মালদা, 20 অগস্ট:গরুচোর সন্দেহে গ্রামবাসীদের হাতে আটক দুই বাংলাদেশি-সহ তিনজন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদা ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কৈলাশপুর গ্রামে ৷ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আটকদের ৷
আটকদের তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে (ইটিভি ভারত) গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য প্রণবানন্দ সরকার বলেন, "আজ সকাল আটটা নাগাদ তিন সন্দেহভাজন যুবক কৈলাশপুর ব্রিজের কাছে জঙ্গলে বসেছিল ৷ সেখানে তাঁদের প্রথম দেখেন গ্রামের পলাশ সরকার ৷ তিন যুবককে তাদের বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করা হয় ৷ কিন্তু তিন যুবকের কেউ তাঁর প্রশ্নের সদুত্তর দেয়নি ৷ পলাশ আমাকে বিষয়টি জানায় ৷ সঙ্গে সঙ্গে আমি সেখানে যাই ৷ কিন্তু ততক্ষণে এক যুবক সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল ৷ বাকি দু'জন নিজেদের বাংলাদেশি বলে স্বীকার করলেও কোনও প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেনি ৷ তারা শুধু জানায়, লক্ষ্মীপুরের সন্দীপনবাবুর আত্মীয় তারা ৷ পরে সন্দীপনের সঙ্গেই আমরা পলাতক যুবককে দেখতে পাই ৷ সে অবশ্য বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা ৷ গরুচোর সন্দেহেই তিন যুবককে ধরা হয়েছিল ৷ বিষয়টি মালদা থানায় জানিয়েছি ৷"
জানা গিয়েছে, দু'একদিন পরপরই সীমান্ত এই গ্রাম থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছিল গরু ৷ গ্রামবাসীরা সন্দেহ করেন, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরাই গ্রামে ঢুকে গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে ৷ কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছিলেন না তাঁরা ৷ অবশেষে মঙ্গলবার গরুচোর সন্দেহে তাঁরা তিনজনকে আটক করেন ৷ ওই তিনজনের মধ্যে দু'জনের বাড়ি বাংলাদেশে ৷ একজন মালদারই বাসিন্দা ৷ গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি ৷ অগত্যা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন গ্রামের সবাই ৷
এ দিকে পুলিশ গ্রামে ঢোকার আগেই বৈষ্ণবনগরের যুবকটি এক গ্রামবাসীর ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যায় ৷ তাকে সেই ছাদেই আটক করে রাখা হয়েছিল ৷ ঘটনাস্থল থেকে দুই যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে যায় মালদা থানার পুলিশ ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালদা থানার এক আধিকারিক জানান, "আপাতত দুই যুবককে জেরা করা হচ্ছে ৷ প্রাথমিকভাবে তারা নিজেদের বাংলাদেশি বলে স্বীকার করেছে ৷ এই মুহূর্তে সেদেশের পরিস্থিতি বিপজ্জনক ৷ ফলে কী কারণে এই দুই যুবক এদেশে এসেছিল, তাদের কাছে বৈধ নথিপত্র রয়েছে কি না, তাদের অনুপ্রেবেশের উদ্দেশ্য ছিল কি না, সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত গ্রামবাসীদের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি ৷"
কৈলাশপুর গ্রামটির অবস্থান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ধারেই ৷ বেশ কিছুদিন ধরেই গ্রাম থেকে গরু উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলেন গ্রামবাসীরা ৷ এ দিন সকালে গ্রামের একটি জঙ্গলে সন্দেহভাজন তিন যুবককে বসে থাকতে দেখেন এক বাসিন্দা ৷ তাঁর কাছ থেকে খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা সেখানে যান ৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এক যুবক সেখান থেকে পালিয়ে যায় ৷
বাকি দু'জনকে গ্রামের ভিতর ধরে নিয়ে আসেন স্থানীয় মানুষজন ৷ শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ ৷ কিন্তু দুই যুবক একেক সময় একেক কথা বলতে শুরু করে ৷ যদিও তারা দাবি করে, বাংলাদেশি হলেও তারা গরুচোর নয় ৷ এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল ৷ কিন্তু সেই আত্মীয়র বাড়িতে এতজনের ঘুমোনোর জায়গা নেই ৷ তাই রাতে তারা গ্রামের মন্দিরে ঘুমিয়েছিল ৷ তারা গরুচুরির বিষয়ে কিছুই জানে না ৷ যদিও তাদের কথায় বিশ্বাস রাখতে পারেননি গ্রামের কেউ ৷ তাঁরা স্থানীয় মালদা থানায় খবর দেন ৷