কলকাতা, 23 নভেম্বর: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস । রাজভবন সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে । তাতে, যেকোনোদিন মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে আসতে অনুরোধ করেছেন তিনি ।
প্রাক্তন আইএএস অফিসার সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপাল হিসেবে বঙ্গে দু'বছর কাটিয়ে ফেললেন । আজ তৃতীয় বছরে পদার্পণ করলেন তিনি । এই দুই বছরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক 'নরমে গরমে' কেটেছে । আগামী সময়টা সম্ভবত 'নরমেই' কাটাতে চাইছেন সিভি আনন্দ বোস । সেই কারণেই হয়তো তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন তিনি ।
2023 সালের 2 নভেম্বর রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল (রাজভবন সূত্রে পাওয়া ছবি) এই চিঠি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহলের একাংশ । কারণ, প্রথম বছরে বাংলায় হাতেখড়ি পর্যন্ত ভালো সম্পর্ক কাটলেও, পরবর্তীতে রাজ্যের দুই শীর্ষ পদাধিকারীর মধ্যে সম্পর্কে 'চিড়' ধরে । বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগ, বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিল রাজভবনে আটকে থাকা, নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথ আটকে থাকা ইত্যাদি ইস্যুতে সেই 'চিড়' বাড়তে বাড়তে কার্যত ফাটলে পরিণত হয়েছে ।
গত বছরের মাঝামাঝিতে রাজভবনের এক মহিলা কর্মী রাজ্যপালের বিরূদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন । যা নিয়ে সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নিজের মন্ত্রিসভার মহিলা সদস্যদের রাজভবনমুখী না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি । নিজেও যাবেন না বলে জানান । তারপরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য রাজভবনেও যানওনি । তবে, দুই তরফ থেকে চিঠি চালাচালি হয়েছে বহুবার । কিন্ত, শুক্রবার রাতে রাজভবন থেকে যে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাড়া দেন কি না, সেটাই দেখার ।
রাজ্যপাল ঘনিষ্ঠ এক পদাধিকারী জানিয়েছেন, চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, "শপথ নেওয়ার সময় আপনার সঙ্গে মধুর সম্পর্ক ছিল । গত দু'বছর আপনাদের কাছে যে সহযোগিতা পেয়েছি তা অভাবনীয় । আগামীতেও তা বজায় রাখতে চাই । যেটুকু মতভেদ রয়েছে তা ভুলে আপনি কাল হোক বা পরশু বা যেকোনোদিন রাজভবনে আসুন । আমি আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি । বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে চাই ।"
অভিজ্ঞ মহলের একাংশের মতে, এখন রাজ্যপালের এই 'মধুরচিঠি'তে দু’পক্ষের মধ্যে 'অম্লত্ব' কাটলে রাজ্যের পক্ষেই ভালো । বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের জন্য ভালো হবে । উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জটিলতা রয়েছে, তা দ্রুত মিটলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় সচলাবস্থা ফিরবে ।