পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

নিরাপদ বনাঞ্চলে বাড়ছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা, আদিনায় শুরু সুমারি - Bird Census - BIRD CENSUS

Bird Census: মালদার গাজোলে রয়েছে আদিনা বনভূমি ৷ নিরাপদ এই বনাঞ্চলে বাড়ছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ৷ সেখানে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পাখিসুমারি ৷

Bird Census
নিরাপদ বনাঞ্চলে বাড়ছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা, আদিনায় শুরু সুমারি (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 28, 2024, 5:02 PM IST

মালদা, 27 সেপ্টেম্বর: মানচিত্র অনুযায়ী উত্তরবঙ্গের মধ্যে পড়লেও মালদা জেলায় প্রাকৃতিক বনভূমির পরিমাণ খুব কম ৷ সামান্য যা বনভূমি রয়েছে, সেসব মানুষের তৈরি ৷ সরকারি উদ্যোগেও কিছু ছোট বনভূমি তৈরি করা হয়েছে ৷ তার মধ্যে আদিনা বনভূমিই সবচেয়ে সমাদৃত ৷

1982 সালে গাজোলের আদিনায় প্রায় 100 হেক্টর জমির উপর সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল এই বনভূমি ৷ পরবর্তীতে একে একটি ছোট চিড়িয়াখানার রূপ দেওয়া হয়েছে ৷ মূলত, খোলামেলা পরিবেশে থাকা হরিণ ও বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখতে সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে ৷ তবে উৎসব কিংবা শীতের মরশুমে এখানে পর্যটকদের ঢল নামে ৷ বন দফতরের উদ্যোগে সেই আদিনা বনাঞ্চলে শুরু হয়েছে পাখিসুমারি ৷

নিরাপদ বনাঞ্চলে বাড়ছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা, আদিনায় শুরু সুমারি (ইটিভি ভারত)

প্রতি বছর গরমের শেষদিকে আদিনা বনাঞ্চলে ভিড় জমায় ওপেন বিল স্টর্কের দল ৷ এখানেই প্রজনন করে তারা ৷ শীতের মরশুমে বেশিরভাগ ফিরে যায় নিজেদের দেশে ৷ তবে কিছু পাখি এখানেই থেকে যায় ৷ শীতের সময় আরও কিছু প্রজাতির পরিযায়ী পাখির সন্ধান মেলে এখানে ৷

পাখিসুমারিতে চলছে গাছ চিহ্নিতকরণের কাজ (নিজস্ব চিত্র)

দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত বছর সবমিলিয়ে এখানে প্রায় 10 হাজার পরিযায়ী পাখি এসেছিল ৷ এবার পাখিসুমারির দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারভাইজার ইন্দ্রজিৎ দাস বলছেন, “আমরা প্রতি বছর আদিনায় পাখিসুমারি করে থাকি ৷ এবারও হচ্ছে ৷ এই কাজে আমরা প্রথমে একটি গাছকে চিহ্নিত করি ৷ সেটি কোন প্রজাতির গাছ, তাও চিহ্নিত করা হয় ৷ সেই গাছে নম্বর লাগানো হয় ৷ এরপর সেই গাছে কতগুলি পাখির বাসা রয়েছে, তা আমরা 3-4 দফায় গুনে দেখি ৷’’

পাখিসুমারিতে চলছে গাছ চিহ্নিতকরণের কাজ (নিজস্ব চিত্র)

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ধরে নিই, একটি বাসায় দু’টি থেকে তিনটি পাখি থাকতে পারে ৷ সেই অনুযায়ী গড় হিসাব করে থাকি ৷ প্রতি বছর সেভাবেই হিসাব চলতে থাকে ৷ সেই হিসাব রেকর্ড করে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাই ৷ এখানে মূলত সাইবেরিয়ান শামুকখোল প্রজাতির পাখি আসে ৷ শীতের সময় অন্য পরিযায়ী পাখির দলও এখানে আসে ৷ এখানে আমরা পাখিদের জন্য একটি মনোরম পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছি ৷ একাধিক জলাশয় রয়েছে ৷ নিরাপদ হওয়ায় প্রচুর পাখি এখানে আসে ৷ আমাদের অনুমান, এবার রেকর্ড সংখ্যক পরিযায়ী পাখি এখানে আসবে ৷ পর্যটকরাও এখানে এসে খুব আনন্দ পান ৷”

আদিনা বনভূমিতে পরিযায়ী পাখি৷ (নিজস্ব চিত্র)

বন দফতরের মালদা ডিভিশনের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট শুভ্র পাল বলেন, “আগের বছরের তুলনায় এবার বেশি পাখি এসেছে বলে আমরা আশা করছি ৷ এখনও আমাদের গণনা শেষ হয়নি ৷ শেষ হলে প্রকৃত তথ্য পাব ৷ এখানে বেশি আসে এশিয়ান ওপেন বিল স্টর্ক ৷ আরও কিছু প্রজাতির পাখি ভিনদেশ থেকে এখানে উড়ে আসে ৷ প্রতি বছর এখানে পাখিসুমারি হলেও আমাদের কাছে কোনও ডেটাবেস ছিল না ৷ এবার সেই ডেটাবেস তৈরি করা হচ্ছে ৷ পাখিরা কোন গাছকে বেশি পছন্দ করছে, সেটাও আমরা নজরে রাখছি ৷ পাখিদের চরিত্রের উপর নজর রাখা হচ্ছে ৷ তাদের চরিত্রের বদল হচ্ছে কি না সেটাও দেখা হচ্ছে ৷”

আদিনা বনভূমিতে পরিযায়ী পাখি৷ (নিজস্ব চিত্র)

বিষয়টি নিয়ে জেলা বনাধিকারিক জেসপার জিজু জে বলেন, “ওপেন বিল স্টর্ক প্রজাতির পাখি প্রতি বছরই আদিনায় আসে ৷ এখানে তারা বাসা বানায় ৷ প্রজনন প্রক্রিয়া শেষে বাচ্চাদের নিয়ে চলে যায় ৷ বছরে কত পাখি আসছে তার একটা হিসাব পেতে দফতরের তরফে প্রতি বছরই সেখানে পাখিসুমারি করা হয় ৷ আজ থেকে সেই সুমারি শুরু হয়েছে ৷ আগামিকাল শেষ হবে ৷ গত বছর প্রায় আট হাজার ওপেন বিল স্টর্ক এখানে এসেছিল ৷ এবার আরও বেশি পাখি এসেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে ৷ পুজো উপলক্ষে আদিনা বনাঞ্চলকে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে ৷ পুজোর আগেই সেই কাজ হয়ে যাবে বলে আশা করছি ৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details