কলকাতা: ডায়াবেটিস একটি স্বাস্থ্য সমস্যা যা আজকাল অনেক মানুষকে বিরক্ত করে । একবার ডায়াবেটিস হলে সারাজীবন ওষুধ খেতে হয় । তা না হলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়বে এবং কিডনি ও হৃদরোগের মতো নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা । ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন- এর রিপোর্ট অনুসারে, ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন নির্দিষ্ট ধরণের ব্যায়াম করেও তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন । জেনে নিন, কী কী ব্যায়াম করলে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ?
সাঁতার কাটা: সাঁতার একটি ভালো কার্ডিও ব্যায়াম । এটি ক্যালোরি পোড়াতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে । সাঁতার পেশীগুলিকে আরও শক্ত করে তোলে । এটি শরীরকে আরও দক্ষতার সঙ্গে ইনসুলিন ব্যবহার করে । সাঁতার কাটার সময় পেশী শক্তির জন্য গ্লুকোজ ব্যবহার করা হয় । বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাবে । তাই সুগারের ব্যক্তিদের সাঁতার কাটার পরামর্শ দেওয়া হয় ।
সাইকেল চালানো: সাইকেল চালানোর সময় আমাদের পেশী অনেক কাজ করে । এই পেশীগুলির নড়াচড়ার জন্য শক্তি প্রয়োজন । এই শক্তি পেতে আমাদের শরীর রক্তে গ্লুকোজ ব্যবহার করে । এতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় । বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন ।
'জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম' (Journal of Clinical Endocrinology and Metabolism)-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে জানা যায় সাইকেল চালানো টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে । ব্রাজিলের ইউনিভার্সিডেড ফেডারেল ডো রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল (ইউএফআরজিএস) এর ড. ড্যানিয়েলা অ্যাম্পিয়ার এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ।
হাঁটা: ডায়াবেটিস রোগীরা সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি করে সুস্থ থাকতে পারেন । বিশেষজ্ঞরা জানান, সকাল-সন্ধ্যা 30 মিনিট হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় । হাঁটা যেহেতু একটি বিনামূল্যের ব্যায়াম, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয় ।
জগিং: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা জগিংয়ের কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে । জগিং করার আগে আপনাকে অবশ্যই একজন ব্যক্তিগত ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে ।
যোগব্যায়াম: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যোগব্যায়াম করতে পারেন, গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক থাকবে এবং মানসিক চাপ কমবে । যোগব্যায়াম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে । এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য পুষ্টিবিদ-বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত মতামত ও প্রচলিত ধারণার উপর ভিত্তি করে লেখা ৷ শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)