শিলিগুড়ি, 25 জুলাই: বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্তর মন্তব্যে দুই মেরুতে রাজ্যের শাসকদল ও প্রাক্তন শাসকদলের দুই নেতা ৷ উন্নয়নের জন্য উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে বিঁধেছেন তৃণমূল বিধায়ক গৌতম দেব ৷ তবে বিজেপি রাজ্য সভাপতির মন্তব্যকে ঘুরিয়ে সমর্থন করলেন শিলিগুড়ির সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য ৷
সুকান্ত ইস্যুতে দুই মেরুতে তৃণমূল-সিপিআইএম (ইটিভি ভারত) সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ৷ ওই বৈঠকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জেলার একাধিক বিষয় তুলে ধরেন ৷ বালুরঘাট লোকসভা এলাকায় চিকিৎসা, শিক্ষা, যাতায়াত ব্যবস্থা-সহ একাধিক বিষয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যাপারে আর্জি জানান তিনি । পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়ন মন্ত্রকে উত্তরবঙ্গের অংশকে অন্তর্ভুক্তির দাবিও জানান ৷ বৈঠকের পর নিজেই ভিডিয়ো বার্তায় সেই কথা জানান বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর ওই বক্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে ৷
সুকান্ত মজুমদারকে একহাত নিয়েছেন তাঁর দলেরই বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ৷ কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার যা বলেছেন, তা আসলে সম্পূর্ণ মনগড়া ৷ 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে দল ভালো ফল না-করায়, 2026 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের মন্তব্য করে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছেন তিনি ।’’
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘যেহেতু বিজেপি এখানে ভোট পায়নি সেজন্য আইটি, শিক্ষা কোনও খাতেই নতুন কোনও কেন্দ্রীয় প্রকল্প নেই ৷ একজন সাংসদ বলছেন, তিন বছর আগের প্রভিশনারি বাজেটই চলবে । তিনি উত্তরবঙ্গ থেকে মন্ত্রী হয়েছেন, উত্তরবঙ্গকে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি । এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে তাঁরই তো মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ ৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে প্রশ্রয় দেওয়া কেন ? আলাদা রাজ্য কেন ? উত্তরবঙ্গের বিশেষ জায়গাগুলোকে অর্থ দেওয়া উচিত ।’’
অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একজন উত্তরবঙ্গবাসী এবং প্রাক্তন মেয়র হিসেবে আমি চাই উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়ন হওয়া উচিত ৷ আমি মনে করি যে, উত্তরবঙ্গের একটা বিরাট বঞ্চনা আছে ৷ উত্তরবঙ্গের যেরকম উন্নয়ন হওয়া উচিত ছিল সেই উন্নয়নটা কিন্তু হচ্ছে না ৷ উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য যদি কেন্দ্রীয় সরকার থেকে অতিরিক্ত আর্থিক অনুদান পাওয়া যায়, তাহলে কি আমরা কেউ না করব ? এটার জন্য উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে কি না সেটা তো পরের কথা ৷ তবে আর্থিক অনুদানের বিষয়টি উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত বাড়ানো উচিত বলে মনে হয় ।’’