কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি: এনআরসি ও সিএএ নিয়ে বার্তা দিতে শনিবার সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান বড় ম্যাচকেই বেছে নিল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা ৷ আজ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কলকাতা ডার্বিতে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ৷ যা শুধু একটা ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং বাঙালির আবেগ ৷ বাঙাল-ঘটির আবেগ ৷ কিন্তু, বাঙালি জাতি হিসেবে এক ৷ তাই বাঙালিকে এনআরসি ও সিএএ-র মাধ্য বিভাজিত করা যাবে না ৷ সেই বার্তা দিতে কলকাতা ডার্বির মঞ্চকে বেছে নিয়েছে এই সংগঠন ৷
অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী মনে করে, খেলার মাঠে রাজনীতি কখনোই কাম্য নয় ৷ খেলার মাঠ, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগৎ রাজনীতি মুক্ত হওয়া উচিত ৷ তাহলে, কেন কলকাতা ডার্বির মঞ্চে এনআরসি ও সিএএ ? তাঁর দাবি, "ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে এই ম্যাচ ও দুই শিবিরকে ঘিরে অনেক আবেগ কাজ করে ৷ তারা হয়তো একই টিভি সেটের সামনে বসে খেলা দেখছেন, কিন্তু নিজেদের অজান্তেই দু’জন পরিচিত মানুষ দু’টি ভিন্ন রংকে সাপোর্ট করছেন ৷ এটা অবশ্যই স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা যাকে ইংরেজিতে 'হেলদি কম্পিটিশন' বলা হয় ৷ তবে, এনআরসি ও সিএএ-এর প্রেক্ষিতটা অনেকটা বড়, রাজনৈতিক ৷"
তাই আজ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে অভিনব পদ্ধতিতে মানুষকে এনআরসি ও সিএএ-র কুপ্রভাবের বার্তা দেবে তারা ৷ আজ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হিন্দু মহাসভার কর্মীরা বিপুল সংখ্যায় টিকিট কেটে আসছেন ৷ সচেতনতামূলক ব্যানার, পোস্টার ও জনসংযোগের মাধ্যমে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে বার্তা দেবেন তাঁরা ৷ শুধু ক্রীড়া প্রেমী বা সাধারণ মানুষের মধ্যেই নয়, হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে গত একমাস ধরে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান ক্লাবের সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে ৷ আলোচনা করে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্য সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংগঠনের প্রদেশ সভাপতি ৷
চন্দ্রচূড় গোস্বামী অভিযোগের সুরে বলেন, "এই দু’টি ঐতিহ্যশালী ক্লাবের মধ্যে লড়াইটা থাকুক শুধু খেলার মাঠেই ৷ কারণ আসলে ক্লাব দু’টি পরস্পরের পরিপূরক ৷ মজার ছলে হলেও পূর্ববঙ্গীয় ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে বিদ্বেষ দু’টি ক্লাব নিয়ে একটা বিভেদ সৃষ্টি করে ৷ বিষয়টি নিতান্ত হালকা মনে হলেও, ইতিপূর্বে এই আবেগকে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু অপ্রিয় ঘটনাও ঘটে গেছে ৷ দেশভাগের বলি হওয়া হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধদের যদি এনআরসির লাইনে দাঁড়াতে হয়, তাহলে সেটা রাষ্ট্রের লজ্জা।"
আরও পড়ুন:
- সিএএ কার্যকরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি, জানিয়ে দিল অমিত শাহের মন্ত্রক
- 'আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশজুড়ে লাগু হবে সিএএ', দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের
- বিজেপির মুখে সিএএ-র কথা আসলে ভোটের রাজনীতি, দাবি মমতার