পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / politics

উত্তর মালদায় প্রার্থী হতে কংগ্রেসের অন্দরে তীব্র প্রতিযোগিতা, দৌড়ে রয়েছেন দীপা দাশমুন্সিও

Congress Candidate in Malda North: লোকসভা নির্বাচন দোরগোড়ায় ৷ এখনও কোনও রাজনৈতিক দলই বাংলার কোনও আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি ৷ এই পরিস্থিতিতে উত্তর মালদায় কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে ৷ দৌড়ে রয়েছেন দীপা দাশমুন্সিও ৷

Congress
Congress

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 1, 2024, 8:16 PM IST

মালদা জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ভূপেন্দ্রনাথ হালদারের বক্তব্য

মালদা, 1 মার্চ: লোকসভা নির্বাচনে রফা হতে পারে কংগ্রেস-তৃণমূলের ! লোকসভা নির্বাচনের আগে জেলার রাজনৈতিক মহলে ভাসছে একথা ৷ একি শুধুই জল্পনা ? নাকি যা রটে, তার কিছু বটে ৷ তবে উত্তর মালদা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে কংগ্রেস শিবিরে যেভাবে দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, তাতে সবাই বলছে, এমনটা হতেও পারে ৷ রাজনীতিতে কোনও কিছুই আশ্চর্য নয় ৷ যদিও এনিয়ে এখনই সেভাবে মুখ খুলছে না জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷

2009 সালে আসন পুনর্বিন্যাসের পর গঠিত হয় উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্র ৷ গঠনের পর থেকে ওই কেন্দ্রটি কংগ্রেসেরই দখলে ছিল ৷ তাল কাটে ঊনিশের নির্বাচনে ৷ ভোটের ঠিক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন মৌসম নুর ৷ সেবারের ভোটে ওই কেন্দ্রে মৌসমের সঙ্গে ভাই ইশা খানের লড়াই দেখেছিল গোটা দেশ ৷ ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল ইশাকে ৷ ভাই-বোনের লড়াইয়ে বাজিমাত করে পদ্ম শিবির ৷ কাটাকাটির খেলায় জিতে যান বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু ৷

এই লোকসভা আসনে ভোটারের সংখ্যা 18 লাখের সামান্য বেশি৷ ঊনিশের ভোটে সেই সংখ্যা ছিল 17 লাখের আশেপাশে ৷ সেবারের ভোটে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মোট ভোট ছিল সাত লাখ 30 হাজার 506 ৷ যেখানে বিজেপি পেয়েছিল 5 লাখ ন’হাজার 524 ভোট ৷ এই আসনে থাকা সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটিতে বিজেপি বেশি ভোট পেয়ে কেল্লাফতে করে ৷ সামনে চলে আসে জাতপাতের জটিল অংকও ৷ দেখা যাচ্ছে, উত্তর মালদা কেন্দ্রে মোট ভোটারের প্রায় 52 শতাংশ হিন্দু এবং প্রায় 46 শতাংশ মুসলিম ৷ বাকি ভোটাররা বিভিন্ন ধর্মের ৷ সেই অংকে মালদা, হবিবপুর ও গাজোল বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি বেশি মার্জিনে এগিয়ে যায় ৷ বাকি চারটি কেন্দ্রে তারা পিছিয়েই ছিল ৷

এবার অবশ্য ঊনিশের অংক মেলার সম্ভাবনা কম ৷ কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে ইশা খান চৌধুরীর নাম ঘোষণা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে জানাচ্ছে দলেরই একাংশ ৷ তাই এবার প্রার্থী হওয়ার দৌড় শুরু উত্তর মালদা কেন্দ্রে ৷ ইতিমধ্যে সামনে এসেছে হরিশ্চন্দ্রপুরের দু’বারের বিধায়ক মোস্তাক আলম, মালদা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার, মালতিপুরের প্রাক্তন বিধায়ক আলবেরুণি জুলকারনাইন, মানিকচকের প্রাক্তন বিধায়ক মোত্তাকিন আলম, রাজ্য নেতা আবদুস সাত্তার, এমনকি রায়গঞ্জ কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সির নামও ৷ দীপা নাকি এবার রায়গঞ্জের পরিবর্তে উত্তর মালদা আসনে প্রার্থী হতে চাইছেন ৷ এআইসিসিকে সেকথা জানিয়েও দিয়েছেন ৷ তবে শেষ পর্যন্ত কার কপালে শিকে ছিঁড়বে, তা এআইসিসিই জানে ৷

