মালদা, 24 মে: পেটের দায়ে ঘর ছেড়ে হরিয়ানায় পাড়ি দিয়েছিলেন চাঁচলের দরিয়াপুর এলাকার সুমি খাতুন ৷ অবশ্য তিনি একা নন, তাঁর মা ও দিদিও কাজের খোঁজে দেন জাঠভূমিতে ৷ সেখানে গৃহ পরিচারিকার কাজ পেয়ে যান সুমি ৷ গুরুগ্রামের রামপ্রস্থ এলাকার একটি বিলাসবহুল আবাসনের তিনটি ফ্ল্যাটে কাজ জুটে যায় তাঁর ৷ বুধবার সেই আবাসন চত্বর থেকেই উদ্ধার হয়েছে 19 বছর বয়সি সুমির দেহ ৷ এই মৃত্যুতে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন সবাই ৷ সুমির মা ও দিদির সন্দেহ, তাঁকে খুন করা হয়েছে ৷ খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেছে সেখানকার পুলিশ ৷ গতকাল মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ৷
দরিয়াপুরের মানুষজন জানিয়েছেন, সুমির বাবা লুৎফর রহমান পেশায় শ্রমিক ছিলেন ৷ বেশিরভাগ সময় ভিনরাজ্যে কাজ করতেন ৷ বছরখানেক আগে মারা যান তিনি ৷ তাঁর মৃত্যুর পর সংকটে পড়ে গোটা পরিবার ৷ তাই পেটের ভাত জোটাতে দুই মেয়ে ছবি ও সুমিকে নিয়ে হরিয়ানা পাড়ি দেন মা আনোয়ারা বেওয়া ৷ একসময় স্বামীর সঙ্গে গুরুগ্রামে কিছুদিন ছিলেন তিনি ৷ তাই মেয়েদের নিয়ে সেখানেই চলে যান ৷ সেখানে গাডুলি বস্তি এলাকায় থাকতেন তাঁরা ৷ তিনজনেই গৃহ পরিচারিকার কাজ জুটিয়ে নিয়েছিলেন ৷ সুমি কাজ পেয়েছিলেন গাডুলি বস্তি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে রামপ্রস্থ এলাকায় ৷ সেখানে একটি বিলাসবহুল আবাসনের তিনটি ফ্ল্যাটে কাজ জোটে তাঁর ৷ তিনজনের উপার্জনে তাঁরা ভালোই ছিলেন ৷
আরও পড়ুন:
প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার বিকেলেও কাজে যান সুমি ৷ কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি ঘরে ফেরেননি ৷ রাত বাড়তে থাকলেও মেয়ে না-ফেরায় চিন্তায় পড়ে যান আনোয়ারা ৷ ছবিকে নিয়ে তিনি ওই আবাসনে যান ৷ নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ তাঁদের জানানো হয়, কাজ সেরে প্রতিদিনের মতো সুমি নির্দিষ্ট সময়েই আবাসন থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন ৷ তবু আনোয়ারা নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে আবেদন জানান, যে তিনটি ফ্ল্যাটে তাঁর মেয়ে কাজ করতেন, সেই তিন পরিবারের সঙ্গে তিনি একটু কথা বলতে চান ৷ তাঁর আবেদন মেনে নেন নিরাপত্তারক্ষীরা আনোয়ারাকে ওই তিনটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান ৷ তিন পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন আনোয়ারা ৷ এর মধ্যে দুটি পরিবারের সদস্যরা ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন ৷ একটি দরজা বন্ধ থাকা ফ্ল্যাটের ভিতর থেকেই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সুমি কাজ সেরে চলে গিয়েছেন ৷ মেয়ের কোনও খোঁজ না-পেয়ে আনোয়ারার দুশ্চিন্তা আরও বাড়ে ৷ বড় মেয়েকে নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যান ৷