কুলতলি, 7 জানুয়ারি: ফের নদীর চরে দেখা মিলল বাঘের পায়ের ছাপের ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবারের পর মঙ্গলবারও আতঙ্ক ছড়াল দক্ষিণ 24 পরগনার কুলতলির মৈপীঠ কোস্টাল থানার অন্তর্গত উত্তর বৈকুণ্ঠপুরে মাকড়ি নদীর চর এলাকায় ।
এলাকাবাসীদের দাবি, এ দিন সকালে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় নদীর চরে দেখতে পান বাঘের তাজা পায়ের ছাপ । এরপর তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় বনদফতরকে ৷ এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বনদফতরের কর্মীরা ।
এ বিষয়ে দক্ষিণ 24 পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, "সোমবার একটি বাঘ দক্ষিণ বৈকুণ্ঠপুর এলাকায় প্রবেশ করেছে ৷ সেই বাঘটি এখন নদীর চর থেকে উত্তর বৈকুণ্ঠপুর এলাকায় চলে এসেছে । বনদফতরের কর্মীরা বাঘটাকে পুনরায় জঙ্গলে ফেরানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে ।"
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে বাঘের পায়ের ছাপের দেখা মিলেছিল কুলতলি ব্লকের অন্তর্গত মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কিশোরী মোহনপুর গ্রামের শ্রীকান্তপল্লি এলাকায় । ওইদিন মৎস্যজীবীরা যখন মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁদের নজরে আসে গ্রামের দিকে থাকা নদী বাঁধ বরাবর বাঘের বেশ কয়েকটি পায়ের ছাপ । মুহূর্তের মধ্যে লোকালয়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখার খবর ছড়িয়ে পড়ে ৷ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামের মানুষ । খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানা ও বন দফতরে ৷ বনদফতরের পক্ষ থেকে গোটা এলাকা ফেন্সিং নেট নিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ৷ পাশাপাশি সারারাত আগুন জ্বালিয়ে গ্রাম পাহারা দেন এলাকাবাসী ।
এরপরে মঙ্গলবার সকাল হতেই ফের নতুন করে বাঘের পায়ের ছাপের দেখা মেলায় আতঙ্কে যবুথবু গ্রামবাসীরা ৷ গবাদি পশু থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে তীব্র আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা ৷
এ বিষয়ে এক এলাকাবাসীর স্বপন গিরি বলেন, ‘‘আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি ৷ আজ সকালে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাই আমরা ৷ বনদফতরকে খবর জানিয়েছি । স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকেও জানিয়েছি । কেউ আসেনি ৷ আমাদের গবাদি পশু রয়েছে । বারবার জঙ্গল থেকে বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে ।’’
অন্যদিকে দক্ষিণ বৈকুণ্ঠপুর এলাকার মানুষজনদের দাবি, গতকাল রাতভর বাঘের গর্জন শোনা গিয়েছে । বাঘের গর্জন শুনে বনদফতরের কর্মীরা দৌড়াদৌড়ি করছিলেন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাঘ অধরা ।
কিরণ মাইতি ও টিঙ্কু হাজরার কথায়, "বাঘের ভয়ে আমরা রাতে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না ৷ বাড়িতে গবাদি পশু রয়েছে ৷ ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে ৷ ওদের কী করে সামলে রাখব ৷ ওরা খেলাধুলা করতে বাইরে তো বেরবে ৷"