কিছুদিন আগে পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব ছিল জমিন-আসমান ৷ মমতা-অধীরের বাকযুদ্ধ থামার লক্ষণ ছিল না ৷ ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠনের পরেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বারবার তৃণমূলের বদলে রাজ্যে বামেদের সঙ্গে জোট করার পক্ষেই সওয়াল করে এসেছেন ৷ পরবর্তীতে বিহার-দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বাঁধন কিছুটা হলেও যেন শক্ত হয়েছে ৷ বঙ্গের ভোট নজরে রেখে তৃণমূলকে রাজি করাতে উঠেপড়ে লেগেছে এআইসিসির শীর্ষ নেতারা৷ তৃণমূলের তরফেও কিছুটা সুর নরমের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে ৷ সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসকে রাজ্য পাঁচটি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে তৃণমূল ৷ তার মধ্যে মালদার দু’টি আসনও রয়েছে ৷ সম্ভবত সেকারণেই উত্তর মালদা এখন পাখির চোখ বঙ্গ কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীদের ৷

তবে এনিয়ে এখনই সংবাদমাধ্যমকে সেভাবে কিছু বলতে রাজি হননি জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ভূপেন্দ্রনাথ হালদার ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, “জোট বা একক লড়াই, শেষ সিদ্ধান্ত নেবে এআইসিসি ৷ গত বিধানসভা নির্বাচনে মালদায় কংগ্রেসের যে ফল হয়েছিল, তা অকল্পনীয় ৷ সেই ফল নিয়ে এবার পর্যালোচনা করা ভুল হবে ৷ পুনর্বিন্যাসের পর উত্তর মালদা কেন্দ্রে পরপর দু’বার কংগ্রেসই জিতেছে ৷ ঊনিশের ভোটের আগে আমাদের সাংসদ দল পরিবর্তন করায় কংগ্রেসের পরাজয় হয়েছে ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এবার জোট হলে জয়ের ব্যবধান অনেক বাড়বে, জোট না হলেও জেলার দুই কেন্দ্রের ফল কংগ্রেসের পক্ষেই যাবে ৷ কংগ্রেসে উপযুক্ত প্রার্থীর অভাব নেই ৷ তাঁদের প্রার্থী হওয়ার দাবি থাকতেই পারে ৷ একটি কেন্দ্রে একাধিক প্রার্থিপদের দাবিদার থাকতে পারে ৷ এটাই তো ভালো ৷’’

তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এবার ভোট ভাগাভাগি হওয়ার প্রশ্ন নেই ৷ কারণ, গত নির্বাচনের আগে আমাদের সাংসদ দল পরিবর্তন করায় মানুষের মনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল ৷ এবার সেটা নেই ৷ মানুষ কী চাইছে, আমরা বেশ বুঝতে পারছি ৷ মানুষ চাইছে, এই মুহূর্তে দিল্লির সরকার পরিবর্তন হোক ৷ একমাত্র কংগ্রেসই বিজেপিকে হারাতে পারে ৷”

আরও পড়ুন:

  1. লোকসভা ভোট ঘোষণা এখনও হয়নি, তার আগেই উত্তর মালদায় ‘প্রচারে’ বিজেপি-তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা
  2. কংগ্রেস নেতাকে রায়গঞ্জে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব তৃণমূলের! মোহিত সেনগুপ্তের পোস্ট ঘিরে তোলপাড় রাজনীতি
  3. 'বাংলা এখন বর্গিদের দেশ', সন্দেশখালিকাণ্ডে শাসকদলকে কটাক্ষ অধীরের

ABOUT THE AUTHOR

...view details