কলকাতা, 12 অগস্ট: আরজি কর হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এবার পদত্যাগ করলেন অধ্যক্ষ চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ ৷ শুধু অধ্যক্ষ পদ ছাড়লেন তা নয় ৷ সরকারি চিকিৎসক হিসেবেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি ৷ মহিলা ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গাফিলতির দায় নিয়েই এই পদত্যাগ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ ৷ এদিনই সোদপুরে মৃতার বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ভবনের তরফে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল ৷ যদিও, সেনিয়ে কোনও নোটিফিকেশন জারি হয়নি ৷ তবে, চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁর কাছেও এমন কোনও খবর আসেনি ৷ তিনি জানিয়েছেন, "এর আগেও আমার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ উঠেছে এবং সেক্ষেত্রে আমি পরবর্তী সময়ে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বেরিয়ে এসেছিলাম ৷ কিন্তু, এখানে রাজনীতি করা হচ্ছে ৷ একজন তরুণ ডাক্তারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ৷ তাঁকে ধর্ষণ বা খুন করা হয়েছে কি না, তা আমি বলতে পারব না ৷ সেটা পুলিশ বলবে ৷ পুরোটাই তদন্তসাপেক্ষ ৷ কিন্তু, এই ঘটনার জন্য আমায় দায়ী করা হচ্ছে ৷ আমার বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় নানান কটূক্তি করা হচ্ছে ৷ এটা আমি মানতে পারব না ৷"
এরপরেই অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ বলেন, "সংবাদ মাধ্যম এবং অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে বলা হচ্ছে, কেন সন্দীপ ঘোষ এখনও আরজি করের অধ্যক্ষ আছেন ? আমি এই অপমান মেনে নিতে পারব না ৷ তাই নৈতিকতার দায়িত্ব থেকে আমি আজকে পদত্যাগ করলাম ৷" পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাটিকে লঘু করে দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল ৷ যা এদিন সরাসরি অস্বীকার করলেন সন্দীপ ঘোষ ৷ তিনি দাবি করেছেন, ঘটনাটি যখন চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধান তাঁকে ফোনে জানান, তিনি সরাসরি ঘটনাস্থলে যান এবং হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিককে ফোন করেন ৷ পাশাপাশি, কয়েকঘণ্টার মধ্যে তিনি মেজিস্ট্রেট স্তরে তদন্ত সম্পন্ন করান ৷
উল্লেখ্য, সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে বদলি করা হতে পারে, এমন কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল ৷ যদিও, এ নিয়ে স্বাস্থ্য ভবন থেকে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি ৷ সেই খবর পেয়েই কি আগাম ইস্তফা দিলেন সন্দীপ ঘোষ ? যে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এমন কোনও খবর তিনি জানেন না ৷ উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনায় ইতিমধ্যে হাসপাতালের উপাধ্যক্ষকে বদলি করা হয়েছে ৷ বদলি হয়েছে, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসিপি-কে ৷ এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের সুনিশ্চিত নিরাপত্তার পাশাপাশি, ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করা হয়েছে ডাক্তারি পড়ুয়াদের তরফে ৷
যতক্ষণ না বিচার বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের আন্দোলন এবং অবস্থান বিক্ষোভ চলবে ৷ উল্লেখ্য, আজ থেকে পুরোপুরি পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তারি পড়ুয়ারা ৷