কলকাতা, 30 জুলাই: মিলল না সমাধান সূত্র ৷ মঙ্গলবারও বিভিন্ন স্টুডিয়োতে কর্মবিরতিতে পরিচালকরা ৷ "আইনের মানচিত্র তৈরি হোক। না হলে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে না।" সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই দাবি ডিরেক্টর্স গিল্ডের সদস্যদের।সোমবার দিন-ভর গিল্ড-ফেডারেশন দ্বন্দ্বে উঠল স্লোগান ৷ উঠল 'আমরা-ওঁরা' বিতর্ক ৷ তার মাঝেই মধ্যস্থতার জন্য তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের আবেদন ৷ আইন বোঝেন-জানেন এমন এক নিরপেক্ষ এক বা একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতির আবেদন জানান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় থেকে অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য ৷
পরিচালকদের সাংবাদিক বৈঠক (ইটিভি ভারত) বিকেল চারটের সময় ফেডারেশনের ডাকা টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে বৈঠকে সমস্যার সমাধান মেলে না ৷ ওঠে 'ফেডারেশন জিন্দাবাদ' স্লোগানও ৷ সেখানে বলা হয়, পরিচালকেরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাজ বন্ধ রাখছেন। টেকনিশিয়ানদের পেটে লাথি মারছেন। এদিন রাহুল মুখোপাধ্যায়কে পরিচালক হিসেবে না মানার স্লোগান দেন টেকনিশিয়ানরা ৷ এই জাতীয় কথারও তীব্র নিন্দা করেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ৷
পরিচালক অরিন্দম শীল বলেন, "আমরা স্লোগানে পাঁচজনের কণ্ঠ শুনেছি। সবার শুনিনি। কেন না আমরা ওদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি। ওরা আমাদের বিপক্ষে যেতে পারে না। আমরাও ওদের বিপক্ষে নই।" এদিন বৈঠকে মূল বক্তব্য হিসাবে উঠে আসে
- ফেডারেশনের তরফে অদ্ভুতভাবে কথা ঘোরানো হচ্ছে।
- কোনও খারাপ কথা প্রশয় দেওয়া হবে না ৷ পেটে লাথি মারা হচ্ছে কথাটা ঠিক নয় ৷ টেকনিশিয়ানদের পেটে লাথি মারা মানে আমাদের পেটে লাথিও মারা ৷ কারণ আমরা সকলেই এক ৷
- এতদিন ধরে যে নিয়ম চলে এসেছে তা আইনসম্মক কি না, তা দেখার সময় এসেছে ৷ কেউ আনন্দে কর্মবিরতি নিচ্ছেন না। একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে বলেই নিচ্ছেন। এর স্থায়ী সমাধান চাই।
- আলোচনার দরজা দু'পক্ষকেই খুলে রাখতে হবে ৷ তবে একজন তৃতীয় ব্যক্তির মধ্যস্থতা চাই। যিনি আইন এবং সিনেমাটা বোঝেন। তাঁকে নিরপেক্ষ হতে হব। আমরা যদি ভুল হই তা হলে মাথা পেতে মেনে নেব। রাহুল উপলক্ষমাত্র। এহেন হাজারও সমস্যা অনেকদিনের ৷ একতরফাভাবে নিয়ম তৈরি করছে ফেডারেশন। তারা সেটা করতে পারে না।
- রেগুলেটরি বডি নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। আমরা প্রত্যেকে কোণঠাসা। তাই ঝুঁকি নিয়ে কর্মবিরতিতে গিয়েছি। সিনেমা, সিরিয়াল মিলিয়ে 400-মতো পরিচালক আমাদের পাশে রয়েছেন ৷
- ফেডারেশনের সঙ্গে এটা আমাদের সংঘাত নয়। সম্মান অসম্মানের প্রশ্ন। অস্তিত্বের লড়াই।
- পরিচালকরা প্রথমে শুটিং বন্ধের ডাক দেননি। বারণ করেননি। শনিবার স্টুডিয়োতে রাহুলেক শুটিং ডেট ছিল ৷ সেদিন টেকনিশিয়ানরা আসেননি ৷ তাঁরা কর্মবিরতি করেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন কাজ বন্ধ রাখা যাবে না ৷ কিন্তু তাঁরাই প্রথম কাজ বন্ধ রাখে ৷ বিষয়টা নিয়ে ভাবনা চিন্তার জন্য দুদিনের সময় দেওয়া হয়েছিল ৷ তারপর পরিচালকরা এই সিদ্ধান্তে আসেন ৷ টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে বিভেদ নয়, একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে চাওয়াটাই সকলের কাম্য।
পাশাপাশি, পরিচালক-অভিনেতাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিনে ভিডিয়ো অ্যান্ড স্টেজ সাপ্লিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ৷ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈকত দাস এক বিবৃতি প্রকাশ করেন ৷ সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "আমরা ভেন্ডাররা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ফেডারেশনের কতিপয় সদস্যদের দ্বারা হুমকি প্রাপ্ত হই যে তাঁদের কথামতো মাল সরবরাহ না করলে, তাঁকে নিষিদ্ধ করা হবে ৷ মাননীয় মন্ত্রী শ্রী অরূপ বিশ্বাসের নিষেধ সত্ত্বেও দিনের পর দিন ধরে এসব চলে আসছে ৷ আমরা নীতিগতভাবে পরিচালক ও প্রযোজকদের আন্দোলনের সঙ্গে আছি ৷"
ভেন্ডারদের বিবৃতি (ইটিভি ভারত)