শান্তিপুর, 3 ডিসেম্বর: কথা না শুনলে দ্বিতীয় অভয়া কাণ্ড ঘটিয়ে দেব ! এই ভাষাতেই মহিলা চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সরকারি হাসপাতালের সুপারের বিরুদ্ধে। চরম আতঙ্কে অবশেষে স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা চিকিৎসক। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সুপার।
ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের। ওই মহিলা চিকিৎসকের নাম সুকন্যা রায়। তিন মাস আগে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে কাজে যোগদান করেন। তাঁর অভিযোগ, কাজে যোগদানের পর থেক হাসপাতাল সুপার তথা চিকিৎসক তারক বর্মন তাঁর উপর বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।
চিকিৎসকের দাবি, তিনি প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টের কাজ করলেও তাঁকে দিয়ে এমার্জেন্সিতে ডিউটি করানো হত। পাশাপাশি নাইট ডিউটি করতেও চাপ দেওয়া হত। প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকে দ্বিতীয় অভয়াকাণ্ডের শিকার হতে হবে বলে নাকি হুমকিও দিতেন হাসপাতালের সুপার। এরপরই রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই মহিলা চিকিৎসক। অবশেষে তিনি নিরুপায় হয়ে স্বাস্থ্য দফতর এবং থানায় দ্বারস্থ হন। শান্তিপুর থানায় তারক বর্মনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। তিনি চাইছেন অবিলম্বে তাঁকে যেন অন্যত্র স্থানান্তরিত করে স্বাস্থ্য দফতর।
মহিলা চিকিৎসকের তোলা অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন শান্তিপুর হাসপাতাল সুপার তারক বর্মন। তিনি জানান, ওই মহিলা চিকিৎসক যে যে অভিযোগ তুলেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পাশাপাশি তিনি এও জানান, এ বিষয়ে যা বলার তা জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তাই বলবেন। অন্যদিকে, মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য অধিকারীক জ্যোতিষ চন্দ্র দাস।
তিনি বলেন, "আমি ওই মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ হাতে পেয়েছি ৷ ইতিমধ্যেই তা জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়েও দিয়েছি। তবে ওই মহিলা চিকিৎসক নিজেও মানসিক রোগের ওষুধ খান। আমি জানিয়েছি, ওই চিকিৎসককে স্বাস্থ্য দফতর অন্যত্র স্থানান্তরিত করলে আমার কোনও আপত্তি নেই।"
এ বিষয়ে বিজেপি নেতা সোমনাথ কর বলেন, "আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব যাতে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এই প্রথম নয়, এই থ্রেট কালচার দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে। যারা চিকিৎসকদের উপরে বসে আছেন তারা রীতিমত জুনিয়রদের এই ভাবেই থ্রেট করেন।"