কলকাতা, 10 ফেব্রুয়ারি: শঙ্করের 'আমাজন অভিযান' তো সকলের জানা। ঘন জঙ্গলে একের পর এক রহস্যময় পথ ধরেই এগিয়ে যাওয়া তাঁর। এক যুদ্ধ জয়ের গল্প 'চাঁদের পাহাড়'। তবে এবার জঙ্গল নয়, বরফের দেশের পাড়ি দিয়ে একের পর এক শৃঙ্গজয়ের গল্প প্রকাশ পেল বই আকারে। প্রথম এভারেস্টজয়ী বাঙালি দেবাশিস বিশ্বাসের লেখা বইয়ের নাম 'এভারেস্ট আরোহণ এক স্বপ্ন পূরণ'।
2009 সালের এপ্রিল মাসের প্রথমদিন এভারেস্টের জন্যে রওনা দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের দেবাশিস বিশ্বাস। তাঁর কথায়, "এপ্রিল ফুলের দিন বেরিয়েছিলাম। তাই বহু মানুষ ভেবেছিলেন আমি মজা করছি। পুরোটা যেতে পারব, এটা আমিও ভাবিনি। যতটুকু পারব ততটাই যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।" তিনি জানিয়েছেন, পাহাড়ের কাছে যাতে হেরে না যান, তাই পেশা সামলিয়ে নিজেকে তৈরিও করেছিলেন।
বাড়িতে স্ত্রীকে কথা দিয়েছিলেন এভারেস্ট জয় করতে না-পারলে আর কখনও পাহাড়ে যাবেন না তিনি। দেবাশিস বাবু বাড়ি থেকে বেরনোর পর থেকেই একাধিক চিন্তা নিয়ে দিন কাটত তাঁর স্ত্রী মুক্তি বিশ্বাসের। তিনি জানান, "আমি যখন দেখি ভিডিয়ো গুলো, ভাবি কেন যায়? আগে অনেক চেষ্টা করতাম আটকানোর। এখন ছেড়ে দিয়েছি। ওটা ওনার নেশা, তাই আটকে রাখা অসম্ভব। আমরা খালি দুর্গা দুর্গা বলে ওনাকে বিদায় দিই।" দেবাশিস বিশ্বাসের ইচ্ছা শক্তির টানে 2010 সালের 17 মে পূরণ হয় স্বপ্ন। প্রথম বাঙালি জয় করলেন এভারেস্ট। সুস্থভাবে ঘরের ছেলে ফিরেও আসেন ঘরে ৷
সেই থেকে এখনও থামেনি তাঁর পর্বত আরোহণের যাত্রা। 52 বছরের জীবনের মতো 36টা পর্বত শৃঙ্গ জয় করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি আয়কর বিভাগের জয়েন্ট কমিশনার। কিছু মাসের চাকরির সূত্রে তাঁর ঠিকানা দিল্লি। কিন্তু সেখানেই বসেই তাঁর হবে পরবর্তী শৃঙ্গ জয়ের পরিকল্পনা। কিন্তু এর মধ্যেও নতুন পর্বত আরোহীদের পরামর্শ দেন তিনি। জানান, এই খেলায় কারও কাছে আমায় প্রমাণ করা নেই। হেরে যাওয়ার ভয় নেই। তাই যতটা সম্ভব সময় নিয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। এই সব কথাই রয়েছে তাঁর লেখা বইয়ে, যা ইংরাজি ভাষাতেও প্রকাশিত হবে।