কলকাতা, 26 জানুয়ারি: শহর কলকাতায় বাড়ছে কুকুরের সংখ্যা ! অভিযোগ, এই অবস্থাতেও শামুকের গতিতে এগোচ্ছে কলকাতা পুরনিগমের পথ কুকুরদের টিকাকারণ ও নির্বীজকরণ প্রকল্প ৷ নাগরিক পরিষেবার মতোই কেএমসি-র স্বাস্থ্য বিভাগের গুরুদায়িত্ব শহরের পথ কুকুরদের সুস্থ রাখা, তাদের নিয়মিত টিকাকরণ ও প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করা ৷
সূত্রে খবর, এই কাজের জন্য 2022 সালে রাজ্য সরকারের থেকে 80 লাখ টাকারও বেশি সাহায্য পেয়েছিল কলকাতা পুরনিগম ৷ অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত সেই কাজের মাত্র 20 শতাংশ শেষ হয়েছে ৷ প্রকল্প শুরুর সময়ের আনুমানিক হিসেব অনুযায়ী শহর কলকাতায় সারমেয়র সংখ্যা ছিল কমবেশি 85 হাজার। বিগত দু'বছরে ফের কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে শহরে ৷
ঢাকাঢোল পিটিয়ে এই প্রকল্প শুরু হয় 2022 সালে ৷ কিন্তু দ্রুত এই কাজ না-এগোনোর ক্ষেত্রে দু’টি অন্তরায় প্রকাশ্যে এসেছে ৷ একটি হল বরো ভিত্তিক এই পথকুকুরদের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা নেই কর্তৃপক্ষের ৷ দ্বিতীয়ত, পর্যাপ্ত লোকবল ও পরিকাঠামোর অভাব ৷
লক্ষ্যপূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায়, ইদানিং বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ ফলে ফের একবার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে অভিযান শুরু হয়েছে ৷ টালিগঞ্জ, যাদবপুর, বেহালা, এই সমস্ত এলাকায় চলছে পথকুকুরদের নির্বীজকরণের প্রক্রিয়া ৷ যদিও অভিযোগ উঠেছে, তিন বছরে নামমাত্র কাজ হয়েছে ৷
অন্যদিকে, বিভিন্ন এলাকায় কুকুর না-পেয়ে ফোন আসছে কলকাতা পুরনিগমের কাছে ৷ খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, সেই কুকুরকে পৌর কর্তৃপক্ষ তুলে এনেছে ৷ ধাপা ডগ পাউন্টে এই কাজ মূলত করা হচ্ছে ৷ একদিকে যেমন এই কাজ সঠিক ভাবে না-হওয়াতে কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে, তেমনই তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন এলাকার কুকুর তুলে আনায়, ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সারমেয় প্রামীদের মধ্যেও ৷
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, "2022 সালে রাজ্য সরকার অর্থ দিয়েছিল ৷ বলা হয়েছিল সেই সময় শহরে 85 হাজার পথ কুকুরের 60 শতাংশকে নির্বীজকরণ ও টিকাকরণের আওতায় আনতে হবে ৷ কিন্তু, লোকবলের অভাব ও তথ্য না-থাকায় এই কাজ গতি পাচ্ছে না ৷ দরকার বরো ভিত্তিক উদ্যোগের ৷ "
কলকাতা পুরনিগমের ধাপা ডগ পাউন্ডে 250টি কুকুর ও এন্টালি ডগ পাউন্ডে 50টি কুকুর রাখার জায়গা আছে ৷ সেই পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে হবে ৷ তাহলে এই কাজ আরও দ্রুততার সঙ্গে এগোবে বলে জানান ওই আধিকারিক ৷
সারমেয় প্রেমী অরুণাভ রায়ের কথায়, "পথ কুকুরদের টিকাকরণ ও নির্বীজকরণ দুটোই সঠিক সময়ে করা দরকার ৷ এই কাজ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ঠিক করে করলে, কুকুরদের থেকে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক কমে ৷ অন্যদিকে, কুকুরদের সংখ্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ৷ ফলে কুকুর সাধারণ মানুষের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। এই কাজ সঠিক ভাবে না-হওয়াতেই এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷ আমি আবেদন করব যাতে সঠিকভাবে এই কাজ হয় ৷"