কলকাতা, 9 মার্চ: সন্দেশখালির অশান্তি নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি এখনও তোলপাড় ৷ গ্রামবাসীরা বারবার পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে। শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি অভিযান এবং তারপর ক্রমাগত গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মধ্যে সন্দেশখালি থানার ওসিকে বদলি করা হল ৷ ইডি অভিযানের 56 দিনের মাথায় শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তার পর থেকেই কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে সন্দেশখালির পরিস্থিতি। তবে এর মাঝে আচমকা পুলিশের থানা স্তরে রদবদল। বদল করা হল সন্দেশখালির ওসিকে। নতুন দায়িত্বে এসেছেন ওসি গোপাল সরকার।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় ৷ সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সন্দেশখালি থানার ওসি বিশ্বজিৎ সাঁপুইকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বসিরহাট থানায়। সন্দেশখালি থানার নতুন ওসি করা হয়েছে গোপাল সরকারকে। তিনি বসিরহাট পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের ওসি পদে ছিলেন। এছাড়াও বাদুরিয়া থানায় ওসি প্রশান্ত মণ্ডলকে হেমনগর কোস্টাল থানায় পাঠানো হয়েছে। বসিরহাট পুলিশ জেলায় আইনশঙ্খলার দায়িত্বে থাকা চার সাব ইন্সপেক্টরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ভবানী ভবন সূত্রের খবর। আচমকাই সন্দেশখালি ঘটনার পর বসিরহাট পুলিশ জেলার অন্তর্গত বেশ কয়েকটি থানার অফিসার ইনচার্জ এবং ইন্সপেক্টর সার্ভিস ইন্সপেক্টর-এর রদ বদলে উঠেছে প্রশ্ন।
স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করছেন যে, পুলিশের বিরুদ্ধে এতদিনের অভিযোগ আগে কেন নিষ্পত্তি হল না? লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন চিহ্নিত করে পুলিশ আধিকারিকদের সরানো হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ যদিও ভবানী ভবন সূত্রে খবর, এটি সম্পূর্ণ রুটিন বদলি। অভিযোগ, গত 5 জানুয়ারি, সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার আকুঞ্জিপাড়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে হানা দেয় ইডি। সেদিন বারবার ইডি শাহজাহানের দু'টি ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করে ৷ বেশ কিছুক্ষণ পর একটি নম্বরে ফোন ধরেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা। ইডি'র কথা শুনে ফোন কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরে ইডি'র তদন্তকারীরা অভিযোগ করেন, মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়। ইডি আধিকারিকদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকী গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
ওইদিন ইডি আধিকারিকদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপরেও হামলা চালানো হয় ৷ তাদের গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই ইডি আধিকারিকরা অভিযোগ করেন, যখন এই হামলা চালানো হয়, সেই সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। এরপর দেখা গিয়েছে, শেখ শাহজাহান এবং তার শাগরেদদের পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধেও জনরোষ তৈরি হয় ৷ শেষপর্যন্ত বদলি করা হল সন্দেশখালি থানার ওসিকে ৷
আরও পড়ুন:
- রাজ্যের সংশোধনাগারের অবস্থা কতটা খারাপ, সরজমিনে দেখতে যেতে চান বিচারপতি
- বিচারের আশায় শাহজাহান, গ্রেফতারির পর প্রথমবার মুখ খুললেন সন্দেশখালির ‘ত্রাস’