কলকাতা, 11 ফেব্রুয়ারি: ভারতীয় ক্রিকেটকে বিশ্বের কাছে সম্মানের শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিল কপিল দেবের তিরাশির বিশ্বকাপ ৷ আর বিশ্বের দরবারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দাপট বেড়েছিল জগমোহন ডালমিয়ার হাত ধরেই ৷ তাঁর আমলেই খোলনলচে বদলে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের ৷ এমনটাই মনে করেন এক মুম্বইকর ৷ তিনি কপিল দেবের তিরাশির বিশ্বকাপ দলের অন্যতম সদস্য সন্দীপ পাতিল ৷ কলকাতায় এসে রবিবার প্রশাসক ডালমিয়ার ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি সেই অবদানের কথা শুনিয়ে গেলেন তিনি ৷
দক্ষিণ কলকাতার নর্দান পার্কে বালক সংঘ ক্লাবের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সন্দীপ ৷ এই ক্লাব ও মাঠের সঙ্গে জগমোহন ডালমিয়ারও যোগ রয়েছে ৷ আর তাই সন্দীপের কথাতেও এল ডালমিয়া প্রসঙ্গ ৷ তিনি বলেন, "জগমোহন ডালমিয়ার ভারতীয় ক্রিকেটে প্রচুর অবদান ৷ ওঁর সাহায্য এবং সমর্থন সবসময় পেয়েছি ৷ সত্যিই অসাধারণ মানুষ ছিলেন ডালমিয়াজি ৷" শেষের কথাটি ডালমিয়াপুত্র তথা আইপিএলয়ের গর্ভনিং কাউন্সিলের সদস্য অভিষেক ডালমিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন তিনি ৷
প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের পাশাপাশি কোচ ও প্রধান জাতীয় নির্বাচক দায়িত্ব সামলেছেন একসময় ৷ তবে, এখন খুব একটা ক্রিকেট দেখেন না বলে জানালেন সন্দীপ পাতিল ৷ ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে তিনি নির্লিপ্ত ৷ বিরাট কোহলি ঘরের মাঠে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জেনেও সন্দীপের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই ৷ তিনি বলেন, "আমি এখন আর ক্রিকেট দেখি না ৷ আমি হ্যাপিলি রিটায়ার্ড ৷"
তবে, এদিন বালক সংঘের শতবর্ষ উদযাপন তাড়িয়ে উপভোগ করলেন সন্দীপ পাতিল ৷ বছরভর অনুষ্ঠান রয়েছে শতবর্ষ উদযাপনের ৷ কিন্তু, আজকের চমক ছিল, ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা ৷ আইপিএলের ধাঁচে চার দলের ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা ৷ তা শুরুর আগে ঘুড়ি ওড়ালেন সন্দীপ ৷ জানালেন, ছোটবেলায় তিনিও ঘুড়ি ওড়াতেন ৷ এখানেও চোখে রোদ চশমা দিয়ে ঘুড়ি ওড়ালেন ৷
শতবর্ষ প্রাচীন ক্লাবে দিলীপ দোশী, দেবাং গান্ধিরা খেলে গিয়েছেন জেনে বিস্মিত হন ৷ অনুষ্ঠানে বরুণ বর্মনের সঙ্গে দেখা হওয়ায় খুশি ৷ খেলোয়াড় জীবনে সন্দীপ পাতিল সাজঘর ভাগ করেছেন বাংলার এই প্রাক্তন পেসারের সঙ্গে ৷ তাই আজকের অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছিল দুই বন্ধুর মিলন ক্ষেত্র ৷ ছিলেন সিএবির সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, আইপিএল গর্ভনিং কাউন্সিলের সদস্য অভিষেক ডালমিয়া, প্রাক্তন ক্রিকেটার বরুণ বর্মন, উদয় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, সিএবির প্রাক্তন সচিব বিশ্বরূপ দে ৷ অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক ৷ সকলেই বালক সংঘের মাঠ নিয়ে নস্টালজিক ৷
স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলছিলেন, "আমার খেলোয়াড় জীবনে সিএবি লিগে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলাম এই মাঠে। বালক সংঘের বিরুদ্ধে ৷ পরে যখন বাংলা দলে সুযোগ পেলাম তখন এই মাঠেই ইরানি ট্রফির প্রস্তুতি নিয়েছি ৷ বালক সংঘকে নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি আছে ৷" অভিষেক ডালমিয়ার মুখে এই ক্লাবের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের যোগাযোগের কথা শোনা গেল ৷ এই মাঠে তাঁর বাবা জগমোহন ডালমিয়ার ডাবল সেঞ্চুরিরও গল্প শোনালেন তিনি ৷
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও বালক সংঘের প্রশংসা করলেন ৷ বিশ্বরূপ দে-র মুখে শোনা গেল সন্দীপ পাতিলের অজানা গল্প ৷ তিনি জানালেন, "একটা সময় যখন বাংলার জঙ্গল মহলে ঢোকা যেত না। সেই সময় সিএবির প্রতিনিধি হয়ে সন্দীপ পাতিল জঙ্গলমহলে গিয়ে ক্রিকেটের একটি ক্যাম্প শুরু করেছিলেন ৷ সন্দীপ পাতিল জেলার ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছেন ৷ প্রতিভা তুলে আনার ব্যাপারে তাঁর ভাবনাচিন্তা আছে ৷" সব মিলিয়ে মাঘ মাসের দুপুরে বালক সংঘের শতবর্ষ পালন অনুষ্ঠান পরিণত হল মিলনমেলায় ৷
আরও পড়ুন:
- অজিদের বিরুদ্ধে ফাইনালে ভারতের পেসারদের দাপট, ষষ্ঠ খেতাব জিততে দরকার 254 রান
- রঞ্জিতে বেকায়দায় বাংলা, আম্পায়ারিং নিয়ে বিস্ফোরক মনোজ তিওয়ারি
- বুমরার ইচ্ছে না জেনেই 'সাদা বলের বিশেষজ্ঞ' তকমা, মন্তব্য শাস্ত্রীর