কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি:নাট্যক্ষেত্রে কেন্দ্রের নির্দেশিকা নিয়ে সরব রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শুরু করে নাট্যশিল্পীরা । গতকাল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের নির্দেশে নাট্যদলগুলির কাছে নির্দেশিকা স্বরূপ সেই চিঠি পাঠিয়েছে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা ৷ সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের পাঠানো নাটক প্রচার করতে হবে । তা না হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে অনুদান । এরপরই এই নিয়ে সরব হন রাজ্যের মন্ত্রী তথা নাট্যকার ব্রাত্য বসু । কেন্দ্রীয় সরকারের এই বক্তব্য নিয়ে তিনি গর্জে ওঠার পাশাপাশি বামপন্থী নাট্যকারদেরও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি । যদিও ব্রাত্যকে পালটা জবাব দিয়েছে বিজেপি ৷
কেন্দ্রের নির্দেশিকার তীব্র সমালোচনা করে ব্রাত্য বলেন, "কেন্দ্রে বিজেপির সরকার লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গের সবক'টি থিয়েটার দলকে এ দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহিমাবাচক ও গুণকীর্তন করা একটি ছোট নাটিকা পাঠিয়ে বলেছে, এর অভিনয় সর্বত্র করতে হবে । অভিনয়টি না করলে কেন্দ্রের পাঠানো মোটা অনুদান এবং ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হবে । পশ্চিমবঙ্গের থিয়েটার দলগুলি যেহেতু মূলত বামপন্থী সেকুলার, তাই আমরা আশা রাখতেই পারি, এই নির্লজ্জ প্রস্তাব তাঁরা সবাই ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবেন ! নিচে মূল নাটকটি দেওয়া হল । ঠেলার নাম বাবাজি, কাকে বলে দ্যাখ এবার ।"
একা ব্রাত্য বসু নন, এই নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব রঙ্গলোক নাট্যদলের নির্দেশক শ্যামল চক্রবর্তী । তিনি বলেন, "সরাসরি কোথাও এটা লিখিত নেই যে তাদের পাঠানো স্ক্রিপ্ট না পড়া হলে অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হবে । তবে ঠারেঠোরে যা বলা হচ্ছে তা এরই নামান্তর ।" একইসঙ্গে, বর্তমান থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কথাও তিনি বলছেন । তাঁর কথায়, "কোনও সন্দেহ নেই, কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো স্ক্রিপ্ট গুগল ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তৈরি হওয়ার কারণে অত্যন্ত নিম্ন মানের । কোন সহৃদয় নাট্যব্যক্তিত্ব এই স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করতে চাইবেন না । তবে এটাও ঠিক, প্রবল অর্থকষ্টের মধ্যে দিয়ে চলা নাট্যজগতের মানুষের কাছে আর উপায় কী । তাই অনুদানের টাকা যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তারা মহাসংকটে পড়বে । বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব এই মুহূর্তে মহাসংকটে, তারা বুঝতে পারছে না তারা কী করবে । এই জায়গা থেকে দল বাঁচবে কী করে তারা বুঝতে পারছে না ।"