কলকাতা, 28 মার্চ: উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি গত দুই বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের (FMCG পণ্যের) গ্রামীণ ব্যবহারকে প্রভাবিত করেছে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং ধীর গতিতে আয় বৃদ্ধির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের গ্রামীণ ব্যবহার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, 2025 অর্থবর্ষে এই খাতে পুনরুদ্ধার বা ব্যবহারিক বৃদ্ধি দেখা যেতে পারে৷ কারণ, এর মুখ্য শর্তগুলি ভোগ্যপণ্যের ব্যবহারিক বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
2023 অর্থবর্ষের তুলনায় 2024 অর্থবর্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের খরচ 1.8 শতাংশ কমেছে, যা মুদ্রাস্ফীতির চাপকে কিছুটা কমিয়েছে এবং ভোগ্যপণ্য কোম্পানিগুলিকে দাম কমানোর জন্য প্রভাবিত করেছে। এই ফলাফল 2025 অর্থবর্ষে এফএমসিজি পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আশা জাগিয়েছে৷ বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের (FMCG পণ্যের) বাজার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানেও এর ব্যবহারিক বৃদ্ধির ইঙ্গিত মিলেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত মতিলাল ওসওয়ালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'গত 2 বছরে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবহারকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এর ব্যবহার অনেকটাই কমেছে। আয় বৃদ্ধির ধীর গতি এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি পণ্য ক্রয়ের ইচ্ছা ও সামর্থ কমিয়ে দিয়েছে। তবুও, সামান্য মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের (FMCG) মূল্য হ্রাসের ফলে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য ধীরে ধীরে উন্নত হয়েছে। ফলে এ ক্ষেত্রে একটি স্থির উন্নতির ইঙ্গিত মিলেছে যা 2025 অর্থবর্ষ থেকে 2026 অর্থবর্ষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত মোট ব্যবহারিক বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে।'
গ্রামীণ চাহিদা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা 2023 সালের চতুর্থ প্রান্তিকে চলতে শুরু করে ৷ বিশেষ করে বিস্কুট এবং নুডলসের মতো খাবারের ক্ষেত্রে এই চাহিদায় বৃদ্ধি হয় চোখে পড়ার মতো। গ্রামীণ এলাকায় প্রচলিত মোড়কের আকার পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছে ৷ পাশাপাশি, বড় প্যাকের জন্য চাহিদাও বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি নিয়েলসেন আইকিউ রিপোর্টে ইঙ্গিত মিলেছে, 2023 সালে প্রথমবার, শহুরে এবং গ্রামীণ বাজারের মধ্যে খরচের ব্যবধান কমছে৷ গ্রামীণ এলাকাগুলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের খাতে খরচে 5.8 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শহুরে এলাকার বাজারে এফএমসিজি পণ্যে জন্য খরচের 6.8 শতাংশ বৃদ্ধির হারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। দেশের উত্তর এবং পশ্চিম অঞ্চলগুলি এই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী বাজার হিসাবে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় বাজেট 2024-'25-এর ইতিবাচক প্রভাব, গ্রামীণ অর্থনৈতিক অগ্রগতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, এই প্রবণতাকে প্রসারিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ গ্রামীণ বাজারে কোম্পানিগুলির কৌশলগত প্রয়োগ সেই সুযোগগুলিকে তৈরি করবে। অ-কৃষিজ খাতে, অপরিশোধিত তেলের দাম বছরে 2.0 শতাংশ বেড়েছে যখন এটি ত্রৈমাসিক-পর-ত্রৈমাসিক 1.8% কম ছিল। তবে, অপরিশোধিত তেলের দাম গত প্রায় 30 দিন ধরে ব্যারেল প্রতি 85 ডলারে সীমাবদ্ধ ছিল। বিশ্ববাজারে চলমান অনিশ্চয়তা এবং ওপেক-এর স্বেচ্ছায় উৎপাদন কমানোর প্রত্যাশিত সম্প্রসারণের কারণে তেলের দামে সাম্প্রতিক বৃদ্ধি ঘটেছে।
অনেক শিল্পখাতে ব্যবহৃত ভিনাইল অ্যাসিটেট মনোমারের দামে সামান্য সংশোধন করা হয়েছে। এই দাম বছরে 7 শতাংশ কমেছে। রং উৎপাদন শিল্পে ব্যবহৃত টাইটানিয়াম ডাই অক্সাইডের দাম বছরে 13.1 শতাংশ কমেছে ৷ কৃষি খাতে, ভুট্টার দাম বছরে 3.9 শতাংশ বেড়েছে এবং সরবরাহের ঘাটতি এবং ইথানল উৎপাদনের জন্য পণ্য সংগ্রহের সরকারি পরিকল্পনার মধ্যে চাহিদা বৃদ্ধির ফলে এই দাম আরও বাড়তে পারে। অকাল বৃষ্টিপাত, শ্রমিকের ঘাটতি এবং হঠাৎ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে, কফির দাম বছরে 15.3 শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।