে । কিন্তু, এ বার পরিস্থিতি একেবারে আলাদা ৷ বিক্রেতারা বলছেন, এই সময় বহুজন আসেন উপহার কিনতে । শোলার তৈরি দুর্গা-মুখের পাশাপাশি অনেক কিছু বিক্রি হয় । তবে এবার সে সব এখনও পর্যন্ত হচ্ছে না ।
প্রতিমার সাজ বিক্রি নেই, ধুঁকছে কলকাতার বাজার (ইটিভি ভারত) কুমোরটুলি থেকেই পড়শি রাজ্য বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিশগড়ে যায় দুর্গা-কালী থেকে একাধিক ঠাকুরের সাজ, অস্ত্র । সে সব এবার আগেই চলে গিয়েছে । তবে জেলা ও শহরের ক্রেতাদের জন্য যে প্রস্তুতি নেওয়ার ভাবনা হচ্ছিল, সেটাই ধাক্কা খেয়েছে বলে দাবি শিল্পীদের । কুমোরটুলি সাজের দোকানগুলি মূলত আট বাংলা সাজ, আটের সাজ, গোল্ডেন সাজ, জরির সাজের ব্যবসা করে । সেখানে দুর্গার গয়না থেকে শুরু করে কালী সাজ, অস্ত্র থাকে । ভিন রাজ্যে সাজ, অস্ত্র, চুল, কলকা, ঝালট, কদম ফুল ও চাঁদমালা নিয়ে প্রচুর কাজের বরাত ছিল । অন্য বছরগুলি এই সময় এই সব কিনতে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ে । আর এ বছর মাছি তাড়ানোর অবস্থা ৷
প্রতিমার সাজ তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পী (ইটিভি ভারত) কুমোরটুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিন রাজ্যে 13-15 কোটি টাকার ব্যবসা হয় । কলকাতায় হয় 4-5 কোটি টাকা । কলকাতার বাজারে সাজশিল্পের দোকান রয়েছে প্রায় 26-27টি । শিল্পী রঞ্জিত সরকার জানাচ্ছেন, ভিন রাজ্যে মাল গেলেও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরজি কর-কাণ্ডের জেরে পুজোর মুখে বিক্রিবাটা একদম নেই । জানি না কবে বাজার উঠবে । তবে আচমকা যদি ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে মাল দেওয়া যাবে না ।
শিল্পী কমল পালের কথায়, "খুচরো ব্যবসায় একদম মন্দা । মানুষ এখনও উৎসবে ফিরতে পারছে না । সেই প্রভাব পড়ছে । কুমোরটুলি যে ভিড় দেখছেন তারা সব ছবি তুলে আসা লোকজন । ক্রেতা সেই অর্থে নেই । এখন ছোট দুর্গার মুখ, সোলার দুর্গা, টোপর, কালীর মুখ, চালচিত্র, চাঁদ মালা এসব সারা দিকে হাতে গুণে বিক্রি । কয়েকদিন এমন হয়েছে যে বউনি হয়নি ৷