পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বোলপুরে কেষ্ট-সাক্ষাৎ, 'দাদা'র সঙ্গে একপথে চলার বার্তা কাজলের - Anubrata Mondal - ANUBRATA MONDAL

Kajal Sheikh Meets Anubrata Mondal: জেল-মুক্তির পর অবশেষে অনুব্রত মণ্ডল-কাজল শেখ সাক্ষাৎ ৷ শনিবার সন্ধ্যার বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হল দুই নেতার মধ্যে? উত্তরে কাজল শেখ জানালেন, মিথ্যা মামলায় দু'বছর ধরে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছিল দাদাকে। তিনি অভিভাবক ছিলেন, আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।"

Kajal Sheikh Meets Anubrata Mondal
অনুব্রতর সঙ্গে একপথে চলার বার্তা কাজলের (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 28, 2024, 10:31 PM IST

বোলপুর, 28 সেপ্টেম্বর: অবশেষে অপেক্ষার অবসান। অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ দু'জনই মুখোমুখি সাক্ষাৎ করলেন বোলপুরের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। শনিবারের এই সাক্ষাৎ নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলে দাবি করেন বীরভূমের সভাধিপতি কাজল শেখ। দু'বছর পর মঙ্গলবার জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের গড়ে বোলপুরে ফিরেছেন জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার, থেকেই নিয়মিত বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ে সাধারণ মানুষ, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করছেন।

এর মাঝে কেটে গিয়েছে চার চারটি দিন। এরপর থেকেই রাজনৈতিকভাবে বিতর্ক, গুঞ্জন শুরু হয় অনুব্রত ও কাজল শেখকে কি একসঙ্গে দেখা যাবে? জল্পনা শুরু হতেই প্রায় 40 মিনিট দলীয় কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ বলেই দলীয় সূত্রে জানা যায়। বুধবার দলীয় দফতরে এসে অনুব্রত নিজেই ফোন করে কাজল শেখকে আসার আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে কর্মসূচি থাকায় সেদিন দেখা হয়নি।

অবশেষে অনুব্রত মণ্ডল কাজল শেখ সাক্ষাৎ (ইটিভি ভারত)

তা নিয়ে কাজলের অবশ্য স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, "কেষ্টদার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকঢোল পিটিয়ে যেতে হবে না। সময় সুযোগ এলেই দাদার সঙ্গে দেখা করব। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জন্য সেদিন যেতে পারিনি।"

এদিন দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে কাজল শেখ জানান, "এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। দাদা পার্টি অফিসে বসছেন। সবাই এসে দেখা করছেন। আমিও দেখা করেছি । কথা হয়েছে। এখন রাজনৈতিক আলোচনার সময় নয়। দাদা আগে সুস্থ হয়ে উঠুন। শরীর ভালো নেই। কলকাতায় যাবেন চিকিৎসা করাতে। সেসব হোক, তারপর জেলা কমিটি অথবা কোর কমিটির বৈঠকে রাজনীতি এবং সংগঠন নিয়ে আলোচনা হবে। তাঁকে মিথ্যা মামলায় দু'বছর ধরে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তিনি অভিভাবক ছিলেন, আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।"

প্রসঙ্গত, অনুব্রত-কাজলের দ্বন্দ্ব আজকের নয়। জেলায় এই দুই নেতার মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর মাঝেমধ্যেই শিরোনামে উঠে এসেছে। যদিও এবিষয়ে কাজল শেখ জানান, কোনও দ্বন্দ্ব ছিল না। এগুলি সংবাদমাধ্যমের চক্রান্ত। গরুপাচার কাণ্ডে অনুব্রতর জেল-যাত্রার পর বীরভূমে কোর কমিটি করে দেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে জায়গা পান কাজল। এরপর জেলা পরিষদের সভাধিপতিও করা হয় তাঁকে। যদিও কাজল বারবার দাবি করেছেন, অনুব্রত তাঁর অভিভাবক। দলের নির্দেশ অনুযায়ীই তিনি কাজ করবেন।

কেষ্ট জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বোলপুরে আসতেই তাঁর অনুগামীরা চাঙ্গা হয়ে ওঠেন। দীর্ঘদিন কোণঠাসা থাকার পর জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল করিম খান সহ অনুগামীরা উজ্জীবিত এবং উচ্ছ্বসিত। এদিন কাজল শেখের বৈঠকের পরেই করিম খানের অনুগামীরাও দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন অনুব্রতর সঙ্গে। অনুব্রত তিহার জেলে থাকার সময় সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ রাখতেন এই করিম খান। দিনের পর দিন তিনি দিল্লিতে থেকেছেন। আদালতে মামলার শুনানিতেও নিয়মিত হাজির থাকতেন নানুরের করিম। ঘটনাচক্রে কাজলের উত্থান ভূমি নানুরেই।

অনুব্রত মণ্ডল জেলায় ফিরে আসার পর থেকেই রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে। বাস্তবে অনুব্রত ও কাজল সকলকেই একসঙ্গে চলার বার্তা দিলেও সংঘাত পুরোপুরি শেষ হয়ে গিয়েছে তা মানছেন না দলের কর্মীদের একটা বড় অংশ। তবে হুঁশিয়ারি, দ্বন্দ্বের আবহেই অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের মুখোমুখি বৈঠকে যে নানা জল্পনার অবসান হয়েছে তা-ও বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও এদিনের বৈঠক শুধুই সৌজন্য সাক্ষাৎ। রাজনৈতিক আলোচনা কোর কমিটির বৈঠকে হবে বলেই দলীয় সূত্রে জানা যায়।

ABOUT THE AUTHOR

...view details