কলকাতা, 24 অক্টোবর: স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেলবন্দি জীবনের নানা কর্মকাণ্ড জানতে উৎসাহী মানুষজন এখন ভিড় জমান আলিপুর জেল মিউজিয়ামে (যা একসময় আলিপুর সেন্ট্রাল জেল ছিল) । এই মিউজিয়ামের প্রতিটি ইঁট-কাঠ নানা ইতিহাসের সাক্ষী । আর সেই না-জানা বহু বিষয় জানতে খুব কাছ থেকে পরখ করতে উৎসুক জনতার ভিড় উপচে পড়ে এই মিউজিয়ামে ।
তবে এই ইতিহাসের সাক্ষী এবার হতে পারবেন দৃষ্টিহীন মানুষজন । তারাও ঘুরে দেখে সেই রোমাঞ্চকর অনুভূতি গ্রহণ করতে পারবেন এবার থেকে । কারণ, আজ থেকে আলিপুর জেল মিউজিয়াম হল দৃষ্টিহীন মানুষ-বান্ধব । বসল ব্রেইল ম্যাপ । গেটের মুখ থেকে বিভিন্ন দিকে যাওয়া, কোন দিকে কোন বিপ্লবী কারারুদ্ধ জীবন কাটিয়েছেন দীর্ঘ বছর, ফাঁসির মঞ্চ থেকে বন্দীদের কাজের জায়গা সবটাই তাঁরা ব্রেইল পদ্ধতিতে পরখ করবেন ।
আলিপুর জেল মিউজিয়ামে ব্রেইল ম্যাপিংয়ের উদ্বোধনে ফিরহাদ হাকিম৷ (নিজস্ব চিত্র) একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় আলিপুর মিউজিয়ামে এই ব্রেইল পদ্ধতি লাগানো হয়েছে । বুধবার এই ম্যাপ উদ্বোধন করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । ছিলেন মিউজিয়ামের ডিরেক্টর জয়ন্ত সেনগুপ্ত । মিউজিয়ামের ব্রেইল ম্যাপ, চলাচলের পথ-সহ বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য হুইল চেয়ার ব্যবস্থা থাকছে । এর ফলে আলিপুর জেলের যে ইতিহাস সেটা দৃষ্টিহীন থেকে শুরু করে বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষ যাতে জানতে পারেন ও সমৃদ্ধ হতে পারেন ।
আলিপুর জেল মিউজিয়ামে অনলাইন বুকিং ব্যবস্থা (নিজস্ব চিত্র) মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় আমরা আমাদের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করে রাখতে পেরেছি । আলিপুর জেল একটি ইতিহাস সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান, যাকে আমরা সংগ্রহশালার রূপ দিয়েছি । যাঁরা দৃষ্টিহীন অথবা সাধারণ তাঁদের জন্য অনলাইন টিকিট পরিষেবা চালু হল ।’’
আলিপুর জেল মিউজিয়ামে মেয়র ফিরহাদ হাকিম (নিজস্ব চিত্র) তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের যাত্রী সাথী অ্যাপ থেকেই এই টিকিট তাঁরা কাটতে পারবেন । ব্রেইল পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে সাধারণ মানুষ নয় দৃষ্টিহীন দাও এই আলিপুর জেল মিউজিয়ামের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও অনুভূতি গ্রহণ করতে পারবেন । এমনকি তারা তার আগামী প্রজন্ম কেউ সেই ইতিহাসের খোঁজ দিয়ে যেতে পারবেন ।’’