হায়দরাবাদ, 12 মার্চ:সময়টা 1970-এর আশেপাশে ৷ ততদিনে বিশ্ববাজারে জাকিয়ে বসেছে ‘বার্বি ডল’ ৷ শুরু হল বার্বি’র আমোদ-পণ্য এবং শারীরিক অবয়ব নিয়ে কাঁটাছেড়া ৷ পুরুষতন্ত্রের ধ্বজাধারীরা বলতে শুরু করলেন, এমন অবাস্তব অবয়ব (দেহঅঙ্গের অনুপাত) অসম্ভব ৷ প্রশ্ন ওঠে বার্বির জামাকাপর, বাড়ি-গাড়ির আতিশায্য নিয়েও ৷ যেই প্রশ্ন কখনই ব্যাট-মোবাইল নিয়ে ওঠেনি ৷ কারণটা, অতীব স্পষ্ট ৷ নারী ক্ষমতায়নের ধ্যান-ধারণাকে গোড়াতেই নির্মূল করা ৷
গত বছর বিশ্বজুড়ে মুক্তি পেয়েছিল ‘বার্বি’ ৷ সিনেমায় ছিল গোলাপী দুনিয়া (স্বপ্নরাজ্য) থেকে বার্বির বাস্তবের মাটিতে নেমে আসা ৷ গ্রেটা গেরউইগের সিনেমার দু’টি সংলাপ ‘আইডিয়াস লিভ ফরএভার’ (বদলের পরিকল্পনা চিরস্থায়ী) এবং ‘নো ওয়ান রেস্টস আনটিল দিস ডল ব্যাক ইন বক্স’ (বার্বি কল্পনার জগতে না ফেরা পর্যন্ত কেউ ঘুমাবে না) পরিচালকের যাবতীয় ভাবনাকে বর্ণনা করতে যথেষ্ঠ ৷
আগে ভাসার অভ্যাস ছিল, এখন শুধুই পড়ে যাই...
আগে জানতাম, কিন্তু এখন নিশ্চিত নই...
আমি কি জন্য এসেছি...
আমি কি জন্য এসেছি ?
সিনেমার সঙ্গে একাত্মভাবে জড়িয়ে বিলি ইলিশের ‘হোয়াট আই ওয়াস মেড ফর’ ৷ অস্কারের মঞ্চে শ্রেষ্ঠ মৌলিক সঙ্গীতের পুরষ্কার ঝুলিতে পোরার আগে গ্র্যামি ও গোল্ডেন গ্লোবের মঞ্চেও বাজিমাত করেছে গানটি ৷ ইলিশ ও তাঁর ভাই ফিনিয়াস ও’কনেলের লেখা গানটি বিশ্বের প্রতিটি মহাদেশেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছে । এখনও পর্যন্ত 60 কোটি বার শোনা হয়েছে ।
ব্লকবাস্টার সিনেমার মূল সাউন্ডট্র্যাকের অংশ এই গান, বার্বি ও তাঁর স্রষ্টা রুথ হ্যান্ডলারের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যের সময় চিত্রায়িত । অনেকের দাবি, গানটি পিতৃতন্ত্রের উপর শ্লেষাত্মক ঈঙ্গিত করছে ৷
বার্বির আত্মপ্রকাশ
1959 সালের 9 মার্চ নিউইয়র্কে আমেরিকা আন্তর্জাতিক খেলনা মেলায় আত্মপ্রকাশ করেছিল বার্বি ৷ সেদেশেরই সংস্থা ম্যাটেলের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করে বার্বি ৷ কোনও সাধারণ পুতুল হিসেবে কখনই বিবেচিত হয়নি বার্বি ৷ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি শিশুকন্যার খেলার পাত্রী সেটি ৷ যদিও অনেকেরই অভিযোগ, সিনেমাতে মার্গট রবি অভিনীত বার্বি চরিত্রটি ‘সেক্সি সাইরেন’ ৷ নারীদের ভোগ্যপণ্যে পরিণত অভিযোগ উঠেছে ৷
বার্বি খুদেদের খেলার বস্তু হলেও সিনেমাটি আপ্রানভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত ৷ একবিংশ শতকেও যে পিতৃতন্ত্র জাঁকিয়ে বসে রয়েছে প্রত্যেকের মননে, তাই দেখিয়েছে এই সিনেমা ৷ ইলিশের একাধিক গান সোশাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হয়েছে ৷ কখনও ওজন বাড়ানো, আবার কখনও ছিপছিপে হয়ে তন্বী চেহারা পাওয়ার চেষ্টা ৷ কখনও পোশাক নির্বাচন, এমনকী চুল কাটার জন্যও কটাক্ষের মুখে পড়েছেন ইলিশ ৷ সব বাধা অতিক্রম করেই তিনি আজ অস্কার হাতে, বার্বির প্রতিনিধিত্বে।
আরও পড়ুন:
- ওপেন সোর্স ইনটেলিজেন্স, শক্তিশালী হাতিয়ার হয়েও বড় ঝুঁকির কারণ ওএসআইএনটি
- সংঘাতে সম্প্রীতি: মধ্যস্থতা আইনের গতিশীলতা ও প্রভাবের তত্ত্ব-তালাশ
- মিথ ভাঙলেন রাধা, দাবাং দিল্লি কবাডি দলের একমাত্র মহিলা কর্ণধার