হায়দরাবাদ, 11 অক্টোবর: নোবেল শান্তি পুরস্কার পেল জাপানের সংগঠন নিহন হিন্ডেনকো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণু হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে এই সংগঠন কাজ করে।
নিজেদের কাজের মাধ্যমে গোটা দুনিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতাও তুলে ধরে। জাপানের এই সংগঠনকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নোবেল কমিটি । নরওয়ের নোবেল কমিটির তরফে শুক্রবার এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে ।
হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে এই সংগঠন যে কাজ করে তাকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় হিবুস্কা । এদের কাজ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মঞ্চে উপস্থিত হয়ে পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা তুলে ধরা । যে সমস্ত পরিবার এই দুই হামলায় স্বজন হারিয়েছে তাদের আর্থ-সামজিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সংগঠনের সদস্যরা বোঝাতে চান ঠিক কেন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা ঠিক নয় ।
1945 সালের ওই দুই হামলার পর থেকে পূথিবীর নানা প্রান্তে পারমাণবিক অস্ত্রের বিরোধিতা করা হয়েছে । এই সমস্ত সংগঠনকে নিয়ে একযোগে কাজ করে চলে নিহন হিন্ডেনকো । সংগঠনের সদস্যরা মনে করেন, দুনিয়ার সমস্ত দেশ যদি নৈতিকভাবে মনে করে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত একমাত্র তাহলেই সাফল্য আসবে । আর এই চেতনার উন্মেষ ঘটানোই এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লক্ষ্য ।
গত প্রায় 80 বছরে দুনিয়া কোনও প্রান্তের কোনও যুদ্ধেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু এই ধরনের মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহারের ভয় সবসময় থেকে যায়। আর নিহন হিন্ডেনকোর তরফে আলোচনা সভা থেকে শুরু করে কর্মশালার মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্রের বিভিন্ন বিপদ তুলে ধরা হয়। এই কাজে সবচেয়ে বেশি যা ব্যবহার করা হয় তা হল কোনও ক্ষতিগ্রস্তদের নিজেদের কথা । একটা হামলা তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের জীবন কীভাবে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে সে কথা সকলকে জানানো হয়।
গত সোমবার থেকে এ বছরের নোবেল প্রাপকদের নাম ঘোষণা শুরু হয়। প্রথমেই চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল প্রাপকের নাম জানা যায় । এই বিভাগে নোবেল পান আমেরিকার দুই গবেষক-অধ্যাপক । জিন সংক্রান্ত গবেষণা করে নোবেল পেয়েছেন আমেরিকার দুই অধ্যাপক-গবেষক ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রুভকুন । তাঁরা মাইক্রো আরএনএ আবিস্কার করেছেন । এরপর দিন পদার্থবিদ্যায় নোবেল প্রাপাকের নাম ঘোষণা করে কমিটি । মার্কিন বিজ্ঞানী জন হপফিল্ড এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জিওফ্রে হিনটন পদার্থবিদ্যায় নোবেল পান ৷ বুধবার প্রোটিনের গঠন ও নকশা নিয়ে গবেষণায় রসায়নে নোবেল পান তিন বিজ্ঞানী ব্রিটেনের ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন জাম্পার এবং আমেরিকার ডেভিড বেকার। আর এদিন সাহিত্যে নেবেল প্রাপাকের নাম ঘোষণা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় লেখিকা হানা ক্যাং-কে বেছে নেয় নোবেল কমিটি।