কলকাতা, 21 ডিসেম্বর: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে হেফাজতে নিতে ব্যাপক টানাপোড়েনের মুখে পড়তে হয়েছিল সিবিআই-কে ৷ তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার পরও সেই টানাপোড়েন মেটেনি ৷ যার জেরে সিবিআই বেশিদিন তাঁকে হেফাজতে রাখতে পারল না ৷
শনিবার আদালতে কালীঘাটের কাকুকে পেশ করে সিবিআই ৷ সেখানে তারা জানিয়েছে, তাদের হেফাজতে চারদিন ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ৷ সেই সময় কার্যত খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি ৷ এমনকী ওষুধও খাচ্ছিলেন না ৷ সিবিআইয়ের আশঙ্কা, এমনভাবে চলতে থাকলে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়বেন ৷ সেই কারণে শনিবার আদালতে পেশ করেও কালীঘাটের কাকুকে হেফাজতে নিল না সিবিআই ৷
ফলে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে 14 দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠালো আদালত ৷ যদিও কালীঘাটের কাকুকে এখনও সিবিআইয়ের হেফাজতে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে ৷ প্রয়োজনে পরে তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নিতে পারে বলেও জানা গিয়েছে ৷
তবে সিবিআইয়ের তরফ থেকে দাবি করা হয়, তারা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চান । ইতিমধ্যেই সিবিআই-এর বিশেষ আদালতের তরফে সেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে ।
প্রথমে রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটর গোয়েন্দারা গ্রেফতার করে । পরে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয় । জেলে থাকাকালীন ফের নতুন করে সিবিআইয়ের তরফ থেকে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে নিজেদের হেফাজতের নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয় ।
সেই সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র । তবে সেই সময়ে আদালতের তরফ থেকে সিবিআইকে বলা হয় যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যদি চায় সেক্ষেত্রে জেল থেকেই কালীঘাটের কাকুকে গ্রেফতার করতে পারে তারা । তার পর কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ তার পরই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে থাকাকালীন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে শোন অ্যারেস্ট করে সিবিআই । পরে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে রাতে তাকে সেখান থেকে বের করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয় সিবিআই । চারদিন হেফাজতে থাকাকালীন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র কোনোভাবেই তদন্তকারীদের সাহায্য করেননি ।
আজ সিবিআইএ তরফ থেকে আদালতে দাবি করা হয়, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র তাদের ব্ল্যাকমেলিং করেছেন । তদন্তে কোনোভাবেই সাহায্য করছেন না । উল্টে তিনি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন । এমনকি ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করেছেন । এই অবস্থায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে তাকে আর নতুন করে হেফাজতে চাইনি সিবিআই ।
রাজ্যে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম উঠে আসে । তিনি কালীঘাটের কাকু বলে পরিচিত । তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা অভিযোগ তোলে যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার কোটি কোটি টাকা তিনি রাজ্যের একাধিক এজেন্ট মারফত সংগ্রহ করে সেইগুলি একাধিক প্রভাবশালীদের পাঠিয়েছিলেন । সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র-কে প্রথমে গ্রেফতার করে ইডি । পরে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে নতুন করে ওই একই মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই ।